জনপ্রিয় মালয়ালম অভিনেত্রীকে আপত্তিকর মেসেজ পাঠানোর অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক বাড়তেই দলের পদ ছাড়লেন কেরলের বিধায়ক তথা কংগ্রেস যুব সভাপতি রাহুল মামকুতাথিল।তবে দলের পদ ছাড়লেও বিধায়ক পদ ছাড়ছেন না তিনি। দলীয় নেতৃত্বের চাপেই শেষ পর্যন্ত তিনি পদ ছাড়লেন বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেছে বিজেপি।
রিনি জর্জ জনপ্ৰিয় মালয়ালম অভিনেত্রী ও প্রাক্তন সাংবাদিক। কমেবেশি সকলেই তাঁকে চেনেন।বুধবার একটি সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানান, তরুণ এক রাজনীতিকের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্ব হয় তাঁর। প্রায়শই টেলিভিশন চ্যানেলে, আন্দোলনের অগ্রভাগে দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু সেই থেকে লাগাতার তাঁকে হেনস্থা করে চলেছেন ওই রাজনীতিক। অশ্লীল মেসেজ পাঠানোর পাশাপাশি, হোটেলের ঘরেও ডাকছেন। অন্য মহিলাদেরও একই অভিজ্ঞতা হয়েছে, এমনকি দলের মহিলা কর্মীদেরও হেনস্থা হতে হয়েছে বলে দাবি করেন রিনি।তিনি বলেন, 'যেসব রাজনীতিবিদ তাদের পরিবারের মহিলাদের রক্ষা করতে পারেন না, তারা অন্য কোন নারীকে রক্ষা করবেন? তাঁর অভিযোগ, দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে বারবার জানানো সত্ত্বেও ওই যুবনেতাকে নানা সুযোগ দেওয়া হয়েছে। রিনির কথায়, 'দলীয় নেতৃত্বকে আমি গোটা বিষয়টি জানিয়েছি। তখন জানতে পারি ওই যুবনেতা বেশ কয়েকজন দলীয় নেতার স্ত্রী এবং কন্যার সঙ্গেও একই আচরণ করেছেন। তা সত্ত্বেও একের পর এক সুযোগ পেয়েছিলেন যুবনেতা। সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় দেখলাম আরও বেশ কয়েকজন মহিলার একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাই সকলের হয়ে আমিই মুখ খুললাম।'
যদিও রিনি সরাসরি ওই নেতার নাম বলেননি, তবে বিজেপি কর্মীরা পালাক্কাড়ের বিধায়ক রাহুল মামকুতাথিল-র কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। তাদের অভিযোগ, ওই যুবনেতা আসলে রাহুল মামকুতাথিল। রাহুল কেরলের যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতিও। বিক্ষোভকারীরা তার পদত্যাগের দাবি জানান। রিনি জর্জের অভিযোগের পর লেখিকা হানি ভাস্করানও রাহুলের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন। হানি তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, রাহুল তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বারবার বার্তা পাঠাতেন। প্রথমে তাদের কথোপকথন ভ্রমণের বিষয় নিয়ে শুরু হলেও, পরে তিনি বুঝতে পারেন যে রাহুল তার সঙ্গে বাজে উদ্দেশ্য নিয়ে কথা বলছেন। এরপর তিনি উত্তর দেওয়া বন্ধ করে দেন।তিনি লেখেন, 'মানুষের এটা জানা উচিত যে তুমি একজন মানসিক বিকারগ্রস্ত মানুষ। তুমি মেয়েদের সঙ্গে কথা বলে সেই কথোপকথনগুলো বিকৃত করে তুলে ধরো, এই পোস্টটি তারই জন্য।' হানি আরও দাবি করেন যে যুব কংগ্রেসের অনেক কর্মী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
রাহুল মামকুতাথিল-র পদত্যাগ
চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত কেরল যুব কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রাহুল মামকুতাথিল। তবে অভিনেত্রীকে হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করছেন তিনি। রাহুলের বক্তব্য, 'আমার বিরুদ্ধে যিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁকে চ্যালেঞ্জ করছি, আদালতে অভিযোগ প্রমাণ করে দেখান। আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ কিন্তু জমা পড়েনি। দেশের আইন ব্যবস্থার উপর ভরসা আছে আমার। ও আমার কাছের বন্ধু। আমার নামে কিন্তু অভিযোগ করেনি ও। এখনও ওকে কাছের বন্ধু বলেই মনে করি।' অন্যদিকে কেরল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ভিডি সতীশন জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। কত বড় নেতা, কী তাঁর প্রভাব, এসব দেখা হবে না। কংগ্রেসের কোনও নেতা এমন কিছু ঘটালে, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।