পরিচালক অরুণ রায়কে চোখের জলে বিদায় জানালো টলিউড। বহুদিন ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। বিগত কয়েকদিন তিনি ভর্তি ছিলেন আরজি করে। বুধবার রাতে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হওয়ার কারণে চিকিৎসকরা তাঁকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা কথা জানান। তারপর বৃহস্পতিবার ভোররাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন 'বাঘাযতীন'-এর পরিচালক। শোকস্তদ্ধ দেব লিখলেন, ‘অনেক তাড়াতাড়ি হয়ে গেলো…।’ জানালেন তাঁকে শেষ শ্রদ্ধার্ঘ্যও।
বৃহস্পতিবার দেব তাঁর সমাজমাধ্যমের পাতায় অরুণ রায়ের সঙ্গে সুন্দর মুহূর্তের একটি ছবি শেয়ার করে লেখেন, ‘অনেক তাড়াতাড়ি হয়ে গেলো বন্ধু… ২৪ ক্যারেট গোল্ড।’ হ্যাঁ 'সোনা'-ই বটে। সোনার বাংলার ঐতিহাসিক সব ঘটনার প্রেক্ষাপটে 'এগারো', ‘৮/১২ বিনয় বাদল দীনেশ’, 'হীরালাল', 'বাঘাযতীন'-সহ একধিক ছবি প্রাণ পেয়েছে তাঁর পরিচালনার জাদুতে। তাঁর মতো করে বাংলার সোনার সময়ের কথা খুব কম সংখ্যক পরিচালকই ফুটিয়ে তুলেছেন রূপোলি পর্দায়।
আরও পড়ুন: ‘না ছেড়ে গেলেও পারতে’! অরুণের জন্য হৃদয়বিদারক পোস্ট রুক্মিণীর, ‘সবসময় ভালোবাসব’
আর আজ তাই তাঁর বিদায় বেলায় পরিচালককে শেষ শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে ভেঙে পড়েছে টলিপাড়া। দেব, রুক্মিণী থেকে কিঞ্জল, অর্ণ বহু পরিচিত মুখের দেখা মিলেছে সেখানে। টলিউড অনলাইনের প্রকাশ করা একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে পরিচালকের মরদেহ ঘিরে টলি-অভিনেতাদের ভিড়। সেখানে পর্দার বাঘাযতীন দেব তো ছিলেনই, তাছাড়াও ছিলেন অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র। তাঁকে অঝোরে কাঁদতে দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: 'আমার ব্যক্তিগত স্তরের ক্ষতি', অরুণ রায়ের অকাল প্রয়ানে শোকস্তদ্ধ 'বাদল' অর্ণ মুখোপাধ্যায়
নায়িকা পরিচালকের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেল থেকে পরিচালকের সঙ্গে একটি ছবি ভাগ করে লিখেছিলেন, ‘আমি সবসময় তোমাকে ভালোবাসব হিরো… তুমি একজন হিরোর মতোই লড়াই করেছ। তোমার নায়িকা তোমায় প্রতিজ্ঞা করছে, তোমাকে দেওয়া সব কথা রাখবো অরুণ দা। সত্যি বলি.. না ছেড়ে গেলেও পারতে.. তবু মেনে নিতেই হবে.. আমি তোমাকে ভালোবাসি…।' তিনি ছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন সৃজা দত্ত, কিঞ্জল নন্দা, অনুষ্কা চক্রবর্তী, অর্ণ মুখোপাধ্যায় পরিচালক ধ্রুব ।
পরিচালকের এই অকাল প্রয়ানে হিন্দুস্থান টাইমস বাংলাকে অর্ণ মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘এই ক্ষতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবে বিগত কয়েকদিন ধরে একটা মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই ছিলাম। জীবনে একমাত্র অনিবার্য কিছু যদি থাকে, সেটা তো মৃত্যু। ফলে সেটা মেনে নিতে হবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের তা মানতে শিখিয়েছেন। তাছাড়া আমারা যাঁরা শিল্পচর্চা করি তাঁদের নির্লিপ্ত থাকাও অভ্যাস করতে হয়। ফলে সেটা আমরা নিজের নিজের মতো করে সহ্য করে নেব। আগামীতেও কাজ করব। বৃহত্তর ক্ষেত্রে বা ছবির ক্ষেত্রে কতটা ক্ষতি হল বা শিল্পের আঙ্গিনায় কতটা ক্ষতি হল তা তো সময় বলবে, ইতিহাস বলবে, বিশেষজ্ঞরা বলবেন। কিন্তু আমার যে ক্ষতি হল তা আমি জানি।’
প্রসঙ্গত, গত এক বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে অরুণ হাসিমুখে লড়েছেন। ‘বাঘাযতীন’ মুক্তি পেয়েছিল ২০২৩-এর দুর্গাপুজোয়। তাঁর ঠিক আগেই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর জানতে পারেন তিনি।