চন্দ্রপুরম পোন্নুসামী রাধাকৃষ্ণণ শুক্রবার রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের ১৫তম উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। রাধাকৃষ্ণণ ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন আজ। এর আগে, স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে জগদীপ ধনখর পদত্যাগ করার পর ২১শে জুলাই থেকে এই পদ শূন্য ছিল।
এদিন রাষ্ট্রপতি ভবনে লাল কুর্তা এবং ঐতিহ্যবাহী তামিল পোশাক পরে রাধাকৃষ্ণণ এবং অন্যান্য ভিআইপি অতিথিরা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর আগমনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সকাল ১০.১১ মিনিটে, তিনি ইংরেজিতে শপথ গ্রহণ করেন, তারপরে রাষ্ট্রপতি মুর্মু 'অভিনন্দন' জানান। শপথ গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, ভারতের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বহু নেতা রাধাকৃষ্ণাণকে করতালির মাধ্যমে স্বাগত জানান। রাধাকৃষ্ণণ নভেম্বরে নির্ধারিত শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, যা নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে।
এদিন ২১শে জুলাইয়ের পর ধনখড় প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে উপস্থিত হন। তাঁর পূর্বসূরী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু এবং হামিদ আনসারিও উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচারে কোনও বিরোধী নেতাকে দেখা যায়নি। রাধাকৃষ্ণণের সামনে রাজ্যসভার দায়িত্ব সামলানো একটি বড় চ্যালেঞ্জের দিক হবে। বছর ঘুরলেই তামিলনাড়ুতে বিধানসভা ভোট। সেই তামিলভূমের ভূমিপুত্র রাধাকৃষ্ণণ এবার রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলাবেন পদাধিকার বলে।
কিছুদিন আগেই উপরাষ্ট্রপতি পদে ভোট সম্পন্ন হয়।রাধাকৃষ্ণাণ বিরোধী প্রার্থী বি সুদর্শন রেড্ডিকে ৪৫২-৩০০ ভোটে পরাজিত করেন, যা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ভোটে। ৬৮ বছর বয়সী এই বিজেপি নেতা, যিনি আরএসএস মতাদর্শে বিশ্বাসী, দলে একজন মৃদুভাষী, বিতর্কিত নন এমন ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। তিনি তামিলনাড়ুর একমাত্র বিজেপি নেতা যিনি ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালে ২ বার লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। পদোন্নতির আগে তিনি মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ছিলেন, ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই থেকে তিনি এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। গৌন্দর-কঙ্গু ভেল্লার সম্প্রদায়ের একজন ওবিসি রাধাকৃষ্ণণ তামিলনাড়ুর তিরুপুরে জন্মগ্রহণ করেন, যেখানে তিনি ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। আরএসএস স্বয়ংসেবক হিসেবে জনজীবনে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করার পর, তিনি ১৯৭৪ সালে ভারতীয় জনসংঘের রাজ্য কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হন। তাঁর সহকর্মীরা বলেছিলেন যে তাঁর স্নেহশীলতা এবং দ্বন্দ্ব ও বিতর্ক ছাড়াই দল পরিচালনা করার দক্ষতার কারণেই ২০০৪ সালে তাঁকে রাজ্য ইউনিটের প্রধান নির্বাচিত করা হয়েছিল। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বেঙ্গালুরু থেকে দিল্লিতে উড়ে এসেছিলেন, যেখানে তিনি কমনওয়েলথ সংসদীয় সমিতির বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি বেঙ্গালুরুতে ফিরে আসবেন।