নেদারল্যান্ডসে ডাক্তার ইকার সঙ্গে দীর্ঘ প্রেম সম্পর্কে ছিলেন অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। ১১ বছরের সম্পর্কের মাঝে, বেশ কিছুটা সময় লিভ ইনও করেন। তবে করোনা লকডাউনের পরবর্তী সময়ে ভাঙে সেই প্রেম, এরপরই সেই ক্ষতে ভালোবাসার মলম লাগান পিয়া। পরমব্রত যেমন অতীত ভুলে পিয়ার সঙ্গে সংসার বেঁধেছেন, তেমনই জীবনে অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছেন ইকাও। একটি পুত্র সন্তানও হয়েছে তাঁর। পরমব্রত নিজেই জানালেন সে কথা।
সম্প্রতি স্ট্রেট আপ উইথ শ্রী পডকাস্টে চোখের শল্য চিকিৎসক, প্রাক্তন প্রেমিকা ইকাকে নিয়ে কথা প্রসঙ্গে পরমব্রত জানালেন, ‘আমরা একসঙ্গে ছিলাম প্রায় ১১ বছর। ব্যাপারটা অনেকটা বৈবাহিক সম্পর্কের মতোই ছিল। শুধু খাতায় কলমে বিয়েটা করিনি বলা যেতে পারে। আমরা যখন সম্পর্ক শুরু করি, জানতাম এটা লং ডিসট্যান্স সম্পর্ক হতে চলেছে। প্রথম ৪-৫টা বছর এটা বুঝতেই কেটে গিয়েছিল আমরা একে-অপরের জন্য কমপ্যাটিবল কি না। সেটা যখন বুঝতে পারলাম, ইকা এখনে (কলকাতায়) আসে।’
তবে এখানে আসায় প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল ইকার পেশাদার জীবন। যদিও ভালোবাসার খাতিরে সে চেষ্টাও করেছিলেন পরম-বান্ধবী। অভিনেতা জানালেন, ‘দুটো লেভেলে আমাদের আসলে কমপ্যাটিবিলিটি ম্যাচ করতে হয়েছিল। এক তো আমরা নিজেরা মানিয়ে নিতে পারছি কি না, আর আরেকটা হল ইকা এখানে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে কি না! আমার পক্ষে তো ওর ওখানে যাওয়া সম্ভব ছিল না, কারণ আমার যে কাজ, সেটা ভীষণ কলচার স্পেসিফিক। ও যেখানকার লোক, সেখানে অর্থাৎ নেদারল্যান্ডসে কোন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি নেই। ইউকে, আমেরিকা হলে তাও হয়তো সুযোগ পেতাম কিছু করার। ইকা তাই এখানে চলে এসেছিল। ও অনেক চেষ্টা করেছিল এখানের সঙ্গে মানিয়ে নিতে। কিন্তু সেটা হল না। আসলে ও যেই কাজটা করে, আর সেটা এত ভালো করে, এখানে থাকলে সেটার সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করতে হত।’
‘আমাদের এখানে কোনো বিদেশি ডাক্তারের কাজ করার ব্যাপারটা আসলে এত জটিল। আমাদের গোটা দেশেই। যার ওখানে দারুণ কেরিয়ার, এখানে তাঁকে একটা বেসিক কাজ পেতে এত জটিলতার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছিল। ও চেষ্টাও করেছিল, যদি কাজটা না করে থাকতে পারে, যেটুকু কাজ পাচ্ছে সেটুকু করে থাকতে পারে। কিন্তু ওভাবে তো হয় না!’, আরও জানান পরমব্রত।
এরপর করোনা লকডাউন আসলে দূরত্ব বাড়ায় ইকা ও পরমব্রতর। কোভিড লকডাউনের মাসখানেক আগেই ইকা আসলে নেদারল্যান্ড গেছিলেন বিশেষ কিছু কাজে। জলদি ফিরেও আসবেন ঠিক ছিল। তবে আটকে পড়েন সেখানেই। কোভিড মিটলে ফিরেছিলেন কলকাতায়। তবে ততদিনে অনেকটা দূরত্ব এসেছে।
‘কোভিড মিটলে ও এসে জানায়, এটা হচ্ছে না (কলকাতায় সেটল হওয়া)। ততদিনে আমিও বুঝতে আরম্ভ করেছিলাম যে এভাবে হবে না। আমিও কখনো চাইনি, যে মানুষ যেটা করতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে, সেটাকে যখন সে পেশা হিসেবে পেয়েছে, যা পৃথিবীর অধিকাংশই পায় না, সেটার থেকে সেই মানুষটাকে দূরে রাখতে। কঠিন ছিল অবশ্যই সেই সময়টা। কিন্তু মেনে নিতেই হয়েছিল।’,জানান পরমব্রত।
তবে বিচ্ছেদ হলেও, দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব রয়ে গিয়েছে। যোগাযোগ আছে পরমব্রত আর ইকার। কথা হয়। অভিনেতা-পরিচালক জানালেন, কদিন আগে মা-ও হয়েছেন ইকা। একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এমনকী, পরমব্রত আর পিয়ার সন্তান আসর খবরেও তিনি ভীষণ খুশি।