আপনি কি জানেন যে একটি ছোট ফল আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনতে পারে? শুকনো এপ্রিকট এমনই একটি ফল, যা দেখতে সহজ কিন্তু এর উপকারিতা অসাধারণ। এই ফলটিকে অনেকে 'খুবানি' নামেও ডাকেন। প্রতিদিন আপনার খাদ্যতালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত করে, আপনি আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারেন। এই ফলটি শুকনো করে খেতে পারলে উপকার সবচেয়ে বেশি। কেবল স্বাদেই অসাধারণ নয়, এটি আপনার শক্তি বৃদ্ধি এবং শরীরকে সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে। তাহলে আসুন জেনে নিই শুকনো এপ্রিকট খাওয়ার উপকারিতা কী কী?
১. হাড় শক্তিশালী করে
শুকনো এপ্রিকটে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস থাকে, যা হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন শুকনো এপ্রিকট খাওয়া হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে।
২. ত্বক উজ্জ্বল করে
শুকনো এপ্রিকটে ভিটামিন এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বকের উন্নতিতে সাহায্য করে। এটি নিয়মিত খেলে মুখে নতুন উজ্জ্বলতা আসে এবং বলিরেখাও কমে।
৩. হৃদরোগের জন্য উপকারি
শুকনো এপ্রিকটে পটাশিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এর সেবনে হৃদরোগ সংক্রান্ত সমস্যার ঝুঁকি কমে।
৪. হজমশক্তি উন্নত করে
শুকনো এপ্রিকটে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজমশক্তি উন্নত করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং পাচনতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। এটি পাচনতন্ত্রের জন্য একটি চমৎকার প্রাকৃতিক প্রতিকার।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে
এপ্রিকটে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এটি সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়ায় এবং ঠান্ডা লাগা ও কাশি থেকে রক্ষা করে। এটি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও উন্নত করে।
৬. ওজন কমাতে সাহায্য করে
শুকনো এপ্রিকট ফাইবার সমৃদ্ধ এবং ক্যালোরি কম, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখে, যা বেশি খাওয়ার ইচ্ছা কমায়। নিয়মিত এটি খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
৭. চোখের জন্য উপকারি
রাতভর জলে ভিজিয়ে রাখা শুকনো এপ্রিকট খেলে দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়। আসলে, শুকনো এপ্রিকট ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ। এর ব্যবহারে চোখের অনেক সমস্যা নিরাময় করা যায়। প্রতিদিন ভেজানো খুবানি খেলে শুষ্ক চোখের সিন্ড্রোম এবং রাতকানা সমস্যা প্রতিরোধ করা যায়।
৮. পাচনতন্ত্র সুস্থ রাখে
খুবানি প্রচুর পরিমাণে ফাইবারযুক্ত, যা হজমশক্তি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এর ব্যবহার খাবার হজমে সাহায্য করে, যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের এপ্রিকট খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পেট সুস্থ রাখতে প্রতিদিন খুবানি খাওয়া যেতে পারে।
৯. ডায়াবিটিসেও উপকারি
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও এপ্রিকট খুবই উপকারি। এটি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত এপ্রিকট খাওয়া উচিত।
এপ্রিকট কীভাবে খাবেন
এর জন্য, রাতে এক গ্লাস জলে ৩-৪টি শুকনো এপ্রিকট ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ভেজানো এপ্রিকট খান। আপনি এর জলও পান করতে পারো। তবে মনে রাখবেন যে এটি অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। অতএব, এটি সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করুন।
ডিসক্লেইমার: সাধারণ তথ্যের ভিত্তিতে এই খবর। আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করার পরেই আপনার খাদ্যতালিকায় এই ফল অন্তর্ভুক্ত করুন।