'শ্রীলঙ্কায় জয়ী
বামপন্থী রাষ্ট্রপতি।
শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও,
বামপন্থাই সমাজ সভ্যতার
স্বাভাবিক গতি।'
ছন্দ মিলিয়ে লিখেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। কার্যত মার্ক্সবাদী তত্ত্বে বিশ্বাসী শ্রীলঙ্কার নতুন রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন সুজন চক্রবর্তী। সেই সঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছেন বামপন্থাই সমাজ সভ্যতার স্বাভাবিক গতি।
সুজন চক্রবর্তীর এই বক্তব্যকে ঘিরে নানা বিতর্কের অবকাশ রয়েছে। তবে সিপিএম নেতা হিসাবে তিনি তাঁর মনের কথা লিখেছেন।
জনতা বিমুক্তি পেরামুনার (জেভিপি) বৃহত্তর জোট ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ারের (এনপিপি) নেতা অনুরা কুমারা দিসানায়েকে।
দিসানায়েক তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাজিথ প্রেমাদাসার বিরুদ্ধে প্রায় ৪২ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন, যিনি প্রদত্ত ভোটের মাত্র ২৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে মাত্র ১৬ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিলেন।
অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কায় নবজাগরণের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন অনুরা। কিন্তু শ্রীলঙ্কায় তো উঠল বামপন্থার সূর্য। ভারতে কেন ডুবছে বামপন্থীরা। ভোটের রাজনীতিতে কার্যত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বামপন্থীদের। আর বাংলায় যারা ৩৪ বছর শাসন করেছে তাদের একজন বিধায়কও নেই আর বাংলায়। কার্যত বাম শূন্য বাংলার বিধানসভা। এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তবে কি এই বিরাট দুঃসময়ে কিছুটা হলেও বাংলার সিপিএমকেও আশার আলো দেখাচ্ছেন অনুরা?
বাস্তবিকই গোটা বিশ্বজুড়েই ক্ষয়িষ্ণু বামপন্থীদের কাছে অনুপ্রেরণা হতে পারেন অনুরা। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তিনি উঠে এসেছেন শীর্ষে।
দিসানায়েক শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার দূরে অনুরাধাপুরা জেলার থাম্বুতেগামা গ্রামে একটি নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা একজন দিনমজুর এবং তার মা একজন গৃহিণী হওয়া সত্ত্বেও, তারা তাদের ছেলেকে শিক্ষিত করতে পেরেছিলেন, যিনি কেলানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান ডিগ্রি নিয়ে স্নাতক হন।
ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতিতে দিসানায়েকের সক্রিয় অংশগ্রহণ তাকে ১৯৮৭ থেকে ৮৯ সালের মধ্যে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জয়াবর্ধনে এবং আর প্রেমাদাসার ‘সাম্রাজ্যবাদী ও পুঁজিবাদী’ শাসনের বিরুদ্ধে জেভিপির সরকারবিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহে যোগ দিতে পরিচালিত করেছিল।
মার্কসবাদী নেতা ১৯৯৫ সালে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র সমিতির জাতীয় সংগঠক পদে উন্নীত হন এবং পরে জেভিপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে নিযুক্ত হন। ১৯৯৮ সালে তিনি জেভিপির পলিট ব্যুরোর সদস্য হন।
২০০০ সালে দিসানায়েকে জাতীয়তাবাদী তালিকার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংসদ সদস্য হন। যদিও জেভিপি রাষ্ট্রপতি কুমারাতুঙ্গার প্রশাসনকে সমর্থন করেছিল, তার দল পরে ২০০২ সালে তামিল বিদ্রোহী গোষ্ঠী এলটিটিইর সাথে শান্তি আলোচনার বিরোধিতা করার জন্য সিংহলি জাতীয়তাবাদীদের সাথে জোটবদ্ধ হয়েছিল, কলম্বোতে সিংহলি অধ্যুষিত সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল।