'শীঘ্রই জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার উপযুক্ত জবাব দেবে ভারত। এমনি পর্দার আড়ালে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদেরও রেয়াত করা হবে না।' এমনই হুঙ্কার দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার এখনও পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ৩ বাসিন্দাও রয়েছেন। এই আবহে জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান, সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, বায়ুসেনার প্রধান এয়ার মার্শাল এপি সিং এবং নৌসেনা প্রধান দীনেশ ত্রিপাঠী।
বুধবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পরই এক বিবৃতিতে রাজনাথ সিং বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি। ভারতের প্রতিটি নাগরিক এই কাপুরুষোচিত কাজের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই যে ভারত সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করবে। আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা শীঘ্রই এর জোরালো এবং স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া দেখতে পাবে।’
সেইসঙ্গে রাজনাথ বলেন, 'আমরা শুধু তাদের কাছেই পৌঁছাব না যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের কাছেও পৌঁছে যাব যারা পর্দার আড়ালে বসে ভারতের মাটিতে এই নৃশংসা ঘটনা ঘটানোর ষড়যন্ত্র রচনা করেছে।' প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আরও বলেন, 'গতকাল পহেলগাঁওয়ে ধর্মকে লক্ষ্য করে জঙ্গিদের এক কাপুরুষোচিত হামলায় দেশ অনেক নিরীহ নাগরিককে হারিয়েছে। এই জঘন্য ঘটনা আমাদের সকলকে গভীর শোক ও বেদনায় নিমজ্জিত করেছে। প্রথমত, আমি তাদের গভীর সমবেদনা জানাই, যাঁরা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। এই দুঃসময়ে আমি ঈশ্বরের কাছে নিহতদের আত্মার প্রতি শান্তি কামনা করছি।' মন্ত্রীর কথায়, 'ভারতের মতো প্রাচীন সভ্যতার দেশকে এই ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ভয় দেখানো যাবে না। এই ধরণের কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিরা শীঘ্রই ভবিষ্যতে কড়া জবাবের মুখোমুখি হবে।'
অন্যদিকে, বুধবার সন্ধ্যেয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটির উচ্চপর্যায়ের বৈঠক রয়েছে। সাধারণত যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এই ধরনের বৈঠক হয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এছাড়া প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর রয়েছেন এই কমিটিতে। পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের নির্মমভাবে হত্যার ঘটনার পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে ওই বৈঠকে চূড়ান্ত আলোচনা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
তার আগেই প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে জরুরি বৈঠক করেছেন রাজনাথ সিং।সূত্রের খবর, বৈঠকে সর্বোচ্চ সামরিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখার জন্য বলা হয়েছে। পাশাপাশি জঙ্গিনিধন অভিযানকে আরও জোরদার করার জন্যও বলা হয়েছে। ভারত সরকারের পর পর এমন পদক্ষেপে শত্রু পক্ষকে দ্রুত জোরদার জবাব দেওয়ার আভাস পাচ্ছেন কূটনীতিবিদরা।