মহারাষ্ট্রের বদলাপুরে স্কুলের দুই ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনে মূল অভিযুক্তের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এবার এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করল বম্বে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, মূল অভিযুক্তের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আদালত। কীভাবে অভিযুক্ত একজন পুলিশ অফিসারের কাছ থেকে পিস্তল ছিনিয়ে নিলেন? প্রশিক্ষণ ছাড়াই কীভাবে তিনি পুলিশের বন্দুক থেকে গুলি চালালেন? আর কেনই বা তাকে মাথায় গুলি করা হল? এই নিয়ে হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য পুলিশ।
আরও পড়ুন: বদলাপুরে স্কুল ছাত্রীদের যৌন নির্যাতন, পুলিশের এনকাউন্টারে মৃৃত্যু অভিযুক্তের
বম্বে হাইকোর্ট বুধবারের শুনানিতে বদলাপুরে অভিযুক্তের মৃত্যুর বিষয়ে আরও একাধিক প্রশ্ন তুলেছে। আদালতের মতে, এই ঘটনার তদন্ত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে করা উচিত। কিন্তু, তা হচ্ছে না। আর এরজন্য প্রয়োজনে কড়া নির্দেশ দেওয়া হতে পারে বলেও রাজ্য পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে হাইকোর্ট। এদিন বিচারপতি রেবতী মোহিতে ডেরে এবং পৃথ্বীরাজ চৌহানের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। ডিভিশন বেঞ্চ এই ঘটনার সঠিকভাবে তদন্ত করতে বলেছে। উল্লেখ্য, পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন গত ২৪ সেপ্টেম্বর পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন অক্ষয় শিন্ডে। তারপরেই বিরোধীরা অভিযোগ তোলেন, এটি ভুয়ো এনকাউন্টার। সেই ঘটনায় নিহতের বাবা হাইকোর্টে একটি মামলা করেন। এদিন সেই মামলার শুনানি ছিল।
অজয় শিন্ডেকে মাথায় গুলি করার ফলে মৃত্যু হয়েছে। তবে ডিভিশন বেঞ্চের মতে, পুলিশ অক্ষয় শিন্ডের মাথায় গুলির পরিবর্তে হাঁটুর নিচে গুলি করতে পারত। আদালত আরও উল্লেখ করেছে, যে এটি বিশ্বাস করা খুব কঠিন যে তিনি একজন পুলিশ অফিসারের কাছ থেকে একটি পিস্তল ছিনিয়ে নিলেন। আর গুলি চালাতে সক্ষম হলেন। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, পিস্তল লক করা থাক। একজন অপ্রশিক্ষিত ব্যক্তির পক্ষে সেই লক খুলে গুলি করা খুব সহজ ব্যাপার নয়।
এর পাশাপাশি কেন এখনও তদন্তের নথি সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়নি? তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে আদালত। হাইকোর্ট জানিয়েছে, প্রমাণ সংরক্ষণ খুবই জরুরি। একইসঙ্গে অভিযুক্তের হাতে বা পায়ে প্রথমে গুলি না করে কেন মাথায় গুলি করা হল? তাও জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট।আগামী ৩ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানি। হাইকোর্ট মামলার সমস্ত নথি অবিলম্বে মহারাষ্ট্র ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করার নির্দেশ দিয়েছে।
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রের বদলাপুরে দুই নার্সারি স্কুলের ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মূল অভিযুক্ত অক্ষয় শিন্ডে। সোমবার সন্ধ্যায় তালোজা জেল থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় একজন পুলিশ কর্মীর বন্দুক কেড়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালান বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ তাকে গুলি করে হত্যা করে। তারপরেই মামলা ওঠে হাইকোর্টে।