নিঠারি হত্যা মামলায় বেকসুর খালাস হওয়ার পর এবার জেল থেকে মুক্তি পেলেন মণীন্দ্র সিংহ পান্ধের। শুক্রবার গ্রেটার নয়ডার লুকসার জেল থেকে তিনি মুক্তি পান। চারদিন আগে এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাকে বেকসুর খালাস করেছিল। জেল থেকে মুক্তি পাওয়াই স্বাভাবিকভাবে খুশি পান্ধের এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এদিন জেলের বাইরে তাঁকে স্বাগত জানান তার আইনজীবী এবং পরিবারের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: নিঠারি হত্যা মামলায় খালাস প্রধান অভিযুক্ত, মৃত্যুদণ্ড রদ
৬৫ বছর বয়সি মণীন্দ্র সিংহ পান্ধের এদিন দুপুর ১ টা ৪০ মিনিট নাগাদ উচ্চ-নিরাপত্তা বিশিষ্ট জেল থেকে বেরিয়ে আসেন। তার পরনে ছিল কুর্তা-পাজামা এবং খাকিরঙা জ্যাকেট। পায়ে ছিল স্পোর্টস জুতো। মুখে মাস্ক পরেছিলেন মণীন্দ্র সিংহ পান্ধের। এদিন জেল থেকে বেরিয়ে আসার পরেই তিনি একটি গাড়িতে ওঠেন। কারও সঙ্গে কথা না বলেই গাড়িতে করে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। উল্লেখ্য, উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে এলাহাবাদ হাইকোর্ট সোমবার তাঁকে এবং তার সঙ্গী সুরেন্দ্র কোলিকে বেকসুর খালাস করেছিল। দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। নিঠারি হত্যাকাণ্ডে নিম্ন আদালত তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল।
জেল সুপার অরুণ প্রতাপ সিং জানান, আদালতের নির্দেশ হাতে পাওয়ার পরেই তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, মণীন্দ্র সিং পান্ধেরকে জেলের যক্ষ্মা ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। সেখানে এই রোগের জন্য তাঁর চিকিৎসা চলছিল। এর আগে তিনি দাসনা জেলে ছিলেন। চলতি বছরের জুনে তাঁকে লুকসার জেলে আনা হয়েছিল।
২০০৬ সালের ডিসেম্বরে মণীন্দ্র সিংহ পান্ধের বাড়ির পিছনে একটি ড্রেন থেকে আটটি শিশু, কিশোর-কিশোরীর কঙ্কাল উদ্ধারের পর নিঠারি হত্যাকাণ্ড প্রকাশ্যে আসে। যাদের কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছিল তাদের বেশিরভাগই ছিল দরিদ্র শিশু এবং কিশোর-কিশোরী। তারা আচমকা এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। সেই মামলায় তদন্তে নেমে পুলিশ কঙ্কাল উদ্ধার করে। তার মধ্যে একজন বাঙালি তরুণীও ছিল।
অভিযোগ উঠেছিল, তাদের ওপর যৌন নির্যাতন চালানোর পর নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল। শুধু খুনই নয়, মেরে ফেলার পর তাদের দেহের অংশবিশেষ প্রেশার কুকারে সেদ্ধ করে খাওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল।এই ঘটনায় তদন্তভার নিয়েছিল সিবিআই। তদন্তে তারা আরও বেশ কিছু হাড়গোড় উদ্ধার করে। এই সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে ২০০৭ সালে তাদের বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে ১৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু তিনটি মামলার ক্ষেত্রে যথাযথ প্রমাণ খুঁজে পায়নি সিবিআই। সেগুলি খারিজ হয়ে যায়। বাকি থাকা ১৬ টি মামলার মধ্যে তিনটিতে আগেই খালাস পেয়েছিলেন কোলি। সাতটি মামলায় তার ফাঁসির সাজা হয়। পান্ধেরকে একটি মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।