মাত্র ৩০ মাসে ২৫ বার সন্তান প্রসব। একই সঙ্গে ৫ বার বন্ধ্যত্বকরণ করে পেয়েছেন ৪৫ হাজার টাকা। উত্তরপ্রদেশের আগ্রার ফতেহাবাদ কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে কৃষ্ণা কুমারী নামে এক মহিলার নথি দেখে চোখ কপালে সকলের। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘জননী সুরক্ষা যোজনা’ গরিব গর্ভবতী মহিলাদের সহায়তার জন্য করা হয়েছে। এই প্রকল্পে গরিব-পিছিয়ে পড়া গর্ভবতী মহিলাদের জন্য সরকারি হাসপাতালে সন্তান প্রসব ও বন্ধ্যাত্বকরণ করালে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়। আর সেই প্রকল্পে ধরা পড়েছে প্রতারণার ছবি।
আরও পড়ুন-ভিনজাতের প্রেমিকের সঙ্গে পালানোর মাশুল! বিহারের মেয়েকে খুন প্রাক্তন সেনাকর্মী বাবার
উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের এক অডিট রিপোর্টে এমনই ভয়ঙ্কর তথ্য সামনে এসেছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ফতেহাবাদের এক মহিলা কৃষ্ণা কুমারীর নাম ব্যবহার করে মাত্র ২.৫ বছরে ২৫ বার সন্তান জন্ম ও ৫ বার বন্ধ্যাত্বকরণের নামে টাকা তোলা হয়েছে। জননী সুরক্ষা যোজনার আওতায় এই সমস্ত লেনদেন করা হয়েছে। ৩৫ বছর বয়সী কৃষ্ণা কুমারীর নামে জাল নথি ব্যবহার করে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। এরপর সে সব অর্থ সরাসরি কৃষ্ণা কুমারীর নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয়। এত ঘনঘন এক মহিলার নামে টাকা ট্রান্সফারের তথ্য দেখে সন্দেহ হয় অডিট টিমের।এরপরই জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ডিরেক্টর ডা. পিঙ্কি জোরওয়াল ঘটনাস্থলে পৌঁছন এবং তদন্ত শুরু করেন। তাদের রিপোর্টে উঠে আসে, এক মহিলার নাম করে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিছু অসাধু কর্মী টাকা তুলতেন। এবং পরে তা ভাগ করে নিতেন। শুধুমাত্র একটি নাম ও একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে এই প্রতারণা হয়েছে বলেই এ বিষয়টা সামনে এসেছে বলে অনুমান।ইতিমধ্যে ৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী-সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৩ জনকে।
অন্যদিকে আগ্রার মুখ্য চিকিৎসা আধিকারিক (সিএমও) ডা. অরুণ শ্রীবাস্তব কৃষ্ণার বয়ান রেকর্ড করেন। তাতে কৃষ্ণা জানান, তিনি আলিগড় জেলার নাগলা কদম গ্রামের বাসিন্দা হলেও বর্তমানে স্বামীর সঙ্গে গুড়গাঁওয়ে থাকেন। তাঁর দুই ছেলে, একজন ২০১৪ সালে, অন্যজন ২০১৭ সালে জন্ম নেয়। দ্বিতীয় সন্তানের পরেই তিনি স্থায়ী বন্ধ্যত্বকরণ করান।পুলিশ জানিয়েছে, এক এজেন্ট কৃষ্ণার নামে অ্যাকাউন্ট খোলেন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ায়। কিন্তু তাতে কৃষ্ণার মোবাইল নম্বর যুক্ত করা হয়নি, ফলে টাকা জমা-খরচ সম্পর্কিত কোনও বার্তাও তিনি পাননি।উল্লেখ্য, এই প্রকল্পের আওতায় কোনও মহিলা যদি সরকারি হাসপাতালে সন্তান প্রসব করেন, তাহলে গ্রামীণ এলাকায় ১,৪০০ টাকা এবং শহরাঞ্চলে ১,০০০ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সাহায্য পান। নিচু আয়ের শ্রেণী এবং তফসিলি জাতি-উপজাতিভুক্ত নারীদের জন্য এই বরাদ্দ আরও বেশি হয়।
আরও পড়ুন-ভিনজাতের প্রেমিকের সঙ্গে পালানোর মাশুল! বিহারের মেয়েকে খুন প্রাক্তন সেনাকর্মী বাবার