বাংলাদেশে পরিবারতন্ত্রের কবরস্থ নিশ্চিত করতে চাই জাতীয় নাগরিক পার্টি। নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টি বা এনসিপি)-র পথ চলা শুরু হল। ঢাকার মানিক মিয়াঁ অ্যাভিনিউয়ের মঞ্চে প্রথমে কোরান পাঠ করেন দলের সদস্যেরা। তারপর গীতা, বাইবেল, ত্রিপিটকের মতো ধর্মগ্রন্থগুলিও পাঠ করা হয়। দলের আত্মপ্রকাশ হয় জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই, বাংলাদেশ থেকে পরিবারতন্ত্র কবরস্থ হয়েছে। এ দেশে কামারের ছেলে প্রধানমন্ত্রী হবে, এ দেশে কুমারের ছেলে প্রধানমন্ত্রী হবে। এ দেশে যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতৃত্ব উঠে আসবে।’ সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করার প্রত্যয় জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এ দেশে আমাদের মধ্যে ভেদাভেদ থাকবে না। রাজনৈতিক পরমত সহিষ্ণুতা থাকবে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে, দ্বিমত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে।’ 'আমরা ফাংশনাল ব্যুরোক্রেসি করতে পারিনি। স্বাধীন পুলিশ, স্বাধীন বিচার বিভাগ করতে পারিনি।’ কোন প্রতিষ্ঠানকে যথাযথভাবে কার্যকর করা হয়নি উল্লেখ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই নেতা বলেন, তাঁরা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাযথভাবে কার্যকর করতে চান।
বিদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকবে উল্লেখ করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘কিন্তু প্রেসক্রিপশন চলবে না। এই গণভবনে কে যাবে, সেটি নির্ধারিত হবে এই বাংলাদেশ থেকে, ভারত থেকে সেটি নির্ধারিত হবে না। সংসদে কে যাবে, সেটি নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষ।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির শীর্ষ পদের সংখ্যা এবং কারা সেই সব পদে থাকবেন, তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে জলঘোলা চলছে। শেষ মুহূর্তে আরও তিনটি পদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন দলে মোট শীর্ষ পদের সংখ্যা থাকছে ১০টি। এই ১০ জনের নামও প্রকাশ্যে এসেছে। নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ঢাকার রাস্তায় বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন। রয়েছে পুলিশি প্রহরা। বাংলাদেশের অন্য দলগুলি জাতীয় নাগরিক পার্টিকে স্বাগত জানিয়েছে।নতুন দলে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব পদে দু’জন করে থাকছেন। এছাড়াও থাকছে যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক নামের একটি পদ। জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এই পদে যোগ দেওয়ার জন্য তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। এছাড়া, দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন এবং আরিফুল ইসলাম আদীব। নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারীকে দলের মুখ্য সমন্বয়কারী করা হয়েছে। মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল)-এর দায়িত্ব পেয়েছেন হাসনাত আবদুল্লাহ। মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা এবং নাহিদা সারওয়ার। যুগ্ম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ।