ওড়িশার ভদ্রক পৌরসভার অন্তর্গত চারপা এলাকার বৌয়ালপোখরির সরোজিনী সংস্কৃত উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার উচ্চ বিদ্যালয় সার্টিফিকেট (দশম শ্রেণির পরীক্ষা বা এইচএসসি) পরীক্ষায় পাশ করলেন নয়জন ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থী। এই ফলাফল প্রকাশিত হতেই অত্যন্ত আনন্দিত তাঁরা। বিভিন্ন সামাজিক প্রতিকূলতা পার করে তাঁরা জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় পাশ করেছেন তাঁরা। সকল কলঙ্ক, কুনজর উপেক্ষা করে আজ তাঁরা মাধ্যমিকে সফল। এই সফল পরীক্ষার্থীরা হলেন - রিয়া সাহু, জিতু সোয়াইন, যদুনাথ হাঁসদা, সঞ্জনা সামল, সস্মিতা বিন্ধনি, আশির্বাদ সাহু, রাজকিশোর দাস, সিমা টাঙ্গুর এবং সন্ধ্যা চম্পিয়া। (আরও পড়ুন: চেয়েছিলেন ১০ কোটি, ঘুষ নিতে গিয়ে ধরা পড়লেন হাতেনাতে, গ্রেফতার বিধায়ক)
আরও পড়ুন: পহেলগাঁওতে স্বামী হারানো হিমাংশীর JNU-যোগ নিয়ে কটাক্ষ সোশ্যাল মিডিয়ায়, NCW বলল…
সরোজিনী সংস্কৃত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলয়রঞ্জন পান্ডা বলেন, এই ৯ পরীক্ষার্থীর সাফল্য তাঁদের 'ব্যক্তিগত বিজয়ের মুহূর্ত' হিসেবে চিহ্নিত হবে। তিনি বলেন, 'একসময় এই পরীক্ষার্থীদের অনেককেই তাঁদের নিজেদের পরিবারই দূরে ঠেলে দিয়েছিল। কিন্তু ফলাফল ঘোষণার পর তাঁদের পরিবার এবং প্রিয়জনরা ফোন করছে, আশীর্বাদ করছে এবং এই শিক্ষার্থীদের আরও উৎসাহ দিচ্ছে। যারা একসময় তাঁদের ছেড়ে চলে গিয়েছিল, তাঁরই এখন যোগাযোগ করছেন।' (আরও পড়ুন: মধ্যরাতে ভারত নিয়ে বৈঠক ইসলামাবাদে, ওদিকে LoC-তে পাক সেনা পেল যোগ্য জবাব)
আরও পড়ুন: ভারতের নৌমহড়ায় আতঙ্কে পাক? মনোবল বাড়াতে এগিয়ে এল 'বন্ধু', পাঠাল রণতরী
এক সংবাদপত্রকে রিয়া জানান, তিনি পাঁচবছর আগে তাঁর বাড়ি ছেড়েছিলেন। সেই স্কুলে পড়া বাকি ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থীরাও ওড়িশার বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন। স্কুলের পাশেই একটি বাড়িতে তাঁরা ভাড়া থাকেন। তাঁর কথায়, 'অপমান, সামাজিক কলঙ্ক এবং অন্যান্য প্রতিকূলতা সত্ত্বেও স্কুল থেকে আমাদের মানসিক শক্তি এবং উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। আমাদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সাহায্য করেছে স্কুল। আমি আরও পড়াশোনা করতে চাই এবং মর্যাদার সাথে বাঁচতে চাই।' অপর এক পরীক্ষার্থী আশীর্বাদ সাহু বলেন, 'মানুষ বলত আমরা আমাদের পরিচয়ের কারণে যথেষ্ট ভালো নই। কিন্তু আমরা তাদের ভুল প্রমাণ করেছি। আমি আমার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই এবং উন্নত ভবিষ্যতের জন্য একটি সরকারি চাকরি নিশ্চিত করতে চাই।' (আরও পড়ুন: পাকিস্তানের লাগবে 'শক', ভারতের হবে লাভ! সিন্ধু নিয়ে নয়া পরিকল্পনা মোদী সরকারের)
আরও পড়ুন: কথায় কথায় ভারতকে নকল পাকিস্তানের, ভয়ে কি মাথা 'ব্ল্যাঙ্ক' হয়ে গেল ইসলামাবাদের?
সরোজিনী সংস্কৃত উচ্চ বিদ্যালয়ের সচিব সুব্রত দাস বলেন, 'আমাদের স্কুলের পরীক্ষার্থীরা এবার ১০০% সাফল্য পেয়েছে। এ বছর ৯ জন ট্রান্সজেন্ডার পরীক্ষা দিয়েছে এবং তারা সবাই পাশ করেছে। সমাজে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার জন্য তাদের শিক্ষার প্রয়োজন এবং তাই তারা পড়াশোনা করেছে এবং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে...' ভদ্রক ট্রান্সজেন্ডার সুরক্ষা সমিতির সভাপতি সৌম্য দাস বলেন, 'এই শিক্ষার্থীদের অনেকেই একসময় বেঁচে থাকার জন্য রাস্তায় ভিক্ষা করত বা গান গাইতে বাধ্য হয়েছিল। তারা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, স্কুলের কাছে ঘর ভাড়া নিয়ে থেকেছে এবং মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করেছে। তাদের সাফল্য প্রমাণ করে যে সুযোগ এবং সমর্থন থাকলে যে কোনও কিছু অর্জন করা সম্ভব।'