বিগত কয়েকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল সম্পর্কে অবনতি হয়েছে চিরদিনই তুমি যে আমারের দুই মুখ্য অভিনেতা জিতু কমল ও দিতিপ্রিয়া রায়ের। এমনিতেই টলিপাড়ায় কোনো খবর চেপে রাখা মুশকিল। ঠিক ফাঁকতাল দিয়ে ছড়িয়েই পড়ে। তা সে জিতু যতই মিষ্টি কথার প্রলেপ লাগান না কেন!
সরাসরি জিতুর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুললেন দিতিপ্রিয়া। দুজনের বয়সের ফারাক ১৫ বছরেরও বেশি। সেখানে জিতু নাকি দিতিপ্রিয়াকে প্রশ্ন করেন ‘ডাক্তার দেখাতে যাবে কেন, প্রেগন্যান্ট?’!
জিতুর নামে কী লিখেছেন দিতিপ্রিয়া?
কদিন আগে শ্যুটিং স্টিল শেয়ার করেছিলেন জিতু। যেখানে তিনি আর দিতিপ্রিয়া ছিলেন। একটু ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছিল, যা শ্যুটের। পরে সেখান থেকে একটি ছবি জিতু মুছে ফেলেন। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান যে, নেগেটিভ কমেন্ট দেখে নাকি দিতিপ্রিয়া কষ্ট পেয়েছেন, তাই তিনি মুছে ফেলেছেন। শোনা গিয়েছিল, সেটে একে-অপরের সঙ্গে আজকাল জিতু-দিতিপ্রিয়া কথা বলেন না। জিতু একাধিক সাক্ষাৎকারে আত্মপক্ষ সমর্থনে মুখ খুললেও, চুপ ছিলেন দিতিপ্রিয়া। তবে এবার তিনি যে অভিযোগ তুললেন তা বিস্ফোরক।
দিতিপ্রিয়া লেখেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে চলতে থাকা আমাকে নিয়ে নানা রকমের স্পেকুলেশন নিয়ে আমি স্বভাবতই চুপ ছিলাম। কারণ আমি বিশ্বাস করি 'Ignorance is bliss'। প্রথমত, একটি ছবি পোস্ট করা নিয়ে জলঘোলা শুরু। প্রোডাকশন টিম সবসময়েই আমাদের কিছু ছবি দিয়ে থাকে দুজনকেই সমাজমাধ্যমে পোস্ট করার জন্য। আমার কো-অ্যাক্টর সেই সব ছবিই পোস্ট করেন। সেই ছবিগুলোর মধ্যে একটি আমার ব্যক্তিগতভাবে একেবারেই ভালো লাগে না। ছবিটা তিনি ডিলিট করেন। তারপর বিভিন্ন ইন্টারভিউতে বারবার বলেছেন, 'আমার পোস্ট করা ছবিতে নাকি অনেক খারাপ ও নোংরা কমেন্ট এসেছে, তাই ও (আমি) খুব কষ্ট পেয়েছে'। কিন্তু আমি তো তার সঙ্গে কথাই বলিনি!’
‘আমি শুধুমাত্র প্রোডাকশনকে জানিয়েছিলাম, কারণ ছবিটা তাদেরই তোলা ছিল আর ছবিটা আমার দৃষ্টিতে ইনঅ্যাপ্রোপ্রিয়েট মনে হয়েছিল। আমি কোনোরকম নোংরা বা অশ্লীল কমেন্টের কথা কখনোই বলিনি এবং কেউ-ই এই আমার ছবিটি ইনঅ্যাপ্রোপ্রিয়েট লাগাকে নিয়ে সেইসময় আমায় কোনও আপত্তি জানায়নি। বরং পরবর্তীকালে বারবার শুনতে হয়েছে, আমি নাকি স্পন্টেনিয়াসলি হ্যান্ডেল করতে পারি না! একটা ছবি তো, তা নিয়ে এত কিছু!’, আরও বলেন দিতিপ্রিয়া।
দিতিপ্রিয়াকে ‘স্নেহ’ করেন জিতু!
