বালোচিস্তানের জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলার ঘটনায় ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। এই আবহে বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) তাদের সর্বশেষ বিবৃতিতে দাবি করেছে, তাদের দাবি মানা না হলে তারা আরও ১০ জন বন্দিকে হত্যা করবে। বিএলএ দাবি করেছে যে তাদের কাছে আটক থাকা ব্যক্তিদের বেশিরভাগই পাকিস্তানি সৈন্য। একই সঙ্গে সংগঠনটি আরও বলেছে, এই অভিযানে এখনও পর্যন্ত তাদের কোনও বিদ্রোহী নিহত হয়নি। এর আগে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দাবি করেছিল যে ১৬ বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে তারা। তবে পাক সেনার সেই দাবিকে মিথ্যা বলে দাবি করেছে বিএলএ। এরই সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত এই হামলায় ৩০ জনেরও বেশি পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। প্রায় আট ঘণ্টা বন্দুকযুদ্ধের পরে পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল। এখনও ২১৪ জন বন্দি সেই ট্রেনে আছেন। রাতে ১০৪ জনকে উদ্ধার করা গিয়েছে। এই আবহে পাক সেনা 'পূর্ণাঙ্গ উদ্ধার অভিযান' চালাতে চলেছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। অপরদিকে বালোচ রাজনৈতিক বন্দিদের দাবিতে অনড় অপহরণকারী বিএলএ।
উল্লেখ্য, হাইজ্যাক হওয়া জাফর এক্সপ্রেস কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়ার পেশাওয়ারে যাচ্ছিল। সেই আবহে ১১ মার্চ সকালে গুদালার ও পিরু কোনেরি এলাকার মাঝখানে ট্রেনটি লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এই হামলার দায় স্বীকার করে। এদিকে কোয়েটা রেল স্টেশনে একটি সহায়তা ডেস্ক চালু করেছে পাকিস্তান রেল। ট্রেনে থাকা যাত্রীদের উদ্বিগ্ন পরিজনদের সেখান থেকে পরিস্থিতি সম্পর্কিত তথ্য দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, যে রুট দিয়ে কোয়েটা থেকে জাফর এক্সপ্রেস পেশাওয়ার যায়, তাতে ১৭টি সুড়ঙ্গ রয়েছে এবং ৮ নম্বর সুড়ঙ্গে ট্রেনটিকে আটকে দিয়েছিল বালোচ সশস্ত্র যোদ্ধারা। এসব সুড়ঙ্গের ভিতরে ট্রেনের গতি অনেক সময় ধীর গতিতে চলে।
বিএলএ এক বিবৃতিতে বলেছে, বন্দুকধারীরা ট্রেনে ওঠার আগে বোমা বিস্ফোরণে রেললাইন উড়িয়ে দেয়। রেলওয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা মুখতার আহমেদ ব্লুমবার্গকে বলেন, একটি দুর্গম, পাথুরে এলাকায় গুলি করে ট্রেনটি থামানো হয়। হামলার পর বোলান জেলার একটি প্রত্যন্ত এলাকায় ট্রেনটি থেমে যায়। এদিকে যে জাফর এক্সপ্রেসে এই হামলা, তাতে মোট ৯টি কামরা আছে বলে দানা গিয়েছে। যাদের পণবন্দি করা হয়েছে তাদের মধ্য়ে পাকিস্তানি সেনা, পুলিশ, অ্যান্টি টেররিজম ফোর্স ও ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স রয়েছে। এদিকে বিএলএর তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে যদি পাক সেনা অভিযান চালাতে থাকে তবে সমস্ত পণবন্দিদের খতম করা হবে। বালোচ গোষ্ঠীর তরফে বলা হয়েছে, তাদের বিশেষ ইউনিট - 'মাজিদ ব্রিগেড' এই হাইজ্যাকের পেছনে রয়েছে।