স্বাস্থ্য ও ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞদের মতে, বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) প্রজনন স্বাস্থ্য এবং গর্ভধারণের ক্ষমতার উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। এটি মহিলাদের ফার্টিলিটির ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। BMI একজন ব্যক্তির উচ্চতা এবং ওজনের জন্য দায়ী।
এইচটি লাইফস্টাইলের সঙ্গে একটি সাক্ষাত্কারে, পুনের নোভা আইভিএফ-এর ফার্টিলিটি কনসালট্যান্ট ডাঃ রূপালী তাম্বে শেয়ার করে বলেছেন, ‘যদিও একটি স্বাস্থ্যকর প্রজনন ব্যবস্থা প্রায়শই স্বাভাবিক পরিসরের BMI-এর (১৮.৫-২৪.৯) সঙ্গে যুক্ত থাকে, তবে যেসব মহিলার ওজন কম বা বেশি, তাঁদের গর্ভবতী হতে অসুবিধা হতে পারে। যে মহিলারা গর্ভবতী হতে চান, তাঁদের জন্য BMI কীভাবে প্রজনন ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ স্বাস্থ্যকর BMI গর্ভধারণের সম্ভাবনাকে উন্নত করতে পারে।’
আরও পড়ুন: (‘পুরুষতান্ত্রিক ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে টিকিয়ে রাখা কঠিন'…বলিউড নিয়ে সোজাসাপটা বেবো)
আরও পড়ুন: (সামান্থার প্রশংসায় পঞ্চমুখ আলিয়া, গেয়ে শোনালেন ‘ও আন্তাভা’)
ডাঃ রূপালী তাম্বে ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘১৮.৫ এর নিচে BMI কে কম ওজন হিসাবে বিবেচনা করা হয়। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থেকে প্রায়শই এই শ্রেণীর মহিলাদের গর্ভধারণে অসুবিধা সৃষ্টি হয়। ইস্ট্রোজেনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রজনন হরমোন, যা মাসিক চক্র এবং ডিম্বাণু তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়, শরীরের কম ফ্যাট থাকলে তা প্রভাবিত হতে পারে। যখন শরীরে ফ্যাটের মাত্রা খুব কম থাকে, তখন ইস্ট্রোজেন উৎপাদন কমে যায়। তাই ডিম্বস্ফোটন এবং গর্ভাবস্থার সম্ভাবনাও কমে। এর ফলে অনিয়মিত পিরিয়ড বা এমনকি অ্যামেনোরিয়া হতে পারে, অর্থাত্ পিরিয়ড সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’
তিনি বিশদভাবে আরও বলেন, ‘কম ওজনের মহিলারা পর্যাপ্ত পুষ্টি নাও পেতে পারে, যা তাদের ডিম্বাণুর গুণমান কমিয়ে দিতে পারে এবং গর্ভপাতের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে। কম BMI জরায়ুর আস্তরণের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে, যা একটি নিষিক্ত ডিম্বাণুকে জরায়ুতে আটকে থাকতে বাধা দেয়। স্বাভাবিক বিএমআই-এ পৌঁছানোর জন্য ওজন বাড়ানো প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: (ফের কাছাকাছি! ভালোবাসার মানুষকে চিয়ার করতে এলেন খুশি, নেটিজেনরা বলছে ‘সো সুইট’)
অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূল মহিলা
২৫এর বেশি BMI-কে অতিরিক্ত ওজন হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং ৩০-এর বেশি BMI-কে স্থূলতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ডাঃ রূপালী তাম্বের মতে, শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট ডিম্বাণু এবং পিরিয়ডকে প্রভাবিত করতে পারে। অতিরিক্ত ওজন এবং মোটা মহিলাদের মধ্যে বন্ধ্যত্বের সংখ্যা বেশি দেখা যায়। একে বলা হয় অ্যানোভুলেশন। পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (PCOS), একটি হরমোনজনিত অবস্থা যা ডিমের গুণমানকে হ্রাস করে এবং অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণ হয়।
একটি স্বাস্থ্যকর BMI এর গুরুত্ব
ডাঃ রূপালী তাম্বে বলেছেন, ডিমের দুর্বল গুণমান, উদ্দীপনার প্রতি ডিম্বাশয়ের প্রতিক্রিয়া হ্রাস এবং ইমপ্লান্টেশনের সমস্যাগুলির কারণে, যেসব মহিলার ওজন কম বা বেশি তারা ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনে কম সাফল্যের হার অনুভব করতে পারে। একটি স্বাস্থ্যকর বডি মাস ইনডেক্স (BMI) বজায় রাখা ডিমের গুণমান, হরমোনের ভারসাম্য এবং জরায়ু গ্রহণযোগ্যতাকে অনুকূল করে সফল গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়ায়।
তিনি আরও বলেন,' মহিলাদের উর্বরতা স্বাস্থ্যের একটি মূল উপাদান হল তাদের BMI। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, অনিয়মিত ডিম্বস্ফোটন এবং অন্যান্য প্রজনন সমস্যাগুলি অতিরিক্ত ওজন এবং কম ওজনের মহিলাদের জন্য গর্ভধারণকে কঠিন করে তোলে৷ গর্ভাবস্থা স্বাভাবিকভাবেই হোক বা উর্বরতা চিকিত্সার মাধ্যমে হোক, সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি স্বাস্থ্যকর BMI বজায় রাখা প্রজনন ফলাফলকে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করতে পারে এবং গর্ভধারণের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। যে মহিলারা গর্ভবতী হতে চান তাদের উচিত স্বাস্থ্যকর পরিসরের মধ্যে একটি BMI লক্ষ্য করা।'