বীরভূমের লাভপুর থানার অন্তর্গত হাতিয়া গ্রামে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় এবার পুলিশের জালে এক তৃণমূল নেতার ছেলে। ধৃত যুবকের নাম মহম্মদ কাইফ, বয়স ১৯ বছর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করে লাভপুর থানার পুলিশ। সূত্রের খবর, বিস্ফোরণের সময় কাইফ নিজেও গুরুতর জখম হন এবং তার শরীরের বিভিন্ন অংশে স্পষ্ট আঘাত ও পোড়ার চিহ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: বীরভূমের লাভপুরে পির সাহেবের মেলায় পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কাইফের বাবা শেখ আবসার হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য। তবে ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানতে তিনি একেবারেই নারাজ। তাঁর দাবি, তাঁর ছেলে সম্পূর্ণ নির্দোষ। গরুর টাঙ্গা নিয়ে গিয়ে ফেরার সময় দুষ্কৃতীদের বোমাবাজির মাঝে পড়ে যায় সে। সেই কারণেই তার গায়ে চোট লেগেছে। রাজনৈতিক কারণে ফাঁসানো হচ্ছে। জানা যায়, গত ২১ জুন হাতিয়া গ্রামে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ থেকে সংঘর্ষ বাঁধে। তখন বোমাবাজি ঘটে। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, ওই সময় বোমা বাঁধতে গিয়েই ঘটে বড় বিস্ফোরণ। দু’জনের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই, আহত হন আরও অন্তত তিনজন। ঘটনার পরেই এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। লাভপুর থানার পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে এবং প্রাথমিকভাবে গ্রামের দুই বাসিন্দাকে গ্রেফতার করে।
তদন্তে জানা যায়, কাইফ ঘটনার পরে চিকিৎসার জন্য একাধিক জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। সেই সূত্র ধরেই গোপন খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার পুলিশ পৌঁছে যায় বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানেই সন্ধ্যায় তাঁকে পাকড়াও করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, হাসপাতালের বাইরে নজর রাখা হচ্ছিল বেশ কিছুক্ষণ ধরেই। শেষমেশ বেরিয়ে আসার সময় গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। শুক্রবার কাইফকে আদালতে তোলা হয়। পুলিশ তার তিন দিনের হেফাজতের আবেদন জানাবে বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি, তদন্তকারীরা এখন বাকিদের খোঁজে জোর তল্লাশি চালাচ্ছে। বিস্ফোরণের সঙ্গে আর কারা জড়িত, তা জানার চেষ্টা চলছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও রাজনৈতিক মন্তব্য প্রকাশ্যে আসেনি। তবে এলাকাবাসীর একাংশের মতে, শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই এই রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটেছে।