বাবার ভয়ঙ্কর লালসার শিকার নাবালিকা। উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ জংশনে একটি ট্রেনের টয়লেটে পরিত্যক্ত অবস্থায় নবজাতক শিশু উদ্ধার হয়। গ্রীষ্মকালীন বিশেষ ট্রেনের জেনারেল কোচের ওয়াশরুমে একটি ব্যাগের ভেতরে শিশুটিকে খুঁজে পায় পুলিশ। এরপরেই পুলিশ শিশুটির বাবা-মাকে খুঁজতে গিয়ে ভয়ঙ্কর এক ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।
জানা গিয়েছে, ট্রেনের টয়লেটে ব্যাগের মধ্যে শিশুর সঙ্গে একটি সিম কার্ডও ছিল।এরপরেই সিম কার্ডের মাধ্যমে মালিককে খুঁজে বের করে পুলিশ। খবর অনুযায়ী, শিশুটি ট্রেনে প্রসব করা এক নাবালিকার।বিহারের ছাপরায় ওই নাবালিকার বাড়ি।তদন্তে জানা গিয়েছে, নাবালিকাকে তার বাবা ধর্ষণ করে। এরপর সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। গত ২২ জুন নির্যাতিতার পরিবার তাকে চিকিৎসার জন্য দিল্লি নিয়ে যাচ্ছিল। ঠিক সেই সময় ট্রেনের ওয়াশরুমে সে সন্তান প্রসব করে।এই ঘটনার পর চুপ থাকেনি নাবালিকার পরিবার। এর কিছুক্ষণ পরই পরিবারের সদস্যরা নবজাতকটিকে একটি ব্যাগের ভেতরে রেখে তাদের গ্রামে ফিরে আসে।
এদিকে, পাটনা চণ্ডীগড় সামার স্পেশাল ট্রেনে কয়েকজন হকার টয়লেটের মধ্যে থেকে শিশুর কান্না শুনতে পান। টয়লেটে গিয়ে তাঁরা দেখেন, ব্যাগের মধ্যে এক নবজাতক রয়েছে। তখনও তার নাড়ি কাটা হয়নি। তাঁরা টিটিই-র সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নবজাতককে মোরাদাবাদে চিকিৎসার জন্য ট্রেন থেকে নামানো হয়।এরপর শুরু হয় শিশুর বাবা-মায়ের খোঁজ। তদন্তে নেমে নাবালিকার বাবার নৃশংসতার কথা জানতে পারে পুলিশ। নাবালিকা জানিয়েছে, তার বাবা মদ্যপান করেন। এবং মদ্যপ অবস্থায় গত এক বছরের বেশি তার উপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছে। তার ফলেই সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। তাই তাকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।এরপরে ওই নাবালিকা, তার মা ও দিদিকে পুলিশ মোরাদাবাদ নিয়ে আসে। ধর্ষণের কথা অভিযুক্ত স্বীকার করেছে। নির্যাতিতাকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। বর্তমানে অভিযুক্তকে জেরা করা হয়েছে।কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চলছে।
মোরাদাবাদ জংশন স্টেশনের জিআরপি প্রধান রবীন্দ্র বশিষ্ঠ বলেন, '২২ জুন বিশেষ ট্রেনে একটি ব্যাগের মধ্যে এক শিশুকে পাওয়া গিয়েছে। শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ব্যাগ থেকে বিহারের একটি সিম কার্ডও উদ্ধার করা হয়। সিম কার্ডের মালিকের খোঁজ করে জানা যায় যে, শিশুটি তার এক নাবালিকা আত্মীয়ের, যে ধর্ষণের শিকার হয়ে গর্ভবতী হয়েছিল।' অন্যদিকে, মোরাদাবাদে এসে নাবালিকা লিখিতভাবে জানায়, শিশুটিকে প্রতিপালন করার ক্ষমতা তার নেই। তার শিশুটিকে আপাতত চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে রাখা হয়েছে। চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি জানিয়েছে, শিশুটি আপাতত ২ মাস তাদের কাছে থাকবে। তারমধ্যে ওই নাবালিকা শিশুটির দাবি জানাতে পারবে। তার ধ্যে কোনও দাবি না জানালে শিশুটিকে অন্য কেউ দত্তক নিতে পারবেন।