সন্দেশখালি স্টিং অপারেশনের পর্ব–১ এবং পর্ব–২ বলে দুটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরই বিজেপি নেতাদের অস্বস্তি চরমে পৌঁছেছে। একদিকে লোকসভা নির্বাচনের মরশুম অপরদিকে সন্দেশখালির গ্রামের মহিলারা বেরিয়ে এসে ফাঁস করে দিয়েছেন বিজেপির সাজানো ঘটনা। তাতে ভোটে ব্যাপক ধস নামবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ তিনজন মহিলা ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে বলেছেন, তাঁদের সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে। চতুর্থ দফা ভোটের দিন আবার সন্দেশখালি উত্তপ্ত হতে দেখা যায়। রাস্তায় বসে পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মহিলারা। পুলিশ তাঁদের তখন সরিয়ে নিয়ে যায়। লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে পুলিশ ও র্যাফের বিরুদ্ধে। এই আবহে রাতে পুলিশের অভিযান আটকাতে ‘রাত্রি জাগো’ গ্রাম পাহারা কর্মসূচি নিয়েছেন বিজেপির মহিলারা। লাঠি–ঝাঁটা হাতে রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিলেন মহিলারা।
এই মহিলাদের সন্দেশখালির আন্দোলনকারী বলে অভিহিত করেছেন বিজেপির আইটি সেলের ইনচার্জ তথা নেতা অমিত মালব্য। আজ, মঙ্গলবার তিনি একটি লম্বা–চওড়া পোস্ট করেছেন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে। সেখানে দেওয়া একটি ভিডিয়ো’তে দেখা যাচ্ছে রাতে নিজেদের বাড়ির সামনে পাহারা দিচ্ছেন মহিলারা। ইতিমধ্যেই চতুর্থ দফার ভোটে দেখা গেল, পথ আটকে টায়ার জ্বালিয়ে কিছু মহিলাকে বিক্ষোভ করছেন। আবার রেখা পাত্রের নেতৃত্বে একদল মহিলারা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীকে মাটিতে ফেলে মারার ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে। এমন আবহে আবার সন্দেশখালি ইস্যুতে নিজেদের দিকে হাওয়া টানার চেষ্টা করলেন অমিত মালব্য। বিজেপির সন্দেশখালি থানা ঘেরাও কর্মসূচি নিয়ে তুলকালাম কাণ্ডও দেখেছেন বাংলার মানুষ। একের পর এক ভাইরাল ভিডিয়ো (যার সত্যতা হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা যাচাই করেনি) সামনে এসেছে।
এই ভিডিয়ো ভুয়ো বলে দাবি করেছে বিজেপি। থানার সামনে মহিলাদের জমায়েত এবং পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি দেখা গিয়েছে। বিজেপির মহিলারা তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সুকুমার মাহাতোর সামনে পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ দিলীপ মল্লিককে ধাওয়া করলে ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়। তাঁর সামনেই এক তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল কংগ্রেস নেতার অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার গ্রামে অভিযান চালিয়ে মহিলা–পুরুষ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের যাতে পুলিশে ছেড়ে দেয় তাই রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চলে। আর তারপরই রাতে গ্রাম পাহারা কর্মসূচি নেন বিজেপির মহিলা কর্মীরা।
আরও পড়ুন: স্টিং, ধর্ষণের অভিযোগ প্রত্যাহার নিয়ে সুপ্রিম নজরদারিতে তদন্ত হোক,মামলা সন্দেশখালির মহিলার
এই ঘটনা নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে সরব হন অমিত মালব্য। রাজ্য সরকারের পুলিশ এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন অমিত মালব্য। তিনি লেখেন, ‘সন্দেশখালির মহিলাদের বেআইনি আটক করার ঘটনার পর মহিলারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাত পাহারা দেবেন। যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ এবং স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস দুষ্কৃতীরা আর মহিলাদের গ্রেফতার করতে না পারে মিথ্যা অভিযোগে। ভাবুন, প্রথমে শেখ শাহজাহান মহিলাদের উপর যৌন অত্যাচার করল। এখন মুখ্যমন্ত্রী একই অত্যাচার করছেন। সন্দেশখালির প্রতিবাদী নারীদের কথা শুনুন। স্থানীয় পুলিশ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বে সন্দেশখালির মা–বোনেদের উপর অত্যাচার নামিয়ে আনছে। মাঝ রাতে জোর করে বিজেপি কর্মীদের এবং পরিবারের মহিলাদের গ্রেফতার করছে। জামা কাপড় ছিঁড়ে দিচ্ছে। তাই প্রতিবাদ চলছে এবং বেড়ে চলেছে।’