সেই কবেকার কথা। সেই ইতিহাস আজ বিস্মৃতপ্রায়। কালের অমোঘ নিয়মে মুছে যায় অনেক কিছুই। কোচিনে সেন্ট ফ্রান্সিস চার্চে ইতিহাস কার্যত মুছে গিয়েছে অনেকটাই। আর সেই ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ভাস্কো দ্য গামা। পর্তুগীজ নাবিক। চার্চে একটি নীল রঙের বোর্ড। তাতে লেখা ভাস্কো দ্য গামাকে মনে রেখে। পর্তুগীজ নাবিক। তিনি একদিন নেমেছিলেন এই কোচিনে। এই টুকুই।
তারপর অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে। এই সেই জায়গা যেখানে তিনি মারা গিয়েছিলেন। যেখানে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়েছিল।
১৪৯৮ সাল থেকে এতগুলো দিন কেটে গেল। এই মানুষটিই ভারতে আসার সমুদ্রপথ আবিস্কার করেছিলেন। তারই ৫০০ বছরে পা দিল এই মঙ্গলবার। এরপরই থেকে এই যে এত সমুদ্র বাণিজ্য তা এই ভাস্কো দ্য গামার দেখানো রুটেই। তিনি ভারতে আসার তিন বারের বার মারা যান। লিসবনে সেই ৫০০ বছর পূর্তি পালন করা হয়েছে। তবে কোচিনে অবশ্য তেমন কিছু নেই। একটা মোমবাতিও হয়তো জ্বলেনি তার জন্য।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, ঐতিহাসিক এফআর পিয়াস মালেকানডাথিল, তিনি ইন্দো পর্তুগীজ ইতিহাসের বিশেষজ্ঞ তিনি জানিয়েছেন, যখন ভাস্কো দা গামা শেষবারের জন্য কেরলে এসেছিলেন তখন তাঁর বয়স হয়ে গিয়েছে। তিনি অসুস্থ। তাঁর মৃত্যুর সময়তেও কোচিন ছিল পর্তুগীজ যে এলাকা, ছিল তার রাজধানী। পরে সেটা গোয়াতে স্থানান্তরিত হয়। তিনি জানিয়েছেন, কোচিতে এই ধরনের কোনও স্মরণসভা না করার একটা সম্ভাব্য কারণ হল পর্তুগীজদের জন্য যাঁদের ভুগতে হয়েছিল সেই কমিউনিটর লোকজন এখনও সেখানে রয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন, ১৯৯৮ সালে ভাস্কো দ্য গামার ভারতে আসার ৫০০ বছরকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য অনুষ্ঠানের চেষ্টা করা হয়েছিল। তখন এনিয়ে তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছিল। কারণ প্রশ্ন উঠেছিল কোন বিষয়টি নিয়ে উদযাপন করা হবে। আসলে কলম্বাসকে নিয়ে কিছু পালন করার সময়তেও একই ধরনের ইস্যু তোলা হয়। সেই সময়ও বলা হয়েছিল তবে কি বঞ্চনার উদযাপন করা হবে?
এমনকী এটাও বলা হয় যে আসলে ভাস্কো দ্য গামার রাস্তা ধরেই এসেছিল উপনিবেশবাদ। তিনিই কার্যত রুটটা জানিয়ে দিয়েছিলেন। তবে এটাই অবশ্য সব নয়। এই পথ ধরে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে পেঁপে, আনারসের মতো সামগ্রীও এসেছিল কেরলে। এদিকে বর্তমানে নতুন প্রজন্মের অনেকেই জানেন না ভাস্কো দ্য গামার কথা। মনে করা হয় ভাস্কো হাউজে তিনি ১৫২৪ সাল পর্যন্ত ছিলেন।