মুর্শিদাবাদ হিংসার আবহে রাজ্যে অস্থিরতা তৈরির অভিযোগ এনে বিজেপি-আরএসএস-কে তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে 'ডিভাইড অ্যান্ড রুল'-এর অভিযোগ তুলে পাল্টা আক্রমণ শানাল বিজেপি। বিজেপির তরফ থেকে এই নিয়ে বলা হয়েছে, তৃণমূল সুপ্রিমো বরাবরই মানুষকে বিভ্রান্ত করার কাজ করেছেন। ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে যে সমাবেশ করা হবে, সে বিষয়ে পুলিশের কাছে আগাম তথ্য ছিল, তাহলে প্রশাসন কেন কোনও প্রস্তুতি নেয়নি, দোষটা কার?
বিজেপি নেতা অমিত মালব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে একটি পোস্টে লিখেছেন, মুখ্যমন্ত্রী কেবল মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। প্রশাসন ও সরকার আগে থেকেই ভিড় সম্পর্কে সচেতন ছিল। তাহলে কেন তাদের থামানো গেল না? ভিড়, অস্ত্র আর পাথর কি আকাশ থেকে উঠে এসেছিল? জনগণকে নিরাপদ রাখা আপনার দায়িত্ব ছিল, কিন্তু আপনি বারবার তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। মালব্য আরও বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ন্যায্যভাবেই সমস্ত নাগরিকের সেবা করবেন বলে আশা করা হয়। কিন্তু তা না করে তিনি তাঁর প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্য প্রধান বিরোধী দল ও একটি অরাজনৈতিক সংগঠনকে দায়ী করছেন। পরিহাসের বিষয় হল, তিনি এসব এমন এক সময় বলছেন যখন তাঁর নিজের পুলিশ প্রশাসনই স্পষ্টভাবে তাঁর বহিরাগত তত্ত্ব অস্বীকার করে জানিয়েছে যে মুর্শিদাবাদে হিন্দু বিরোধী হামলায় বহিরাগত শক্তির প্ররোচনা ছিল না।'
এর আগে গতকাল খোলা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখছিলেন,'বিজেপি ও তাদের সঙ্গীরা পশ্চিমবঙ্গে হঠাৎ করে খুব আক্রমণাত্মক হয়ে গিয়েছে। এই সঙ্গীদের মধ্যে আরএসএস-ও আছে।' গেরুয়া শিবিরের দিকে তোপ দেগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর খোলা চিঠিতে লেখেন,'আমি আগে আরএসএস-র নাম নিইনি, তবে এবার বাধ্য হয়ে বলতে হচ্ছি যে, রাজ্যে যে কুশ্রী মিথ্যা প্রচার চলছে, তার মূলে তারাও আছে।' তিনি বলছেন,'প্ররোচনার সূত্রে একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতটিকে এরা ব্যবহার করছে। ব্যবহার করছে বিভেদের রাজনীতি করার জন্য। এরা ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’-এর খেলা খেলতে চায়। এ খেলা বিপজ্জনক।'
রাজ্যবাসীকে শান্ত থাকার আর্জি জানিয়ে চিঠিতে মমতা বার্তা দেন, 'আমরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার নিন্দা করি এবং তাদের রুখবই। দাঙ্গার পিছনে আছে যে দুর্বৃত্তরা, তাদের কড়া হাতে দমন করা হচ্ছে। কিন্তু, সেইসঙ্গেই, পারস্পরিক অবিশ্বাসের বাতাবরণও আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে। সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে, পরস্পরের ব্যাপারে সহমর্মী ও যত্নশীল হতে হবে।' হিংসা পরিস্থিতি নিয়ে মমতার বার্তা,' আমরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার নিন্দা করি এবং তাদের রুখবই। দাঙ্গার পিছনে আছে যে দুর্বৃত্তরা, তাদের কড়া হাতে দমন করা হচ্ছে। কিন্তু, সেইসঙ্গেই, পারস্পরিক অবিশ্বাসের বাতাবরণও আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে। সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে, পরস্পরের ব্যাপারে সহমর্মী ও যত্নশীল হতে হবে।' মমতা তাঁর খোলা চিঠইতে লিখছেন,' দাঙ্গা যারা ঘটায়, তারা হিন্দুও নয়, তারা মুসলমানও নয় দাঙ্গা বাধায় দুর্বৃত্তরা। সব অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড়া হবে না।’ তিনি বলছেন,' ঈর্ষার কোনও ওষুধ নেই। হিংসুটে লোকেরা তাদের সংকীর্ণ দৃষ্টিপথের বাইরে যেতে পারে না। চাকরি, উন্নয়ন, সৃজনশীলতা, কিছুই ওই বিরোধীরা চায় না বা দিতে পারে না।'