আগামী ২৬ তারিখ (২০২৫) - অর্থাৎ - বুধবারই বাংলাদেশে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে নতুন দল। সেই দলের যাঁরা নেতৃত্ব দেবেন, তাঁদের অন্যতম যে বর্তমান কেয়ারটেকার সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, সেকথা তো আগেই জানা গিয়েছিল। যার জেরে প্রশ্ন উঠেছিল, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারের পদ থেকে কবে ইস্তফা দিচ্ছেন তিনি?
এই বিষয়ে বাংলাদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে - তাতে মূলত দু'টি সম্ভাবনার কথা হয়েছে। প্রথমত - নাহিদ যে ২৬ ফেব্রুয়ারির আগেই তাঁর উপদেষ্টা পদ থেকে ইস্তফা দেবেন, সেটা একেবারেই নিশ্চিত।
কয়েকটি সংবাদমাধ্যম আবার তাদের সূত্র উদ্ধৃত করে দাবি করছে, নতুন দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের আগের দিন - অর্থাৎ - আগামী মঙ্গলবারই (২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদ থেকে ইস্তফা দেবেন নাহিদ।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমগুলিতে সূত্র মারফত আরও দাবি করা হয়েছে, আগামী বুধবার নতুন দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে জাতীয় সংসদ সংলগ্ন মানিক মিঞা অ্যাভিনিউয়ে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
প্রসঙ্গত, এই নতুন দল নির্মাণ ও আত্মপ্রকাশের নেপথ্যে সবথেকে বড় ভূমিকা রয়েছে - জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেতৃত্বের। এর মধ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যেহেতু আগামী মার্চ মাস থেকেই রোজা শুরু হয়ে যাবে, সেই কারণেই ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই নতুন দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের বিষয়টি সেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সূত্রের দাবি, একেবারে শুরু থেকেই বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে মরিয়া নতুন দল। সম্ভবত, যার আহ্বায়ক পদে থাকতে চলেছেন নাহিদ ইসলাম। সেই কারণেই স্থির করা হয়েছে, দলের আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠানেই অন্তত ১ লক্ষ মানুষের জমায়েত করতে হবে। সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে ইতিমধ্যেই পুরোদমে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে বাংলাদেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে।
ইতিমধ্য়েই নতুন দলের অধীনে একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল - অনুষ্ঠান প্রস্তুতি কমিটি। শোনা যাচ্ছে, আগামী বুধবার দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে, তা মূলত এই কমিটির দেখভালেই হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য কমিটিও তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছে। ফলত, কমিটিগুলিকে বারবার বৈঠকেও বসতে হচ্ছে। যার মধ্যে সর্বশেষ বৈঠকটি শুক্রবার হয়েছিল বলে দাবি করা হচ্ছে।
তবে, এত কিছুর পরও এখনও পর্যন্ত এই নতুন দলের নাম ঘোষণা করা হয়নি। এদিকে, এই নতুন দলের গঠন নিয়ে বাংলাদেশি রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করছে সংশ্লিষ্ট মহল। একদিকে, মহম্মদ ইউনুস প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছে, ছাত্ররা কোনও নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করলে, তাদের তাতে কোনও আপত্তি নেই।
অন্যদিকে, বিএনপি নেতৃত্ব সম্প্রতি অভিযোগ করে - তথাকথিত এই নতুন দল আদতে কেয়ার টেকার সরকার ও দেশের গোয়েন্দা সংস্থার মদতেই তৈরি করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, এর আগে মহম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, পিছন দরজা দিয়ে রাষ্ট্রের শীর্ষ ক্ষমতা (যা সাংবিধানিক নয় বলেই অভিযোগ) দখলের পর যাতে নির্বাচিত পদ্ধতিতে সেই পদ দীর্ঘকাল আঁকড়ে থাকা যায়, সেই ব্যবস্থাই পাকা করতে চাইছেন ইউনুস।
আর সেই কারণেই তিনি নাকি নির্বাচন করাতে সময় নিচ্ছেন। যাতে এই সময়ের মধ্যে নতুন কোনও রাজনৈতিক দল গড়ে আগামী ভোটে লড়াইয়ে নামা যায়। এই প্রেক্ষাপটে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ নিয়ে বাংলাদেশের অন্দরেই নানা জল্পনা শুরু হয়েছে।