জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার আঁচ শুধু ভারত নয় গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিবাদ চলছে বিদেশের মাটিতেও। ব্রিটেন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স থেকে কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, স্পেনে গর্জে উঠেছেন প্রবাসী ভারতীয়রা। (আরও পড়ুন: বন্ধুত্ব নয়, আদতে CPEC-এর জন্যেই ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পাশে চিন?)
আরও পড়ুন-পাকিস্তানে সিন্ধুর জল আটকাতে ত্রিস্তরীয় পরিকল্পনা! জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে জোর ভারতের
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় নিরীহ মানুষদের হত্যার প্রতিবাদে ৫০০ জনেরও বেশি প্রবাসী ভারতীয় লন্ডনে পাকিস্তান হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। হাতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার এবং ভারতের জাতীয় পতাকা নিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে স্লোগান তোলেন তাঁরা। এই প্রতিবাদ ছিল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবং শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।এ বিষয়ে ভারতীয়দের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে 'এই প্রতিবাদ ছিল ন্যায়বিচার ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু পাকিস্তান হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের আচরণ ছিল অত্যন্ত লজ্জাজনক। যখন বিশ্ব এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করছে, তখন দূতাবাসে উচ্চস্বরে সঙ্গীত বাজানো হয়েছে, অবমাননাকর অঙ্গভঙ্গি করা হয়েছে।' এক বিক্ষোভকারী বলেন, 'আমরা পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এখানে এসেছি। পহেলগাঁওয়ে আমাদের ২৬ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছেন। এর জবাব চাই আমরা।' আরেকজন প্রতিবাদকারী বলেন, 'যদি পাকিস্তান এই হামলার নিন্দা না করে, তাহলে পরিষ্কার বোঝা যাবে তারা সন্ত্রাসবাদকে প্রত্যক্ষ মদত দিয়ে চলেছে।' লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশনের তরফেও নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়। (আরও পড়ুন: স্তব্ধ সিন্ধু প্রদেশ, জল নিয়ে 'গৃহযুদ্ধে' ঝরল রক্ত, সংঘর্ষ পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের)
শুধু লন্ডন নয় ওয়াশিংটনেও বারোটার জাতীয় পতাকা হাতে বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন বহু প্রবাসী। জম্মু-কাশ্মীর থেকে জেরুজালেম, জেহাদিদের সন্ত্রাস গুঁড়িয়ে দেওয়া হোক, এই আর্জি নিয়ে সোচ্চার হন প্রবাসীদের অনেকে।এক প্রতিবাদী মহিলা বলেন, 'আমাদের বিশ্বাসের জন্যই ভারত ও পাকিস্তানকে আলাদা করা হয়েছিল। আমার দাদাকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছিল। তাকেও (কাশ্মীরে) খুন করা হয়েছিল কারণ সে একজন হিন্দু ছিল। ২২ এপ্রিল সেই দুঃস্বপ্ন ফিরিয়ে এনেছে। আমরা কাশ্মীরি হিন্দুরা একই ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছি এবং আমাদের সঙ্গে কয়েক দশক ধরে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ঘটনাগুলি পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রবাসীরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। এবং ষড়যন্ত্রকারী কঠোরতম শাস্তির দাবি তুলেছেন।
আরও পড়ুন: 'দ্বিজাতি তত্ত্বে' জন্মানো পাকিস্তানে ঠাঁই হয়নি দেশের নাম দেওয়া পঞ্জাবি লেখকেরই!
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসারন উপত্যকায় ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। প্রথমে জানতে চাওয়া হয় তাঁদের ধর্মীয় পরিচয়। তারপর বেছে বেছে পর্যটকদের, মূলত পুরুষদের মাথায় গুলি করে খুন করেছে জঙ্গিরা। এই ঘটনায় যুক্ত জঙ্গিদের খোঁজে কাশ্মীরজুড়ে চলছে তল্লাশি অভিযান। ড্রোন উড়িয়ে চলছে নজরদারি। রাজৌরি সেক্টরের চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। জঙ্গি হামলার পরের দিন অর্থাৎ বুধবারই সন্দেহভাজনের ছবি প্রকাশ করেছিল এনআইএ। প্রথমে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুসারে প্রকাশ করা হয় জঙ্গিদের স্কেচ। তারপর প্রকাশ করা হয় তাদের ছবি। সেদিনের ঘটনার পর প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুসারে চারজন জঙ্গি গুলি চালিয়েছিল বৈসারন উপত্যকায়। আর পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছিল আরও তিন জঙ্গি। ঘন জঙ্গলের ভিতর থেকে পুলিশ এবং সেনার পোশাকে বেরিয়ে এসেছিল জঙ্গিরা।