৫১ সেকেন্ডের একটি ভিডিয়ো! যেখানে এক ব্যক্তিকে স্নান করতে দেখা যাচ্ছে। একটি বাড়ির খোলা চত্বরের মধ্যেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন ওই ব্যক্তি। আর তাঁকে স্নান করিয়ে দিচ্ছেন এক মহিলা। যিনি আদতে ওই ব্যক্তির মা। তিনি একটি বালতিতে জল আর দুধ মিশিয়েছেন এবং তা দিয়ে ছেলেকে স্নান করিয়ে দিচ্ছেন!
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুসারে, আপাতত এই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল। সেই ভিডিয়ো নিয়েই চলছে আলোচনা। এ নিয়ে আজ (শনিবার - ২৯ মার্চ, ২০২৫) সংবাদমাধ্যমে লেখালিখি হলেও এই ঘটনা কিন্তু গতকালের (শুক্রবার - ২৮ মার্চ, ২০২৫)।
তথ্য বলছে, যাঁকে ওই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, তাঁর নাম - সাইফুল ইসলাম ওরফে এরশাদ। বর্তমানে ৪০ বছরের সাইফুল একটা সময় ছাত্র লিগের রাজবাড়ি জেলা শাখার সম্পাদক ছিলেন। চলতি বছরের প্রথমেই একটি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সেই মামলায় জামিন পেতেই দুধে-জলে স্নান করেন তিনি - বলা ভালো, তাঁর মা তাঁকে স্নান করিয়ে দেন!
সাইফুল নিজেই তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল (সাইফুল ইসলাম সুমন) থেকে তাঁর 'দুধে-জলে' স্নান করার ভিডিয়ো এবং ছবি পোস্ট করেন। সঙ্গে ক্যাপশনে লেখেন, 'আমার মা মানত করেছিল মিথ্যা মামলা থেকে জামিন পেলে দুধ দিয়ে গোসল করাবে। দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য আমাকে আশীর্বাদ করেন, মায়ের দোয়া নিয়ে আগামী দিনে আমার পথচলা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ রাজনীতি ধারণ করে আগামী দিনের রাজনীতি করব ইনশা আল্লাহ। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।'
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমানে সাইফুল যুব লিগের সঙ্গে যুক্ত। হাসিনা সরকারের পতন হলেও তাঁর অনুগামী এই ব্যক্তি রাজনীতি ছাড়েননি।
ঘটনা প্রসঙ্গে আরও জানা গিয়েছে, গত বছরের ৪ অগস্ট রাজবাড়ি সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন আন্দোলনকারীদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। হাসিনা সরকারের পতনের পর গত বছরেরই ২ সেপ্টেম্বর জিসান খান নামে এক ছাত্র ৪ অগস্টের সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে স্থানীয় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
সেই অভিযোগপত্রে অভিযুক্তদের তালিকায় ছিলেন মোট ৭৪ জন! তাঁদের মধ্য়ে ৬০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় হামলাকারী বলে উল্লেখ করা হয়। এবং বাকি ১৪ জনের নামোল্লেখ করে অভিযোগ জানানো হয়। সেই ১৪ জনের মধ্যে সাইফুল ইসলামেরও নাম ছিল।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে সদর উপজেলার কামালদিয়া থেকে সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর পরের দিন - গত ২০ ফেব্রুয়ারি (২০২৫) তাঁকে পুলিশ আদালতে পেশ করা হয় এবং বিচারকের নির্দেশে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
এরপর সাইফুলের তরফে আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়। গত মঙ্গলবার সেই মামলা শেষ হয় এবং আদালত তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। পরদিন - অর্থাৎ - গত বুধবার বিকেলে জেল থেকে ছাড়া পান তিনি।