Kali Puja 2024 Story Of Ram Prasad: ঈশ্বরের মতো নিরাকার না হলেও যারা ছিলেন মানব রুপী ঈশ্বর, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সাধক রামপ্রসাদ। শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ দেব বা বামা ক্ষ্যাপার মতোই তিনি ছিলেন মা কালীর অন্ধ ভক্ত। ভক্ত বললে ভুল বলা হবে, কালী মায়ের স্নেহের ছেলে ছিলেন তিনি। রামপ্রসাদ সম্পর্কে অনেকে অনেক কথা জানলেও এমন কিছু ঘটনা রয়েছে যা এখনও সকলের কাছে রয়েছে অজানা।
রামপ্রসাদের শ্যামা সঙ্গীতে আজও মন বিভোর হয়ে যায়। হাজার হাজার বছর পরেও যে শ্যামাসঙ্গীত শুনে মানুষের চোখে জল আসে, এই গান প্রথম লেখা হতো হিসেবের খাতায়। লিখতেন রামপ্রসাদ নিজেই। রামপ্রসাদের গান লেখার কথা শুনে মনে রেগে খাতা কেড়ে নেন, কিন্তু গানের ভাব ও ভাষায় মুগ্ধ হয়ে যান তিনি। সেই গান পরে গিয়ে পৌঁছে নবদ্বীপের মহারাজা, কৃষ্ণচন্দ্রের কাছে। গঙ্গা বক্ষে রামপ্রসাদের গান শুনে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তিনি। রামপ্রসাদকে দিতে চেয়েছিলেন ১০০ বিঘা জমি কিন্তু তার বদলে রামপ্রসাদের কাছ থেকে তিনি পেয়েছিলেন বিদ্যাসুন্দর কাব্য।
(আরও পড়ুন: ধনতেরাসের সঙ্গে যোগ নেই ধনসম্পদের! তাহলে কেন এই নামকরণ)
রামপ্রসাদকে নিয়ে তিনটি অজানা কাহিনি
প্রথম কাহিনি: শোনা যায়, রামপ্রসাদ একদিন বাড়ির সামনে বেড়া বাঁধছিলেন, সাহায্য করছিল তাঁর ছোট্ট মেয়ে। এক সময় মেয়েটি সেখান থেকে উঠে চলে যায় বাবার অগোচরে। রামপ্রসাদ একমনে বেড়া বেঁধে যান এবং তাঁর হাতে কেউ যেন দড়ি ধরিয়ে দেয়। কিছুটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর যখন মেয়ে এসে বলে, বাবা তোমাকে কে দড়ি ধরিয়ে দিচ্ছিল? তখন রামপ্রসাদ বুঝতে পারেন এতক্ষণ তাঁর মেয়ে নয়, কাজে সাহায্য করছিলেন স্বয়ং শ্যামা মা।
দ্বিতীয় কাহিনি: একদিন স্নানে যাচ্ছিলেন রামপ্রসাদ। হঠাৎ করেই রামপ্রসাদের গান শুনতে আসে এক অল্প বয়সী সুন্দরী মেয়ে। রামপ্রসাদও মনের আনন্দে তাঁকে অপেক্ষা করতে বলেন। কিন্তু স্নান করে এসে তিনি দেখেন সেই রমণী নেই, বদলে চন্ডী মন্ডপের দেওয়ালে লেখা - 'আমি অন্নপূর্ণা, তোমার গান শুনতে এসেছিলাম।' এই ঘটনার পর এক স্বপ্নাদেশ পেয়ে ত্রিবেনীর কাছে মহামায়াকে গান শুনিয়ে আসেন রামপ্রসাদ।
(আরও পড়ুন: কেন ধনতেরাসে পালিত হয় আয়ুর্বেদ দিবস! জানুন কারণ এবং গুরুত্ব)
তৃতীয় কাহিনী: এই ঘটনাটি রামপ্রসাদের জীবনের শেষ ঘটনা। প্রতি বছরের মতো সেবারও কালীপুজোয় মত্ত ছিলেন রামপ্রসাদ। মূর্তি বিসর্জন করার সময় আচমকাই গান করতে শুরু করেন রামপ্রসাদ। মায়ের গলা জড়িয়ে পরপর চারটি গান শোনান প্রসাদ। শেষ গানটি গাওয়ার সময় আচমকাই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে মহামায়ার সঙ্গেই ইহলোক ছেড়ে পরলোক গমন করেন তিনি।