শিবাজী সাতম তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ার জুড়ে বিভিন্ন সিনেমা এবং শো’তে কাজ করেছেন। তবে বহুদিন ধরে চলেছিল তাঁর পুলিশি নাটক সিআইডি। এটাই অভিনেতার জনপ্রিয়তাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল। শিবাজী বিপি সিং- তৈরি চরিত্রে শোতে এসিপি প্রদ্যুমানের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। বুধবার তাঁর জন্মদিন ছিল। এদিন স্মৃতির সরণী বয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে আড্ডায় ধরা দেন অভিনেতা।
অভিনেতা ফাঁস করেন, ‘কুছ তো গড়বড় হ্যায় দয়া’ ধারাবাহিকের এই জনপ্রিয় সংলাপ প্রথমে পরিকল্পনা করা ছিল না। শো-এর নির্মাতার সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে আচমকা এই লাইন তাঁদের মাথায় আসে।
তিনি বলেন, ‘একদিন আমি তাঁর সঙ্গে আলোচনা করছিলাম, কোনো দৃশ্য নিয়ে আলোচনা চলছিল আমাদের মধ্যে। উনি আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে? উনি বললেন, ‘যেভাবে তুমি কথা বলছ, যেভাবে ব্যাখ্যা করছ, এটাই আমি চাই। করবে তুমি? এটাকে তুমি এসিপি’র চরিত্রে নিয়ে আসতে পারবে?’ এরপরই ধীরে ধীর পর্দার এসিপিকে আমরা দেখতে পাই। বাকিটা ইতিহাস।
শো’টি শেষ হওয়ার কয়েক বছর পরেও সংলাপটি দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে। এটি নিয়ে পরে প্রচুর মিমসও বানানো হয়েছে। শিবাজি এগুলোকে প্রশংসা মনে করেন। তিনি এও প্রকাশ করেছিলেন যে তাঁর প্রিয় মিমসগুলির মধ্যে একটি হল এসিপি প্রদ্যুমান কে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি-তে পরিণত।
তিনি বলেন, ‘এটি আমি সর্বাধিক সৃজনশীল, আশ্চর্যজনক জিনিসটি পেয়েছিলাম (হাসি)। ভাবুন, এসিপির গোঁফ এবং চোখের সঙ্গে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি। কীভাবে কেউ এমন কথা ভাবতেও পারে, এটি এত আশ্চর্য! এর চেয়ে সুন্দর আর প্রশংসা আর কী হতে পারে’।
শুধু দর্শকই নয়, সেলিব্রিটিরাও এই শোয়ের ভক্ত। শো’টির অন্যতম জনপ্রিয় ভক্ত হলেন কিংবদন্তি গায়িকা লতা মঙ্গেশকর। শিবাজী প্রকাশ করেছেন, গায়িকা তাঁর বাড়িতে অভিনেতাকে আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন। শিবাজীর কথায়, ‘গায়িকার জন্য সিআইডি তাঁর পরিবার। তিনি আমাদের কিছু দুর্দান্ত উপহার দিয়েছেন। যেমন একটি হাত ঘড়ি। আমি এটি ব্যবহার করি এবং গর্বের সাথে বলি, 'লতা দিদি এটি আমাকে দিয়েছিল।' তারা আমাদের ভালবাসে’।

সোশ্যাল মিডিয়া শো-এর সংলাপ এবং চরিত্রগুলির জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে তোলার ক্ষেত্রে-এর ত্রুটিগুলিও আলোচনায় এসেছে। অনেক দর্শক অযৌক্তিক দৃশ্য নিয়েও মজা করেছে। এই অভিযোগগুলিকে সম্বোধন করে শিবাজি বলেছেন, ‘সিআইডি কোনো রিয়্যালিটি শো বা ডক্যুড্রামা ছিল না। এটা পুরোটাই পরিকল্পনা ছিল। এক ঘণ্টা বা ৪৫ মিনিটের মধ্যে পুরো বিষয়টা শেষ করতে হবে। সুতরাং কোথাও আপনাকে তাড়াতাড়ি শেষ করতে হয়েছিল। একটি মামলা সমাধান হতে কয়েক মাস সময় লাগবে। কিছু নির্দিষ্ট (কেস) রয়েছে যেখানে শেষ করতে আরও দুটি পর্বের প্রয়োজন হবে। আপনি একটি গল্পের প্রতিটি অনুচ্ছেদে একই অঙ্কে শেষ করতে পারবেন না। সুতরাং সেই জিনিসগুলি সবসময় থাকবে। সবসময় এমন কিছু থাকে যা অযৌক্তিক হবে তবে জীবন কখনও কখনও অযৌক্তিকও হয়’।
যদিও শো শেষ হয়েছে দু’বছর পেরিয়ে গেছে। তিনি প্রকাশ করেছিলেন, আলোচনা প্রায় শেষ হয়ে গেছে। তবে মহামারীটি অনেক কিছুই ধ্বংস করেছে।