প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের প্রয়াণের পরে শোকবার্তা জানাতে গিয়ে রাজীব গান্ধীর কন্যা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী একটা সুন্দর কথা লিখেছিলেন, রাজনীতির এই রুক্ষ দুনিয়ায় মনমোহন সিং অত্যন্ত ভদ্র, সজ্জন একজন মানুষ। বাস্তবিকই ধীরস্থির, জ্ঞানী মানুষ হিসাবে দেশে বিদেশে বার বার সম্মানিত হয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন তিনি। রেখে গিয়েছেন অগণিত অনুরাগীদের। রেখে গিয়েছেন দেশ গঠনে, দেশের অর্থনীতিকে আরও সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে তাঁর একাধিক কীর্তিকে।
এদিকে সংস্কৃতির শহর কলকাতার সঙ্গে মনমোহনের যোগাযোগ ছিল একেবারে শেষের দিন পর্যন্ত। সূত্রের খবর, কলকাতায় বোনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন মনমোহন সিং। আদ্যোপান্ত একজন পারিবারিক মানুষ ছিলেন মনমোহন। দেশের অর্থনীতিকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করানোর জন্য যেমন জীবনভর কাজ করে গিয়েছেন তেমনি তিনি ব্যস্ততার কথা বলে পরিবার পরিজনকে কোনওদিন এড়িয়ে যাননি।
টিভি ৯ এর প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে মনমোহন সিংয়ের বোন গোবিন্দ কৌর ও তাঁর গোটা পরিবার থাকে কলকাতায়। ভাগ্নে গুরুদীপ সিং জানিয়েছেন, মায়ের সঙ্গে প্রায়ই কথা হত মনমোহনের। কিছুদিন আগেও ফোন করে বোনের খোঁজ নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, মনমোহন ছিলেন কমপ্লিট ফ্যামিলিম্যান।
এএনআইয়ের পোস্ট করা ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে বোনের বাড়ির দেওয়ালে টাঙানো মনমোহনের ছবি। বিছানায় বসে রয়েছেন বোন। বড়দার শোকে কাতর।
পরিবারে কে কেমন পড়াশোনা করছেন সেব্যাপারে খোঁজ নিতেন তিনি। আসলে পড়াশোনার প্রতি বরাবরই টান ছিল মানুষটার। ছাত্র জীবনে ছিলেন অত্যন্ত উজ্জ্বল। এরপর রাজনীতির জীবনের প্রতিটি পদে ছিল সেই পড়াশোনার ছাপ।
ওই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, মনমোহন সিংয়ের ভাগ্নে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে যখন সরকারি আধিকারিক হিসাবে ছিলেন তখন একাধিকবার তিনি কলকাতায় বোনের বাড়িতে আসতেন। তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে প্রটোকলের কারণে কিছুটা সমস্যা হত। সেকারণে তিনি রাজভবনে ডেকে নিতেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাওয়ার পরে তিনি ফের কলকাতায় বোনের কাছে এসেছিলেন বলে খবর।
বোন বড়দা মনমোহনকে ডাকতেন পাপাজি বলে। সেই পাপাজি আর নেই ভাবতেই পারছেন না বোন গোবিন্দ কউর। এদিকে গোবিন্দ কউরের পরিবার ইতিমধ্য়েই দিল্লি রওনা হয়েছেন। তাঁরা শেষ যাত্রায় শামিল হতে চান।
অনেক বড় বড় পদে ছিলেন মনমোহন সিং। কিন্তু পরিবারের লোকজনের কাছে তিনি ছিলেন একেবারে কাছের মানুষ। তাঁদের ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজ রাখতেন। পড়াশোনার যে উপকারিতা সেটা বলতেন। সেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আর নেই। শোকে পাথর গোটা পরিবার।