বিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করছেন আগামী তিন দশকের মধ্যে পৃথিবী থেকে উধাও হয়ে যেতে পারে চকোলেট। কারণ হিসাবে তাঁরা বলছেন, পরিবেশ দূষণ ব্যাপকভাবে ক্ষতি করছে চকোলেট উৎপাদক কোকোয়া গাছের।
কোকোয়া গাছ বেড়ে ওঠে আর্দ্র আবহাওয়ায়। বিষুব অঞ্চলে যেখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় সেই অঞ্চলই কোকোয়া গাছের জন্য আদর্শ স্থান। (আরও পড়ুন: শুধু খেতেই ভালো না, কাজেও ভালো! চকোলেট খেলে কমে যায় ৮টি রোগের আশঙ্কা)
আমেরিকারNational Oceanic and Atmospheric Administration-এর মতে আগামী ৩০ বছরে তাপমাত্রা যদি ২.১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বৃদ্ধি পায়, তবে কোকোয়া গাছের টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব।
সারা পৃথিবীর অধিকাংশ কোকোয়া গাছ পাওয়া যায় আফ্রিকারGhana ওCote D’Ivoire নামক দুইটি দেশে। পরিবেশে দূষণের কারণে ভবিষ্যতে কেবলমাত্র ১০.৫ শতাংশ ব্যবহারযোগ্য কোকোয়া গাছ পাওয়া যাবে। বলছে একটি গবেষণা।
অন্য একটি গবেষণায় বলা হয়েছে ১৯৯০ সাল থেকে চিন, রাশিয়া, ভারত ও ব্রাজিলের মতো দেশগুলি প্রচুর কোকোয়া আমদানি করে। কিন্তু সেই অনুপাতে কোকোয়া গাছ বৃদ্ধি পায়নি। বিজ্ঞানীরা এই বিষয়টিকেও কোকোা গাছ উধাও হয়ে যাওয়ার কারণ হিসাবে দেখছেন।
এই সমস্যার সমাধানের কথা ভেবেছেMarsনামক এক চকোলেট প্রস্তুতকারক সংস্থা। এই সংস্থা আমেরিকারUniversity of California-র সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি করতে চলেছে বিশেষ জেনেটিক প্রযুক্তি নির্ভর কোকোয়া গাছ। এই গাছ অধিক তাপমাত্রা সহ্য করতে পারবে বলে আশাবাদী কোম্পানি কর্তপক্ষ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংকট মেটাতে আমাদের দ্রুত কিছু পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।যেমন
১. কার্বন ডাই অক্সাইডের নিঃসরণ কম করার জন্য আমাদের অপ্রচলিত শক্তির সাহায্য নিতে হবে।
২. যত বেশি সম্ভব বৈদ্যুতিক গাড়া ব্যবহার করতে হবে।
৩. যে সব শিল্প প্রচুর দূষণ সৃষ্টি করে সেইসব শিল্পের উপর বিনিয়োগ কমাতে হবে।
তবে এ সবের মধ্যে চকোলেট হারিয়ে যাওয়ার প্রশ্ন রীতিমতো আশঙ্কিত করে তুলেছে চকোলেট-প্রেমীদের। জেনেটিক প্রযুক্তি নির্ভর কোকোয়া গাছ থেকে যে চকোলেট পাওয়া যাবে, তার স্বাদ যে প্রকৃত চকোলেটের মতোই হবে— এমন কোনও নিশ্চয়তাও নেই। তাই সব মিলিয়ে চকোলেটের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে রীতিমতো সন্দিহান সকলেই।