'রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘকে মূলধারায় প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার জন্য অসংখ্য প্রচেষ্টা করা হয়েছিল।'দিল্লির ডঃ আম্বেদকর ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে আরএসএস-এর শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ বিজয়া দশমীতে নাগপুরে সংঘের সদর দফতরে হবে বিশেষ অনুষ্ঠান। তার আগে বুধবার বিশেষভাবে ডিজাইন করা ডাকটিকিট এবং ১০০ টাকার স্মারক মুদ্রা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। ১০০ টাকার স্মারক মুদ্রার একপাশে জাতীয় প্রতীক, অপর পাশে সিংহের মূর্তি ও ভারত মাতার ছবি রয়েছে। এতে খোদাই রয়েছে আরএসএসের মূল মন্ত্র।
ভারতীয় সংস্কৃতিকে রক্ষা, দেশসেবায় আরএসএসের ভূমিকা ব্যাখ্যা করে এই সংগঠনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, 'ভারতের ইতিহাসে এই প্রথমবার ভারত মাতার প্রতিচ্ছবি একটি মুদ্রায় খোদাই করা হয়েছে। ১০০ টাকার স্মারক মুদ্রার একপাশে জাতীয় প্রতীক, অপর পাশে সিংহের মূর্তি-সহ ভারত মাতার ছবি রয়েছে। মুদ্রাটিতে আরএসএসের নীতিবাক্যও রয়েছে: রাষ্ট্রায় স্বাহা, ইদম রাষ্ট্রায় ইদম না মম।' একশো বছর আগে আরএসএসের প্রতিষ্ঠার দিনটি ছিল বিজয়া দশমী।সেই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আগামিকাল বিজয়া দশমী। যে উৎসব অশুভের বিরুদ্ধে শুভর, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের অসত্যের বিরুদ্ধে সত্যের ও অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর জয়ের প্রতীক। ১০০ বছর আগে এই দিন আরএসএস প্রতিষ্ঠা হওয়া কোনও কাকতালীয় ঘটনা নয়, বরং হাজার বছরের ধারাবাহিক ঐতিহ্যের পুনর্জাগরণ। আমরা সৌভাগ্যবান যে সংঘের শতবর্ষ প্রত্যক্ষ করছি।'
আরও পড়ুন-H-1B বনাম 'K ভিসা!' বিশ্বের মেধাবীদের টানতে চিনের নয়া অস্ত্র, টার্গেটে কারা?
এই সংগঠনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন রাষ্ট্রই শ্রেষ্ঠ, রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষায়ী জীবনের প্রধানতম লক্ষ্য আরএসএসের এই ভাবনা সংগঠনটিকে আজ শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মন্ত্রের জোরেই সঙ্ঘ ব্রিটিশ এর বিরুদ্ধে জোরদার লড়াই করেছে। স্বাধীনতার পর লড়াই করেছে হায়দরাবাদের নিজামের বিরুদ্ধে, অংশ নিয়েছে গোয়াকে স্বাধীন করার লড়াইয়ে। তাঁর কথায়, সংঘের কাছে দেশ সবার আগে। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে ১৯৪২-এর আন্দোলন পর্যন্ত, স্বেচ্ছাসেবকরা সকল ত্যাগ স্বীকার করেছেন। অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে লড়াই, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা কোভিড-১৯ মহামারীর সময়-প্রতিটি দুর্যোগে সংঘ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। স্বাধীনতার পর বহুবার সংঘকে চূর্ণ বিচূর্ণ করার চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু সংঘ বটবৃক্ষের মতো তার লক্ষ্যে অটল থেকেছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আরএসএস জাতি গঠনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে...স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার জেলে পর্যন্ত গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে সংগঠনের অনেক সদস্যও ছিলেন।' প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'সংঘকে মূলধারায় প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার জন্য অসংখ্য প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। গুরুজিকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল এমনকী জেলেও পাঠানো হয়েছিল। যাইহোক, যখন পূজ্য গুরুজি বেরিয়ে আসেন, তখন তিনি কেবল বলেছিলেন, কখনও কখনও জিভ দাঁতের নিচে আটকে যায়, এমনকী চূর্ণবিচূর্ণও হয়, কিন্তু আমরা দাঁত ভাঙি না। কারণ দাঁত আমাদের এবং জিভও আমাদের।'
আরও পড়ুন-নয়া নাটক নকভির! ভারতকে ট্রফি দিতে শর্ত আরোপ, BCCI-র চাপে কী বললেন পাক বোর্ডের কর্তা?
তাঁর কথায়, , 'আমাদের প্রজন্মের স্বেচ্ছাসেবকদের সৌভাগ্য যে আমরা সংঘের শতবর্ষের মতো একটি মহান অনুষ্ঠানের সাক্ষী হতে চলেছি। আজ, এই উপলক্ষে, আমি জাতির সেবায় নিবেদিত কোটি কোটি স্বেচ্ছাসেবকদের আমার শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাই। আমি সংঘের প্রতিষ্ঠাতা, আমাদের সকলের আদর্শ, পরম শ্রদ্ধেয় ডঃ হেডগেওয়ারজির চরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করি।'প্রধানমন্ত্রী সঙ্ঘের দীর্ঘ যাত্রায় সাফল্যের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন আরএসএস এমন একটি সংগঠন যেখানে বহু স্রোতধারা এসে মিশেছে। কিন্তু সেখানে কখনো বিরোধ হয়নি। তার একমাত্র কারণ এই সংগঠনের সকলের একমাত্র লক্ষ্য হল রাষ্ট্র কল্যাণ। এই ভাবনাই আরএসএসকে শক্তিশালী করেছে।