কথা ছিল রাত হবে আনন্দের, উচ্ছাসের। কিন্তু সেই রাতই আকাড় নিল মর্মান্তিক ঘটনায়। বুধবার সকাল থেকেই আরসিবির সমর্থকরা আসতে আসতে ভিড় জমাতে শুরু করেছিলেন প্রিয় দলে ১৮তম সংস্করণে এসে প্রথম আইপিএল ট্রফি জয়ের। বিরাট কোহলির চোখের জল, আবেগের সঙ্গেই যে আরসিবিভক্তদের আনন্দ, আবেগও মিশে ছিল। কিন্তু সেই ঘটনা যে এমন আকাড় নেবে, সেটা জীবনেও ভাবতে পারেননি সেদিন যারা দলের আইপিএল জয়ের উৎসবে সামিল হবেন ভেবে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। ১১জনের রাস্তায় প্রাণ যায় অসহায়ভাবেই। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে লক্ষ লক্ষ দর্শকের ভিড়ে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে, আর তাতেই মৃত্যু হয় ১১জনের, আহতের সংখ্যা বহু। যদিও মৃতদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, কিন্তু কোনও টাকা দিয়েই ১১টা তরতাজা প্রাণের ক্ষতি মেটানো যে সম্ভব নয়, সেকথা সকলেরই জানা।
এই আবহেই এবার বিসিসিআইয়ের সচিব জানিয়ে দিলেন, আগামী দিনে এই ধরণের অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কিছু বাধ্য বাধকতা লাগু করা হবে। বোর্ড সচিব দেবজিত সাইকিয়া ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘একটা পর্যায়ের পর বিসিসিআইকে এই বিষয়গুলোয় হস্তক্ষেপ করতেই হবে, এমন দৃশ্য দেখার পর আমরা নীরব দর্শক হয়ে থাকতে পারি না ’। দেবজিত সাইকিয়া স্পষ্টভাবেই জানাচ্ছেন, ‘এটা পুরোটাই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ব্যক্তিগত বিষয় ছি, কিন্তু ভারতে ক্রিকেটের বিষয়ের জন্য বিসিসিআইয়ের একটা দায়িত্ব রয়েছে। তাই আগামী দিনে যাতে এই ধরণের ঘটনা আর না ঘটে, সেই জন্য আমরা পদক্ষেপ নেব নিশ্চিতভাবেই ’।
পদপিষ্টে মৃত্যুর ঘটনার পর ইতিমধ্যেই কর্ণাটক সরকার তদন্ত শুরু করে বড় মাথাদেরও ধরা শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই আরসিবির বেশ কয়েকজন কর্তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, গ্রেফতারও করা হয়েছে। যদিও পুলিশ যদি আগাম অনুমান করে থাকতে পারত যে এমন ঘটনা ঘটতে পারে, তাহলে তো সেখানে কোনও অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়াই উচিত ছিল না। এছাড়াও প্রয়োজনে পুলিশ বা সরকার চাইলে, চিন্নাস্বামী এলাকায় যাতে এই ধরণের ঘটনা না ঘটে তাঁর জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে বা আদালতের থেকে নির্দেশ এনেও আরসিবির বিজয় অনুষ্ঠান বাতিল করতে পারত। কারণ ঘটনা ঘটে যাওয়ার আগেই যদি কর্ণাটক সরকার বা পুলিশ আগাম পরিস্থিতি অনুমান করতে পারত, তাই ১১টা তরতাজা প্রাণ বেঁচে যেতে পারত।