খুদে পড়ুয়াদের মিড–ডে মিল নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। রাজ্য সরকার এবার থেকে মিড–ডে মিলের ডিম এবং চিনির জন্য স্কুলগুলিকে আর অর্থ বরাদ্দ করবে না। এই কথা গত মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ শিশু পড়ুয়ারা প্রোটিন না পেলে স্বাস্থ্যের বিকাশ কেমন করে হবে? উঠছে প্রশ্ন। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে প্রথমবারের মতো মহারাষ্ট্র সরকার পড়ুয়াদের প্রোটিনের ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে সরকারি স্কুলগুলিতে ডিম এবং ফল দেওয়া শুরু করেছিল। যে পড়ুয়ারা ডিম খায় না তারা বদলে ফল বেছে নিতে পারত। তার জন্য স্কুলগুলিকে পড়ুয়া পিছু ৫ টাকা অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দ করেছিল মহারাষ্ট্র সরকার। এখন তাতে কোপ বসানোয় তুমুল সমালোচনা করেছেন বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
বাংলার মিড–ডে মিলে শিশু পড়ুয়ারা ডিম পেয়ে থাকে। কখনও আবার মাছ, মাংসও মেলে। সেখানে মহারাষ্ট্র সরকার সরাসরি শিশু পড়ুয়াদের প্রোটিন খাবারে কোপ ফেলায় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। আর এই সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, যদি কোনও স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটি (এসএমসি) পড়ুয়াদের ডিম সরবরাহ করতে চায় তবে তারা জনগণের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করতে পারে। এই ঘটনাকেই নিরামিষ বাদী সংস্কৃতি বলে কটাক্ষ করেছেন বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এভাবে শিশুপড়ুয়াদের উপর নিরামিষবাদী সংস্কৃতি চাপিয়ে দিয়ে সরকার প্রোটিন খাবার থেকে বঞ্চিত করছে বলে তোপ দাগেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাজেটের পরই বঙ্গ–সফরে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, দলীয় নেতাদের সঙ্গে শাহী বৈঠক
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার মিড–ডে মিল প্রকল্পে অংশগ্রহণ বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছে। এই বিষয়ে স্কুল পরিচালনা কমিটির এই খাবারের সুবিধা প্রদান করার চেষ্টা করা উচিত। মিষ্টি জাতীয় খাবারের জন্য প্রয়োজনীয় চিনি জনসাধারণের তহবিলের মাধ্যমে সংগ্রহ করা উচিত। কারণ কোনও অতিরিক্ত তহবিল সরকার সরবরাহ করবে না। এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসাবে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে পড়ুয়া পিছু দৈনিক খাদ্য ব্যয়ের উপর নির্ধারণ করা আর্থিক সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। এটা নিয়েই বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর মন্তব্য, রাষ্ট্রক্ষমতা কায়েম করে ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ১২ লাখ পর্যন্ত আয়ে দিতে হবে না কোনও আয়কর, কেন্দ্রীয় বাজেটে ঘোষণা নির্মলার
এছাড়া আগে মধ্যপ্রদেশ সরকারও পড়ুয়াদের মিড–ডে মিলের তালিকা থেকে ডিম বাদ দিয়েছে। অতি সম্প্রতি গোয়া সরকারও এই পথে হেঁটেছে। লোকসভায় পেশ করা তথ্য অনুযায়ী, ১৪টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিড–ডে মিলে পড়ুয়াদের ডিম সরবরাহ করে। তাহলে এই রাজ্যগুলি ব্যতিক্রম কেন? উঠছে প্রশ্ন। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে তুমুল সমালোচনা করে বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘মধ্যপ্রদেশ, গোয়ার পর মহারাষ্ট্রেও শিশুদের মিড–ডে মিল থেকে বন্ধ হল ডিম, যা চাপিয়ে দেওয়া নিরামিষবাদী সংস্কৃতির আরেকটি উদাহরণ মাত্র। কথায় আছে, ‘আপরুচি খানা’, বিজেপি সরকার মনে হয় সেই ব্যক্তি স্বাধীনতার ক্ষেত্রেও রাষ্ট্রক্ষমতা কায়েম করার উদাহরণ রাখছে। যার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদই কাম্য। প্রোটিন না খেলে হবে না ভাল ছেলে।’