'হাম দো হামারে বারাহ' নিয়ে বিতর্কের জট এখনও অব্যাহত। ইতিমধ্যেই এই ছবির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এই ছবির মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের অবমাননা তো করা হয়েছেই, পাশাপাশি, বিবাহিত মুসলিম মহিলাদের অপমানও করা হয়েছে। এদিকে ছবিতে কাজ করা অভিনেত্রী অদিতি ধীমান জানালেন, কীভাবে তাঁকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে ছবিটিকে ঘিরে। বাড়ি থেকে বের হতেই ভয় পাচ্ছেন তিনি।
হামারে বারাহ ছবিতে আন্নু কাপুরের মেয়ে জেরিন চরিত্রে অভিনয় করেছেন অদিতি ধীমান। এটিই তাঁর প্রথম কাজ সিনেমায়। তাঁর চরিত্রটি আনতে চায় বদল। যদিও নিজের মা-বাবাকেও কষ্ট দিতে চায় না। এমন একটি পরিবারে তার জন্ম, যেখানে মহিলাদের অস্তিত্বেরই কোনও মূল্য নেই। সেই পরিস্থিতেও কীভাবে নিজের স্বপ্নপূরণের পথে এগোয় চরিত্রটি তাই সিনেমায় দেখানো হয়েছে। এই গল্পটা শুনে কেঁদে ফেলেছিলেন অদিতি।
আরও পড়ুন: 'গোপন বিষয় ছিল না…' বিয়ে নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন তাপসী
অদিতি জানান, ছবিটি সম্পূর্ণভাবে নারীদের নিয়ে কথা বলে। তারা কী কী ধাপ অতিক্রম করে। জীবনে কত ত্যাগ স্বীকার করে। কীভাবে এখনও তাদের অগ্রাহ্য করা হয়। অভিনেত্রী জানালেন, তিনি যে পরিবেশে মানুষ হয়েছেন, সেখানে ভাবতেও পারেননি এমনটা হয়। তবে পরবর্তীতে বুঝেছেন এখনও সমাজের কিছু স্তরে নারীরা পায় না যোগ্যা সম্মান।
আরও পড়ুন: দাদুর পাশে বসে থাকা খুদে, এখন বি-টাউনের প্রথম সারির নায়িকা! চিনতে পারছেন ইনি কে?
হামারে বরাহ ছবি নিয়ে ওঠা বিতর্ক প্রসঙ্গে অদিতি বলেন, এটি আমার ডেবিউ মুভি এবং প্রথম ছবিতেই এভাবে বিতর্কে আসাটা হৃদয় বিদারক। 24 ঘন্টার মধ্যে ট্রেলারটি সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ট্রেলারে আসলে কী দেখানো হয়েছে, আর মৌলবীরা কী বলেছেন তা সবেরই ভিডিয়ো ক্লিপ আছে ইউটিউবে। মাত্র ৩০ সেকেন্ডের ট্রেলার দেখে মানুষ ধারণা করেছে ছবিটি মুসলিম ধর্মবিরোধী। আদতে তা নয়। আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই, এটা কোনও ধর্মের বিরুদ্ধে তৈরি নয়।
আরও পড়ুন: স্বামীর সঙ্গে হাত ধরাধরি করে, আরেকটু হলেই সমুদ্রে তলিয়ে যাচ্ছিলেন অপরাজিতা!
অদিতি আরও বলেন- এখানে অনেক মানুষ আছে যারা ধর্মকে ব্যবহার করে ভুয়া প্রচার চালায়। ছবিতে এমন কিছু নেই। ছবিতে নারী অধিকারের কথা বলা হয়েছে। সত্যি বলতে আমাদের হিন্দু ধর্মেও এমন অনেক গুরু আছেন, যারা মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন। প্রত্যেক ধর্মেই কেউ না কেউ আছে।
অদিত জানান, শুধু অন্নু কাপুর নয়, তাঁকেও মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। শিরচ্ছেদ করবে, ধর্ষণ করবে এমন বার্তায় ভরা। ‘আমার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলের ম্যাসেজ সেকশন ভরা এশব বার্তায়। যার বেশিরভাগই এসেছে কোনও না কোনও ফেক অ্যাকাউন্ট থেকে। এগুলো খুবই কষ্ট দেয় মনকে’।
‘এগুলো সবই সোশ্যাল মিডিয়ায় এসেছে, তবুও আমার খুব ভয় লাগছে। বাড়ি থেকে বেরোতে পারছি না। যখনই বাড়ির বাইরে পা রাখি মুখে থাকে মাস্ক। ছবিটি করার সময় কখনও ভাবিনি, এরকম বিতর্ক হবে। যখন স্ক্রিপ্ট পড়েছিলাম, চোখে জল চলে এসেছিল। নারী নির্যাতন, নারী স্বাধীনতা নয়ে এই সিনেমা। তখন ভাবিনি এরকম হবে। আসলে সত্যি বরাবরই তিক্ত। আমি যখন ছবিটিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলাম, আমি খুব গর্ব হয়েছিল, ভেবেছিলাম যে একটা ভালো বার্তা পাঠানো হচ্ছে। তবে এটা ঠিক, শিল্পীরা সমালোচনাও পান। শিল্পীরা ভালোবাসাও পান। আমি জানি মানুষ যখন ছবিটি দেখবে তখন তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যাবে।’