গাজায় চলতে থাকা যুদ্ধবিরতির অধীনে আটজন পণবন্দিকে মুক্ত করল হামাস। কিন্তু, উলটো দিকে, তাদের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি প্যালেস্তেনীয়দের মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখল ইজরায়েল।
সূত্রের দাবি, বন্দিমুক্তি ও আদানপ্রদান চলাকালীন মুখ ঢাকা সন্ত্রাসবাদীদের উপস্থিতি এবং উন্মত্ত জনতার কারণে যে গন্ডগোল হয়, তার জেরেই এমন পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয় নেতানিয়াহুর সরকার।
ইজরায়েলের তরফে স্থির করা হয়েছিল, ১১০ জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। তাঁদের মধ্যে ৩০ জন এমন বন্দিও ছিলেন, যাঁদের ইজরায়েলের উপর হামলা করার দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু, হঠাৎই ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নির্দেশিকা জারি করেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রত্যেক বন্দির 'নিরাপদ মুক্তি' নিশ্চিত করা হবে, ততক্ষণ তাদের তরফে বন্দি মুক্তির প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হবে।
অন্যদিকে, যুদ্ধবিরতি বোঝাপড়ার অধীনে হামাস ৩৩ জন ইজরায়েলিকে ছেড়ে দিতে প্রস্তুত বলে জানা গিয়েছে। এই সংখ্য়াটা মোট বন্দির মোটামুটি এক তৃতীয়াংশ। যার বিনিময়ে প্রায় ২,০০০ প্যালেস্তেনীয় বন্দিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ইজরায়েলের।
এর পাশাপাশি, গাজার প্রধান এলাকাগুলি থেকে সেনা প্রত্যাহারেও রাজি হয়েছে ইজরায়েল। একইসঙ্গে, শত-শত, হাজার-হাজার ঘরছাড়া প্যালেস্তেনীয়কে ঘরে ফেরানোর বিষয়েও সহমত হয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার যে আটজনকে মুক্তি দেওয়া হয় হামাসের তরফে, সেই দলে রয়েছেন - এক মহিলা সেনা, ২৯ বছরের এক ইজরায়েলি মহিলা, ৮০ বছরের এক ইজরায়েলি বৃদ্ধ এবং পাঁচজন শ্রমিক। যাঁরা আদতে থাইল্যান্ডের মানুষ। তাঁরা যখন দক্ষিণ ইজরায়েলের একটি প্রকল্পে কাজ করছিলেন, তখনই তাঁদের বন্দি করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিন সকলের আগে যাঁকে মুক্তি দেওয়া হয় আগম বার্জার নামে সেই তরুণীর বয়স মাত্র ২০ বছর। তিনি ইজরায়েলের মহিলা সেনাবাহিনীর সদস্য। উত্তর গাজায় অবস্থিত, ধ্বংস হয়ে যাওয়া জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে প্রবল ভিড়ের মধ্য়ে দিয়েই বাকি সকলের আগে নিজের মুক্তির পথে এগিয়ে আসেন তিনি। এই ছবি ছিল যথেষ্ট উত্তেজনাপূর্ণ।
তবে, সেই উত্তেজনা চরমে ওঠে এর কয়েক ঘণ্টা পর - খান ইউনিস এলাকায়। যেখানে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে হঠাৎ করেই মুখোশ পরা হামাস সদস্য ও জিহাদিরা রীতিমতো কনভয় নিয়ে ঢুকে পড়ে। তারা মানুষকে পিছু হঠতে বাধ্য করে।
ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান। তাঁর মতে, এই ঘটনা ছিল একটি 'শকিং সিন'। তিনি আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে তারা প্রত্যেক পণবন্দির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয় পদক্ষেপ করে।