মার্কিন শুল্ক-যুদ্ধের আবহে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে 'বন্ধু' প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে শুভেচ্ছা জানালেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুধু তাই নয়, ভারতে অবস্থিত রাশিয়ার দূতাবাস রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকেও শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছে। সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের উপর ২৫ শতাংশ প্রতিশোধমূলক শুল্ক চাপিয়েছে, সঙ্গে রুশ তেল আমদানিতে আরও ২৫ শতাংশ বাড়তি কর- ফলে মোট শুল্কের হার দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রক্তচাপ বাড়িয়ে ধীরে ধীরে কাছাকাছি আসছে তিন মহাশক্তি— ভারত, চিন ও রাশিয়া। (আরও পড়ুন: প্রথম বেসরকারি চাকরিতে ঢুকলে সরকারের থেকে ১৫০০০ টাকা, বড় প্রকল্পের ঘোষণা মোদীর)
আরও পড়ুন: 'দাম কাম, দম বেশি', মার্কিন শুল্ক যুদ্ধের আবহে বড় বার্তা 'প্রাচীর' মোদীর
সোশ্যাল মিডিয়ায় রাশিয়ার দূতাবাস জানিয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। পুতিন বলেন, 'ভারত আর্থ-সামাজিক, বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে সাফল্য অর্জন করেছে। আপনার দেশ বিশ্ব মঞ্চে যথাযথ সম্মান পাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক এজেন্ডার মূল বিষয়গুলি সমাধানে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখে। আমরা ভারতের সঙ্গে আমাদের বিশেষ, সুবিধাপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারিত্বকে অত্যন্ত মূল্যবান বলে মনে করি। আমি নিশ্চিত যে, আমাদের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে, একাধিক ক্ষেত্রে গঠনমূলক দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারিত করব। এটি আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ জনগণের স্বার্থের সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং আঞ্চলিক, বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা আরও মজবুত করতে সহায়তা করবে।' (আরও পড়ুন: দীপাবলিতে 'বড় উপহার' দেওয়ার প্রতিশ্রুতি মোদীর, লালকেল্লা থেকে করলেন কোন ঘোষণা?)
আরও পড়ুন-স্বাধীনতা দিবসে বেঙ্গালুরুতে জোরাল বিস্ফোরণ, ধসে পড়ল বাড়ির দেওয়াল-ছাদ! মৃত শিশু
গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসাবে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন ট্রাম্প। এর জন্য ফোনে একাধিক বার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। কিন্তু, তাতে কাজের কাজ হয়নি। শেষে বিরক্ত হয়ে গত ১৪ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ইউরোপীয় শক্তিজোট ‘উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা’ বা নেটোর মহাসচিব মার্ক রাটের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প।ওই বৈঠকের পরই খোলাখুলি ভাবে ভারত, চিন এবং ব্রাজিলকে রাষ্ট্রপ্রধানের নাম করে হুমকি দেন রাট। বলেন, ‘নিষেধ সত্ত্বেও রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে গেলে, মস্কোর থেকে তেল ও গ্যাস কিনতে থাকলে, কঠোর আর্থিক শাস্তির মুখে পড়তে হবে।' ট্রাম্পও হুমকি দিয়ে বলেন, ‘৫০ দিনের মধ্যে ক্রেমলিনকে শান্তি সমঝোতায় আসতে হবে। নইলে রাশিয়ার বাণিজ্যিক বন্ধুদের উপরে ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দেব আমরা।' (আরও পড়ুন: রক্ত ও জল একসাথে প্রবাহিত হবে না, সিন্ধু নিয়ে পাক কফিনে শেষ পেরেক পুঁতলেন মোদী)
আরও পড়ুন: 'পরমাণু ব্ল্যাকমেল আর সহ্য করব না', মুনিরের পাকিস্তানকে তাদের ভাষায় বার্তা মোদীর
কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই হুঁশিয়ারিতে দমে গিয়ে রুশ তেল আমদানি হ্রাস করেনি ভারত। এরপরই ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপান ট্রাম্প।এই আবহে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুখে ঝামা ঘষে পরিশোধিত রুশ খনিজ তেল চিনকে বিক্রি করা শুরু করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্বজুড়ে জুড়ে পড়ে গিয়েছে শোরগোল। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের দাবি, এর মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মুখের মতো জবাব দিয়েছে নয়া দিল্লি।এরমধ্যেই পুতিনের শুভেচ্ছা বার্তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।