বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পদপিষ্টের ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যুতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে দেশজুড়ে। এবার প্রকাশ্যে এসেছে মৃতদের পরিচয়। মৃতদের সকলেরই বয়স ৪০-এর মধ্যে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।নিহতদের মধ্যে তিনজন নাবালক রয়েছে। মৃতদের মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সি ১৩ বছরের দিব্যাংশী। (আরও পড়ুন: 'কৌন রাতকে অন্ধেরে…', বিলাওয়ালকে নকল ভারতীয় MP-র, সঙ্গে যোগ্য জবাব, দেখুন ভিডিয়ো)
আরও পড়ুন: RCB-কে আগেই বারণ করেছিল পুলিশ… বেঙ্গালুরুতে পদপিষ্ট হওয়ার মামলা শুনবে হাইকোর্ট
আরও পড়ুন: চুপিসারে বিয়ে করে নিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র, পাত্র কে জানেন?
দুর্ঘটনার পর মৃতদের শনাক্ত করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে ৩ জনের বয়স উনিশের কম। ৬ জনের বয়স ২০-৩০ বছরের মধ্যে। দুজনের বয়স তিরিশের বেশি। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে একজন ১৩ বছরের নাবালিকাও রয়েছে। অন্যান্য মৃতদের নাম ডোরেশা (৩২ বছর), ভূমিকা (২০ বছর), সাহানা (২৫ বছর), অক্ষতা (২৭ বছর), মনোজ (৩৩ বছর), শ্রাবণ (২০ বছর), দেবী (২৯ বছর), শিবলিঙ্গ (১৭ বছর), চিন্ময়ী (১৯ বছর), প্রজ্জ্বল (২০ বছর)।বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের পর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বুধবার কোহলিদের সেলিব্রেশনে সামিল হতে সকাল থেকেই স্টেডিয়ামের বাইরে পালে-পালে জনতা জড়ো হচ্ছিলেন। সেই ভিড়ের অধিকাংশই ছিল কমবয়সিরা।আর দুর্ঘটনায় চলে গিয়েছে সেই তাজা প্রাণগুলিই। (আরও পড়ুন: UNSC-র 'সন্ত্রাসবিরোধী কমিটির' ভাইস চেয়ারম্যান হল জঙ্গিদের মদত দেওয়া পাকিস্তান!)
আরও পড়ুন: 'কংগ্রেস করেছিল…', বেঙ্গালুরুতে পদপিষ্টের ঘটনায় কুম্ভকে টানলেন সিদ্দারামাইয়া
আরও পড়ুন-পিনকোডকে বিদায়! আসছে নতুন যুগের 'ডিজিপিন'
জানা গেছে, মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। কয়েকজন স্থানীয় জেলা থেকে এসেছিলেন বিজয় উৎসবে সামিল হতে। এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছে কর্ণাটক হাইকোর্ট। বুধবারের ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুর থানায় ১১টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। যদিও এফআইআরে কোনও অভিযুক্তের নাম নেই। তবে সরকারের দাবি, চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা মাত্র ৩৩ হাজার। কিন্তু সেখানে দু’তিন লক্ষের বেশি মানুষ প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন। তার ফলে স্টেডিয়ামের ছোট দরজা ভেঙে যায়। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার দাবি, 'এত মানুষ চলে আসবেন, আমরা ভাবতে পারিনি। স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ৩৩ হাজার। সেখানে দু’তিন লক্ষ মানুষ ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। স্টেডিয়ামের দরজাটাও ছোট। ভিড়ের ঠেলায় তা ভেঙে যায়। এই জমায়েত কেউ আশা করেননি।'
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন। এদিকে দলের বিজয়োৎসবের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেও তা বাতিল করেছে আরসিবি। ধেয়ে আসা সমালোচনার মুখে শোকজ্ঞাপন করেছে আরিসিবি।মর্মান্তিক পদপিষ্টের ঘটনায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এক বিবৃতি প্রকাশ করে শোকপ্রকাশ করেছে। শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়েছে। প্রিয়জনদের হারানো প্রতিটি পরিবারের জন্য ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে আরসিবি ও কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট সংস্থা।
আরও পড়ুন-পিনকোডকে বিদায়! আসছে নতুন যুগের 'ডিজিপিন'
অন্যদিকে, স্টেডিয়ামে ভিড় সামলাতে কেন ব্যর্থ হল পুলিশ, তা নিয়েও কর্ণাটক সরকারকে নিশানা করেছে বিজেপি। এরই মাঝে দায় এড়াতে কুম্ভমেলার প্রসঙ্গ টেনে সাফাই দিয়েছেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া।সাংবাদিক বৈঠকে সিদ্দারামাইয়া বলেন, ‘এরকম ঘটনা অনেক জায়গায় ঘটেছে। তবে সেই ঘটনাগুলি টেনে আমি এই ঘটনাকে আড়াল করতে চাইছি না। কিন্তু কুম্ভমেলাতেও তো ৫০-৬০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু আমি তো সমালোচনা করিনি। কংগ্রেস যদি সমালোচনা করে, তাহলে সেটা আলাদা বিষয়। কিন্তু আমি বা কর্ণাটক সরকার কি সমালোচনা করেছে?’ এরপরেই কুম্ভ নিয়ে সিদ্দারামাইয়ার প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী বলেন, ‘তুলনা টেনে ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না সিদ্দারামাইয়া। পদপিষ্টের ঘটনার পরও কেন উদযাপন চালিয়ে যাওয়া হল? উপমুখ্যমন্ত্রী কেন আনতে গেলেন? সাধারণ মানুষের সঙ্গে কী ঘটেছে তা নিয়ে কেউ চিন্তিত নন। সকলে সেলফি নিতেই ব্যস্ত।’