আরজি কর কাণ্ডের পর প্রশ্নের মুখে রাজ্যের নারী-সুরক্ষা। আরজি করের চিকিৎসক তরুণীর মৃত্যুর ২৪ দিনের মাথায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন সন্দীপ ঘোষ। তবুও বিদ্রোহের আঁচ কমেনি। আর জি কর নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। প্রতিবাদীদের এক সুরে বেঁধেছে অরিজিৎ সিং-এর ‘আর কবে’। সেই গান নিয়েই দু-দিন আগে অরিজিৎ সিং-কে কটাক্ষ করেছিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
এবার একধাপ এগিয়ে গেলেন কুণাল। তৃণমূল নেতা এমন দৃষ্টতা দেখাতে পারেন তা আশা করেননি অনেকেই। অরিজিৎ-এর ‘আর কবে’ গান এবার কুণালের কণ্ঠে। শুরুতেই কুণাল বলেন, ‘আমি গায়ক নই। লেখালেখি করি। কিছু গানের কথা লিখেছিলাম। দু’একজন গেয়েছিলেন। চলতি পরিস্থিতিতে একটা চেষ্টা করলাম। পেশাদার গায়কদের মতো গুণগত মান বিচার করতে যাবেন না, আমি গায়ক নই।’
কুণাল ঘোষ ‘বেসুরো গলায়’ গাইলেন, ‘আর কবে আর কবে, চোখ খুলে গান কবে? আর কবে রং না বেছে, দল না বেছে গান হবে…. আর কবে আর কবে আর কবে?? হিন্দিতেও প্রতিবাদী গান হবে?…’।
কুণাল গানে গানে প্রশ্ন তুললেন, ‘আমরা-ওরা ভুলে কবে মিছিল হবে’। গানে গানে তৃণমূলের কুণালের বার্তা, ‘এই দাবানল ছড়িয়ে পড়ুক স্লোগান ভরা মিছিল চাই, ঘড়ির সময় যাচ্ছে চলে বিচার দাও সিবিআই'। কাকতালীয়ভাবে কুণালের গান প্রকাশ্যে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার হন সন্দীপ ঘোষ।
‘আর কবে’ গানের মধ্য দিয়ে কুণালের রাজনৈতিক বার্তা দিয়ে সিবিআই-কে কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা করেছেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। গত ৩০শে অগস্ট অরিজিৎ সিং-কে খোঁচা দিয়ে কুণাল ঘোষ লিখেছিলেন, 'অরিজিৎ সিং অপূর্ব গায়ক। ছেলেটিও ভালো। তিলোত্তমার ন্যায়বিচার চেয়ে গানটি যথাযথ, সমর্থন করি। কিন্তু সমস্যা হল বিবেক জাগে শুধু বাংলায়। মহারাষ্ট্রের বদলাপুর নিয়ে হিন্দিতে গান হয় না বা সাক্ষী মালিকদের নিয়ে। কারণ ওটা মূল কর্মক্ষেত্র, হিন্দিজগত, কাজ, টাকা, কেরিয়ার, তাই চুপ?'
পরোক্ষে অরিজিৎ-কে সুবিদাবাদী বলে দাগিয়ে দিতে চান কুণাল। এই নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি অরিজিৎ। ব্যক্তিগত এক্স হ্যান্ডেলে শুধু লিখেছিলেন, ‘ঠাকুর ঘরে কে? আমি তো কলা খাইনি’। কুণালের এই বক্তব্যের জেরে অবশ্য পরমব্রত, রুদ্রনীলরা কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। সবার সাফ কথা, অরিজিৎ-এর মতো বড় মাপের শিল্পীর সমালোচনা কোনও ব্যক্তির মুখে মানায় না।
কুণালের গান শুনে নেটিজেনরা বিদ্রুপ করতে ছাড়েননি। একজন লেখেন, ‘আর কবে আপনার জেল হবে জানতে চাই’। অপর একজন লেখেন, ‘চোরের মায়ের বড় গলা’। আরেক জনৈক লেখেন-'তোমার কি কোনো লাজ লজ্জা নেই । কুণাল ঘোষ।চটি চাটতে চাটতে বিবেক বুদ্ধি সবই বিসর্জন দিয়ে দিয়েছো'।