ডায়াবিটিস বলতেই প্রথমে কার্বোহাইড্রেটের কথা মাথায় আসে। অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। তার থেকেই মারাত্মক আকার নেয় ডায়াবিটিস। তবে এর পাশাপাশি ফ্যাটও সমানভাবে ক্ষতিকর। কিছু নির্দিষ্ট ফ্য়াট রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। একইসঙ্গে, রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিশেষজ্ঞের কথায়, ডায়াবিটিস হলে কী ধরনের ফ্যাট খাওয়া যেতে পারে তা জানা জরুরি।
ফ্যাটের খুঁটিনাটি: কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট মূলত এই তিনটি পুষ্টি উপাদান শরীরের প্রয়োজন। এগুলোর মধ্যে ফ্যাট শরীরে শক্তি হিসেবে সঞ্চিত থাকে ও কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আমরা যে ধরনের খাবার খাই তার মধ্যে চার প্রকার ফ্যাট থাকে। স্যাচুরেটেড, ট্রান্স, পলিআনস্যাচুরেটেড ও মনোআনস্যাচুরেটেড। এই চার রকম ফ্যাটের মধ্যে প্রথম দুটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর।পরের দুটো ফ্যাট শুধু ভালো নয়, রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করে। কিছু ফ্যাট আবার ডায়াবিটিস প্রতিরোধেও প্রধান ভূমিকা নেয়।
ক্ষতিকর ফ্যাট: স্যাচুরেটেড ও ট্রান্স ফ্যাট শরীরের জন্য একেবারেই খারাপ। এই দুটি রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে নানারকম হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়তে থাকে। এছাড়াও, এই ধরনের ফ্যাটে ক্যালোরির পরিমাণও বেশি থাকে। এক গ্রাম কার্বোহাইড্রেটে চার ক্যালোরি থাকে, সেখানে এক গ্রাম ফ্যাটে ক্যালোরির পরিমাণ নয়। দ্বিগুণেরও বেশি ক্যালোরি থাকার কারণে ডায়াবিটিসের আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়।সাধারণত, রাস্তার তেলেভাজা ও মশলাদার খাবারে এই ধরনের ফ্যাটের পরিমাণ বেশি।
বারবার ব্যবহারের ফলে তেলের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। বরং তেলে কিছু ক্ষতিকর রাসায়নিকের পরিমাণ বেড়ে যায়। এইগুলোই খাবার মারফত শরীরে জমতে থাকে। যা পরে ডায়াবিটিস ও অন্যান্য রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দেখা গিয়েছে, স্যাচুরেটেড ও ট্রান্স ফ্যাটের কারণে ডায়াবিটিসের আশঙ্কা সাত শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়।
ভালো ফ্যাট: মনোআনস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরের জন্য একেবারেই ক্ষতিকর নয়। বরং, এই দুটি রক্তে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। পাশাপাশি হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। এই ধরনের ফ্যাটে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বেশি। যা স্ট্রেস কমানোর পাশাপাশি ইনসুলিনের কার্যক্ষমতাও বাড়াতে সাহায্য করে। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। অনেকে ভাবেন, ফ্যাট থেকে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে ভালো ফ্যাট খেলে ওজন বাড়ার কোনও আশঙ্কা থাকে না। বরং, বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই ধরনের ফ্যাট অতিরিক্ত ওজনের আশঙ্কা কমায়।