মাঝখানে পেরিয়ে গিয়েছে ৮১ বছর। কোনও খোঁজখবর মেলেনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনের। যাঁরা সংবাদের অপেক্ষায় বসেছিলেন, তাদের অনেকে হয়তো এই পৃথিবী থেকে অন্য পৃথিবীতে পাড়ি দিয়েছেন অপেক্ষা নিয়েই। তবে দেরি করে হলেও খোঁজ মিলল অবশেষে। ১০০০ জনেরও বেশি অস্ট্রেলিয়ান যাত্রী নিয়ে হারিয়ে গিয়েছিল জাপানের এক বিশেষ জাহাজ মন্টেভিডিয়ো মারু। সেই জাহাজের ধ্বংসাবশেষই অবশেষে খুঁজে বার করা গেল। শনিবার এই জাহাজের অনুসন্ধানের দায়িত্বে থাকা বিশেষ দল এমনটাই জানায় সংবাদমাধ্যকে।
আরও পড়ুন: গোলাপি হাই হিল জুতো পরেই পার্লামেন্টে পুরুষ সাংসদরা! কানাডার কাণ্ড ভাইরাল নেটে
আরও পড়ুন: কী কী অঙ্ক লেখা এই গোলকধাঁধার পিছনে? ৩০ সেকেন্ডে উত্তর খুঁজে পেলে আপনিই সেরা
১৯৪২ সালের পয়লা ১ জুলাই জাপান থেকে যাত্রা করেছিমন্টেভিডিয়ো মারু। যাত্রী ছিল মোট ১০৬০ জন। বেশিরভাগই ছিলেন যুদ্ধবন্দী। তবে যুদ্ধবন্দী ছাড়াও ওই জাহাজে উপস্থিত ছিল অন্যান্য দেশের বেশ কয়েকজন সাধারণ যাত্রীরাও। ঘটনাচক্রে সেখান দিয়ে পথ অতিক্রম করছিল একটি আমেরিকান সাবমেরিন। সেই সাবমেরিনই ভুলবশত আক্রমণ করে বসে ওই জাহজকে। এর ফলে ডুবে যায় সেই জাপানি জাহাজ। মৃত্যু হয় উপস্থিত সব যাত্রীর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ মিটে গেলেও খোঁজ মেলেনি সেই জাহাজের। এর মধ্যেই কেটে গিয়েছে ৮১ বছর। অবশেষে একটি বিশেষ অনুসন্ধানকারী দলের প্রচেষ্টায় উদ্ধার হল সেই জাহাজ।

স্মৃতির পাতা বেয়ে
(AFP)
উদ্ধার হওয়া জাহাজের টুকরো AFP PHOTO / SILENTWORLD FOUNDATION
(AFP)সাইলেন্টওয়ার্ল্ডের ডাইরেক্টর জন মুলেন সংবাদমাধ্যমকে জানান, মন্টেভিডিয়ো মারুর আবিষ্কারের ফলে একটি দীর্ঘ অধ্যায়ের অবসান হল। যেসব পরিবার আজও তাদের প্রিয়জনদের খবরের অপেক্ষায় বসেছিলেন, তাঁরা এবারে শান্তি পাবেন।

সমুদ্রের নীচ থেকে ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করার জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র SILENTWORLD FOUNDATION
(AFP)প্রসঙ্গত সাইলেন্টওয়ার্ল্ডই এই জাহাজ খুঁজে বার করার পিছনে মূল কান্ডারী। পাঁচ বছর ধরে এই সংস্থা জাহাজ খুঁজে বার করার বিশেষ মিশনের জন্য নানা পরিকল্পনা করে। সঙ্গ দিয়েছিল গভীর সমুদ্রে নজরদারি চালানোর বিশেষ ডাচ সংস্থা ফাগ্রো ও অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বিভাগ। অনুসন্ধান শুরুর ১২ দিনের মাথায় খোঁজ মেলে ওই জাহাজের। দেখা যায়, সমুদ্রের ৪ কিমি নিচে ডুবে রয়েছে সেই জাহাজ। যা আদতে টাইটানিকের থেকেও বেশি গভীরে। তবে দীর্ঘ পাঁচ বছরের চেষ্টাতেই তার উদ্ধার সম্ভব হল।