সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) যৌথ বিবৃতিতে সই করেননি ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তাঁর সেই পদক্ষেপকে সমর্থন করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এই পদক্ষেপের পেছনের যুক্তি ব্যাখ্যা করে জয়শঙ্কর বলেন, যৌথ বিবৃতিতে সন্ত্রাসবাদের কোনও উল্লেখ করতে চায়নি এসসিও-র একটি দেশ। প্রসঙ্গত, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের উদ্দেশ্যেই এই সংগঠনটি গঠন করা হয়েছিল। এদিকে 'এসসিও-র একটি দেশ' বলতে জয়শঙ্কর পাকিস্তানকেই বোঝাতে চেয়েছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। (আরও পড়ুন: ট্রেনের ভাড়া ছাড়াও ১ জুলাই থেকে আসবে আরও ৫ বদল, চাপ পড়বে পকেটে)
আরও পড়ুন: ভারতকে এস৪০০-এর বাকি দুই স্কোয়াড্রন কবে দেবে রাশিয়া? এল বড় আপডেট
উল্লেখ্য, সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে ভারতের অবস্থানকে দুর্বল করতে এসসিও-র যৌথ বিবৃতিতে নজর ঘোরাতে চাইছিল পাকিস্তান। কিন্তু ভারত পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা এবং সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকে। এই পরিস্থিতিতে এসসিও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে যৌথ বিবৃতিতে সই করেননি ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। চিনের এসসিও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে ভাষণ দেওয়ার সময় নাম না করেই পাকিস্তানকে তোপ দেগেছিলেন রাজনাথ সিং। সম্মেলনে বক্তব্য পেশ করার সময় রাজনাথ সিং স্পষ্ট বলেন, 'আমরা দেখিয়ে দিয়েছি যে সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রস্থলগুলি আর নিরাপদ নয়। আমরা ভবিষ্যতেও এই জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে নিশানা করতে দ্বিধাবোধ করব না।' তিনি আরও বলেন, 'আমাদের অঞ্চলের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলি হল শান্তি, নিরাপত্তা এবং আস্থার ঘাটতি। ভারত বিশ্বাস করে, বহুপাক্ষিক সংলাপ এবং সহযোগিতার ব্যবস্থা তৈরি করা হলে তা দেশগুলির মধ্যে সংঘাত রোধে সাহায্য করতে পারে। কোনও দেশ, তা যত বড় এবং শক্তিশালীই হোক না কেন, একা সন্ত্রাসবাদকে মোকাবিলা করতে পারবে না।' (আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-পাককে নিয়ে বৈঠক করা চিনকে তাদের দেশে গিয়েই 'দায়িত্ব' মনে করালেন রাজনাথ)
আরও পড়ুন: অভিনন্দন বর্তমানকে আটক করা পাক মেজরের মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন মুনির, বললেন…
এদিকে এই সম্মেলনে পাকিস্তানের তরফ থেকে উপস্থিত খাজা আসিফ। তাঁর সামনেই রাজনাথ বলেন, 'রাষ্ট্রসংঘের দ্বারা নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি)-র শাখা রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট পহেলগাঁও হামলার দায় স্বীকার করেছিল।' এর আগে পাকিস্তানের সংসদে দাঁড়িয়ে সেই দেশের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার দাবি করেছিলেন, পহেলগাঁও হামলা নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতিতে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের নাম মুছে ফেলতে ভূমিকা পালন করেছিল তারাই। এরপর প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, 'কিছু দেশ সীমান্তপার সন্ত্রাসবাদকে নীতিগত ভাবে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এবং তারা সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়। এই ধরনের দ্বিমুখী নীতির কোনও স্থান থাকা উচিত নয়। এই ধরনের দেশগুলির সমালোচনা করতে দ্বিধা করা উচিত নয় এসসিও-র।' রাজনাথ সিংয়ের কথায়, 'যারা নিজেদের সংকীর্ণ ও স্বার্থপর উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে, লালন করে এবং ব্যবহার করে, তাদের এর ফল ভোগ করা উচিত। সন্ত্রাসবাদের সাথে শান্তি ও সমৃদ্ধি একসাথে থাকতে পারে না। রাষ্ট্র বহির্ভূত শক্তি এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিস্তার ঘটতে দেওয়া যেতে পারে না।'