জিতু সেটে তাঁর আর দিতিপ্রিয়ার সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করেছেন এক সাক্ষাৎকারে, ‘যেভাবে আর্য অপর্ণাকে স্নেহ করে, তেমনই আমিও দিতিপ্রিয়াকে স্নেহ করি’। সেই প্রসঙ্গ টেনে দিতিপ্রিয়া তাঁর পোস্টে আরও লেখেন, ‘তিনি বলেন, 'আমি দিতিপ্রিয়াকে খুব শ্রদ্ধা করি এবং স্নেহ করি। ওর ডেডিকেশন অন্যরকমের'। আমার কো-অ্যাক্টর আমাকে ভীষণ সম্মান করেন ও স্নেহ করেন—এটাই আমি বিশ্বাস করতে চাই! তবে প্রথম এক মাসের পর থেকেই আমার কো-অ্যাক্টর আমার সঙ্গে কথা বলেন না, শুধু হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ রাখেন। আমি তাকে কারণ জিজ্ঞেস করলে বলেন, 'তোমার মা-কে ভয় পাই, কিন্তু তোমাকে ভীষণ সম্মান করি।' এতটাই স্নেহ করেন ও সম্মান করেন যে একদিন আমাকে জিজ্ঞেস করেন, 'ওই ইভেন্টে যাচ্ছো?' আমি বলি, 'না, আমার ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে।' তিনি জানতে চান, 'কেন, তুমি কি প্রেগন্যান্ট'?’
এখানেই শেষ নয়, দিতিপ্রিয়ার আরও অভিযোগ যে একটি এআই দিয়ে বানানো ভিডিয়ো শেয়ার করে, মাঝরাতে জিতু কমল তাঁকে বিতর্কিত ভাষা ব্যবহার করে ম্যাসেজ করেন। দিতিপ্রিয়ার কথায়, ‘আরেকটি ঘটনা, একটি AI-তে বানানো ছবি যেখানে দেখা যায় আমরা চুম্বন করছি—ওই ছবি আমাকে মাঝরাতে পাঠিয়ে লেখেন, 'বেশ হয়েছে, এটা বয়ফ্রেন্ডকে পাঠাও'। সাথে লেখেন, 'এই রাতেই ব্রেকআপ হয়ে যাবে'। এরপর আরেকদিন আমাকে মেসেজ করে বলেন, 'আমার তোমার সঙ্গে কথা আছে, দেখো যেন তোমার মা না জানতে পারেন । কাকিমাকে আমি ভয় পাই।'’
‘এই সব ঘটনাগুলো প্রাথমিক ভাবে মজার ছলে নিয়ে থাকলেও পরবর্তীকালে আমাকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলেছে। সেটেও কিছু বিষয় নিয়ে আমার অস্বস্তি শুরু হয়েছিল। আমাদের শ্যুটিং ফ্লোরে প্রায় সবাই জানে এই ঘটনা। আমি এতদিন চুপ ছিলাম কারণ এসব নিয়ে গণ্ডগোল করে কাজ নষ্ট করতে আমার পরিবার আমাকে শেখায়নি। আমাদের দারুণ চলতে থাক শো-টা ব্যহত হোক আমি চাইনি।আর চুপ থাকতে পারলাম না। কিছু মানুষ মুখ বুজে সহ্য করে গেলে, কিছু মানুষ সীমা ছাড়িয়ে যায়। আমি কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করিনি, আর করবোও না। প্রতিদিনের এই কাঁটাছেঁড়া এখন খুব একতরফা হয়ে যাচ্ছে।’, আরও লেখেন দিতিপ্রিয়া।
দিতিপ্রিয়া তাঁর এই পোস্টে ডাকঘর ওয়েব সিরিজ মুক্তির আগে যেভাবে তিনি ও সুহোত্র মুখোপাধ্যায় ‘ইটস অফিসিয়াল’ লিখে একটি পোস্ট করেছিলেন, প্রচারের কারণে, তার উল্লেখ করেন। নিঃসন্দেহে সেটা ছিল টিমের যৌথ সিদ্ধান্ত। চিরদিনই তুমি যে আমার-এর অপু লেখেন, ‘রইল বাকি আমার 'স্পন্টেনিয়াস' হওয়া। 'ডাকঘর' নামের একটি সিরিজের প্রমো চলাকালীন আমি ও আমার সেই সিরিজের কো-অ্যাক্টর 'It’s official' লিখে সমাজমাধ্যমে একটি রোমান্টিক ছবি পোস্ট করি—এর একটাই উদ্দেশ্য গুঞ্জন ছড়ানো! কারণ এটা ছিল একটি 'স্পন্টেনিয়াস' প্রোমোশনাল স্ট্র্যাটেজি। মানুষের সুবুদ্ধি হোক, এই কামনাই করি।’