ঘটনার সূত্রপাত ১৬ মাস আগে। কর্ণাটকের হাভেরির একটি হোটেলে রুম ভাড়া নিয়েছিলেন ভিনধর্মের এক যুগল। ওই রুমে ঢুকে তরুণীকে টেনেহিঁচড়ে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠে একদল যুবককের বিরুদ্ধে। পরে তাদের গ্রেফতারও করে পুলিশ। সম্প্রতি ১৬ মাস জেল খাটার পর জামিনে ছাড়া পায় সাত অভিযুক্ত। আর অভিযুক্তদের জামিনের খবর চাউর হতে জেলের সামনেই বিজয় উল্লাসে মাতল তাঁদের সঙ্গী-সাথীরা। গাড়ি, বাইকের কনভয় থেকে ডিজে বক্স। জেলের বাইরে পদার্পণ করতেই এভাবেই সাত অভিযুক্তকে স্বাগত জানিয়েছে তাঁদের সঙ্গীরা। এই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেটিজেনরা।
গণধর্ষণে অভিযুক্তদের এই নজিরবিহীন উল্লাস হয়েছে হাভেরির আক্কি আলুর শহরে। জেল থেকে জামিন পেতেই হুড খোলা গাড়ি-বাইক নিয়ে, তারস্বরে ডিজে বাজিয়ে রাস্তায় মিছিল বার অভিযুক্তরা। তার সঙ্গে তারস্বরে বেজেছে ডিজে। তাদের সঙ্গী-সাথীরা জেলের সামনে গাড়ি, বাইকের কনভয় নিয়ে হাজির হয়েছিল।
প্রথমেই সাত অভিযুক্তকে স্বাগত জানানো হয়। তারপর গাড়ি, বাইক আর গানের সঙ্গে শোভাযাত্রা করে অভিযুক্তদের নিয়ে যাওয়া হয়। শুধু তাই নয়, অভিযুক্তদের দুই আঙুল উঁচিয়ে ভিক্ট্রি সাইনও দেখাতেও দেখা গিয়েছে।
এই ঘটনা ঘিরে হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে কর্ণাটকে। সম্প্রতি যে সাতজন মূল অভিযুক্ত জামিন পেয়েছে তারা হল, আফতাব চন্দনকাট্টি, মাদার সাব মানদাক্কি, সামিউল্লা লালানাভার, মহম্মদ সাদিক আগাসিমানি, শোয়েব মুল্লা, তাউসিপ ছোটি এবং রিয়াজ সাভিকেরি। কয়েক মাস বিচারবিভাগীয় হেফাজতে থাকার পরে জামিন মিলেছে, তারপরেই পার্টি শুরু করে অভিযুক্তরা।
ঘটনার বিবরণ
বছর ছাব্বিশের নির্যাতিতা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। কর্ণাটক স্টেট ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের এক কর্মীর সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। ওই যুগল ২০২৪ সালের ৮ জানুয়ারি হাভেরির হানাগালে একটি হোটেল ভাড়া নেন।পুলিশ সূত্রে খবর, ওই হোটেলে ঢুকে ওই যুগলের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে একদল যুবকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, হোটেল থেকে তরুণীকে তুলে নিয়ে গিয়ে জঙ্গলে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
প্রথমে ঘটনাটিকে নীতি-পুলিশির মতো করে দেখা হয়েছিল। পরে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ওই মহিলা অভিযোগ দায়ের করার পরে গণধর্ষণের ধারা যুক্ত হয়। প্রথমে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করেছিলেন নির্যাতিতা। পরে মামলা চলার সময়ে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে পারেননি নির্যাতিতা, এর ফলেই মামলা দুর্বল হয়ে গিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। ১২ জন আগেই জামিন পেয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে এই ঘটনায় সাহায্য করা এবং নির্যাতিতাকে মারধর করার অভিযোগ ছিল। এবার যে সাতজন জামিন পেয়েছে, তারাই মূল অভিযুক্ত ছিল।