২৭ বছর পর ফের একবার দিল্লিতে ক্ষমতা দখল করতে চলেছে বিজেপি। পরপর হারের পর অবশেষে রাজধানীতে ডাবল ফিগারে পৌঁছায় বিজেপি। আগের দুই বিধানসভা নির্বাচনে ডাবল ফিগারেও পৌঁছায়নি পদ্ম শিবির। তবে এবার তারা ৭০টি আসনের মধ্যে ৪৮টি জিতেছে বিজেপি। এরই মাঝে শুরু হয়ে গিয়েছে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম নিয়ে জল্পনা। পাশাপাশি কবে সরকার গঠন করা হবে, তা নিয়ে কানাঘুষো চলছে দিল্লির রাজনৈতিক মহলে। এই আবহে শোনা যাচ্ছে, ১৫ ফেব্রুয়ারির পরে দিল্লিতে সরকার গঠন ও শপথ গঠন করা হতে পারে। উল্লেখ্য, আগামী সপ্তাহে আমেরিকায় যেতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই আবহে মোদী দেশে ফিরে আসার পরই সরকার গঠন করা হতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্টে। (আরও পড়ুন: কবে সংসদে পেশ করা হবে নয়া আয়কর বিল? সামনে এল সম্ভাব্য দিনক্ষণ)
আরও পড়ুন: ভাঙবে সরকারি কর্মীদের 'স্বপ্ন'? ডিএ বৃদ্ধির আগে সামনে এল পকেটে 'প্রভাব' ফেলা খবর
উল্লেখ্য, দিল্লি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করবেন মুখ্যমন্ত্রীকে। এই আবহে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতা টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে বলেন, 'দল মুখ্যমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করে ফেললে তখন লেফটেন্যান্ট গভর্নরের পরামর্শে রাষ্ট্রপতি তাঁকে নিয়োগ করবেন। এই গোটা প্রক্রিয়া ২-৩ দিন চলতে পারে।' এদিকে সেই নেতা দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিজেপি চমক দিতে পারে। জাতিগত সমীকরণ, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার মতো সব অঙ্ক কষে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বাছাই করতে পারে। ভোটব্যাঙ্কের বিষয়টিও বিজেপির মাথায় থাকবে। এবারে দিল্লিতে পঞ্জাবি, ব্যবসায়ি এবং দলিত গরিবরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও তা খেয়াল রাখবে দল। (আরও পড়ুন: কেজরির হারে পঞ্জাবে ভাঙতে পারে মানের সংসার? AAP-কে নিয়ে সামনে চাঞ্চল্যকর দাবি)
আরও পড়ুন: রেপো রেট তো কমেছে, ফিক্সড ডিপোজিটে টাকা রাখা আমানতকারীরা কী করতে পারেন এবার?
এদিকে দিল্লির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেশ কয়েকজনের নাম চর্চায় আছে। তাঁরা হলেন:
পরবেশ বর্মা - নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে হারিয়ে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে জায়ান্ট কিলার হয়ে উঠেছিলেন পরবেশ বর্মা। উল্লেখ্য, ২০১৩ সাল থেকে নয়াদিল্লি বিধানসভা আসনে টানা তিনবার জিতেছিলেন কেজরিওয়াল। কিন্তু চতুর্থবারে সফল হলেন না। বরং দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে হারিয়ে ৪৮ বছর পরে নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রে পদ্মফুল ফোটালেন পরবেশ।
বিজেন্দ্র গুপ্ত - দিল্লি বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক বিজেন্দ্র গুপ্তা রোহিণী আসনে জয়ী হয়েছেন আপের প্রদীপ মিত্তলকে হারিয়ে। ২০১৫ এবং ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও তিনি এই আসনে জয়ী হয়েছিলেন। এর আগে তিনি দিল্লি বিজেপির প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বীরেন্দ্র সচদেব - বীরেন্দ্র সচদেব দিল্লিতে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) রাজ্য সভাপতি। ২০২৩ সালের ২৩ মার্চ তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর নেতৃত্বে, বিজেপি ২০২৫ সালের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। ২৭ বছর পর দিল্লিতে পদ্ম ফুটেছে এবং প্রায় একযুগ পর রাজধানীতে আপের আধিপত্যের অবসান ঘটেছে।
হরিষ খুরানা- দিল্লির মোতি নগর থেকে এবারে বিজেপি প্রার্থী হরিষ খুরানা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন আপের শিবচরণ গোয়েলের বিরুদ্ধে। দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মদন লাল খুরানার (১৯৯৩-১৯৯৬) পুত্র এই হরিষ। তিনি বিজেপির দিল্লি ইউনিটের সম্পাদক রয়েছেন। এছাড়াও তিনি দলের জনসংযোগ সেলের আহ্বায়ক এবং দলীয় মুখপাত্র হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাঁশুরি স্বরাজ- এদিকে সুষ্মা স্বরাজের মেয়ে বাঁশুরি স্বরাজের নামও উঠে আসছে। তিনি প্রথমবারের সাংসদ। বাঁসুরি স্বরাজ লোকসভা নির্বাচনে নয়াদিল্লি আসনে জয়ী হয়েছিলেন। এই আসনে একদা অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং এলকে আডবাণীরা জিতেছিলেন। এর আগে ১৯৯৮ সালে যখন বিজেপি শেষবারের মতো গদিতে বসেছিল, তখন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন সুষ্মা স্বরাজই।