মাত্র ৫২ বছর বয়সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন বলিউডের অন্যতম বিখ্যাত গায়ক জুবিন গর্গ। কাজের সূত্রে সিঙ্গাপুরে ছিলেন জুবিন। সেখানেই স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে আচমকা গুরুতর আঘাত লাগে তাঁর। তড়িঘড়ি সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয় না। সিঙ্গাপুরের হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গায়ক। তাঁর এই অকাল মৃত্যু অসম-সহ গোটা দেশেই শোকের ছায়া। তাঁর ভক্ত থেকে সহশিল্পীরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন নানা পোস্ট শেয়ার করে নিয়েছেন। বাংলার মেগাস্টার দেবের জন্য একাধিক গান গেয়েছিলেন জুবিন। তিনিও গায়ককে নিয়ে পোস্ট করেছেন।
আরও পড়ুন: কাঞ্চনকে অশ্লীল ভাষায় কটাক্ষ, অভিযোগ দায়ের শ্রীময়ীর, ক্ষমা চাইলেন অভিযুক্ত
১৯৭২ সালের ১৮ নভেম্বর মেঘালয়ের তুরায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন জুবিন বোর ঠাকুর। পরে তিনি তার পরিবারের গোত্র থেকে গর্গ উপাধিটি গ্রহণ করেন। প্রখ্যাত সঙ্গীত সুরকার জুবিন মেহতার নামে তাঁর নামকরণ করা হয়। সাহিত্য ও সঙ্গীতে যথেষ্ঠ চর্চা ছিল জুবিনের পরিবারে। তাঁর বাবা মোহিনী মোহন বোরঠাকুর ছিলেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট। পাশাপাশি তিনি গীতিকার ও কবিও ছিলেন তিনি কপিল ঠাকুর নামে লিখতেন। তাঁর মা হলেন ইলি বোরঠাকুর তিনিও একজন গায়িকা। অভিনেত্রী তথা গায়িকা জংকি বোরঠাকুর তাঁর বোন। তিনি ২০০২ সালে এক পথ দুর্ঘটনায় মারা যান। তাঁর আর এক বোন, ডঃ পাম বোরঠাকুর।
জুবিন গর্গের কেবল একজন আঞ্চলিক গায়ক ছিলেন না। তিনি নানা ভাষায় গান গেয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন সঙ্গীতের শক্তি কী বিশাল। অসমিয়া, বাংলা, হিন্দি শুধু নয়, নেপালি, তামিল, তেলেগু, মালায়ালাম, মারাঠি, ওড়িয়া, ইংরেজি এবং এমনকি কার্বি, মিসিং এবং তিওয়ার মতো উপজাতি ভাষা সহ মোট ৪০ টিরও বেশি ভাষা এবং উপভাষায় গান গেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: প্রয়াত গায়ক জুবিন গর্গ, স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে ঘটে দুর্ঘটনা
তবে কেবল গান নয় নানা বাদ্যযন্ত্রেও তিনি পারদর্শী ছিলেন। তিনি তবলা থেকে শুরু করে গিটার, ড্রাম, হারমোনিয়াম, দোতারা, ঢোল, ম্যান্ডোলিন এবং হারমোনিয়াম-সহ ১২টি বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন। তাঁর বহুমুখী প্রতিভার কারণে তিনি অসমের সবচেয়ে সম্মানিত এবং সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া গায়কদের মধ্যে একজন হয়ে ওঠেন।
বছরের পর বছর ধরে, জুবিন বাংলা, অসমিয়া এবং হিন্দি সিনেমায় অসংখ্য হিট গান উপহার দিয়েছেন, যেমন- 'চিরদিনই তুমি যে আমার'-এর 'পিয়া রে...', দেবের জন্য গেয়েছে 'আয়না মন ভাঙা আয়না...', 'চোখের জলে ভাসিয়ে দিলাম', 'মন মানে না', তাছাড়া তিনি 'গ্যাংস্টার' ছবির জন্য 'ইয়া আলি'। এগুলি ছাড়াও এমন কিছু ক্লাসিক গান তিনি এই প্রজন্মের জন্য উপহার দিয়েছেন তা চিরকাল মনে রেখে দেবেন তাঁর শ্রোতারা। তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ, ২০২৪ সালে মেঘালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টর অফ লিটারেচার (ডি.লিট.) ডিগ্রি প্রদান করে।