মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তিনি ফোন করবেনই না। বরং করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। কিংবা চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে। ব্রাসিলিয়া এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে বাণিজ্যিক সংঘাত তীব্র হতেই জানালেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা।বামপন্থী লুলার দেশের পণ্যের উপরে ৫০ শতাংশ পণ্য চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। তবে সম্প্রতি ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে শুল্ক বিতর্ক মেটাতে লুলা তাঁকে যে কোনও সময়ে ফোন করতে পারেন। কিন্তু ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট সেই দাবি পত্রপাঠ খারিজ করে দিলেন।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট দোনলাদ ট্রাম্প বলেছিলেন, লুলা চাইলে তাঁকে যখন খুশি ফোন করে শুল্কের বিষয়ে আলোচনা করতেই পারেন।কিন্তু এক এক প্রশ্নোত্তর পর্বে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জানান, ‘আমি কখনওই ট্রাম্পকে ফোন করব না। কারণ, তিনি আলোচনা চান না।’ একই সঙ্গে লুলা এই দিনটিকে বর্ণনা করেছেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ব্রাজিল সম্পর্কের ইতিহাসে সবচেয়ে দুঃখজনক দিন।' এখানেই থামেননি তিনি। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেন, কিন্তু নিশ্চিন্ত থাকুন, আমি ফোন করে ট্রাম্পকে সিওপি সম্মেলনের জন্য আমন্ত্রণ জানাবো, কারণ আমি জানতে চাই জলবায়ু সমস্যা সম্পর্কে তাঁর কী মতামত। এরপরেই ব্রিকস-ভিত্তিক দেশগুলির সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, 'আমি শি জিনপিং-কে ফোন করব। মোদীকেও ফোন করব। তবে পুতিনকে ফোন করব না। উনি এখন সফর করতে পারছেন না। কিন্তু বাকি বিশ্বনেতাদের আমি ফোন করব।' তাঁর ইঙ্গিত থেকে স্পষ্ট ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলিকে একসঙ্গে বাঁধতে চাইছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে।
আরও পড়ুন-সম্পর্কের বরফ গলছে! গালওয়ান সংঘর্ষের পর প্রথম চিন সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদী, কবে যাচ্ছেন?
সম্প্রতি ভারতের উপরে যেমন ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প, তেমনই ব্রাজিলের উপরে আমদানি শুল্প চাপিয়েছেন ৫০ শতাংশ। কিছু কিছু ব্রাজিলিয় পণ্যকে অবশ্য এই চড়া শুল্ক থেকে ছাড় দিয়েছেন তিনি।তবে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর ঘোষণার পরেও, গত শনিবার ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘তিনি (লুলা) যখন ইচ্ছা আমায় ফোন করে কথা বলতে পারেন। শুল্ক এবং দুই দেশের মধ্যে অন্যান্য বিরোধের বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।’ তিনি আরও দাবি করেছিলেন, তিনি ব্রাজিলের জনগণকে ভালোবাসেন। কিন্তু ব্রাজিলের নেতারা ভুল কাজ করছে।
আরও পড়ুন-সম্পর্কের বরফ গলছে! গালওয়ান সংঘর্ষের পর প্রথম চিন সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদী, কবে যাচ্ছেন?
উল্লেখ্য, ব্রিকসকে বহুদিন ধরেই হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভারত ছাড়াও এই গোষ্ঠীতে রয়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। রিও ডি জেনেইরোতে সম্প্রতি আয়োজিত হয়েছিল ব্রিকস সম্মেলন। সেখানে ছয়টি নতুন সদস্য দেশও যোগ দিয়েছিল সম্মেলনে।সেখানে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা এবং ইরানে হামলার বিরুদ্ধে একসঙ্গে বিবৃতি দেওয়া হয়। যদিও সেই বিবৃতিতে সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইজরায়েলের নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবে বার্তা ছিল স্পষ্ট-আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের নীতি প্রত্যাখ্যান। সেই সম্মেলনের পর থেকেই নতুন করে ক্ষুব্ধ হতে দেখা গিয়েছিল ট্রাম্পকে। ট্রাম্প ব্রিকসভুক্ত দেশগুলিকে শুল্ক বৃদ্ধির হুঁশিয়ারিও দেন।