দুবাইয়ের বুকে এশিয়া কাপ ২০২৫-এ গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তানকে কার্যত দুরমুশ করে ছাড়ল ভারতীয় ক্রিকেট টিম। জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে গত ২২ এপ্রিল অভিশপ্ত দিনে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিরা নৃশংস হত্যালীলা চালিয়ে ২৬ জনের প্রাণ কাড়ে। সেই পহেলগাঁও হানার পর এই প্রথমবার ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশ ২২ গজে মুখোমুখি হল। যা ঘিরে তীব্র ক্ষোভে ফুঁসেছেন বহু ভারতীয় ক্রিকেট ফ্যান। ডাক দেওয়া হয় এই ম্যাচ বয়কটের। এই পরিস্থিতিতে দুবাইতে এশিয়া কাপ ২০২৫-র টি২০ ম্যাচে এদিন পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারায় সূর্যকুমার যাদব (SKY)এর দল।
এদিনের ম্যাচে শুরুতেই টস জিতে ব্যাটিং নেয় পাকিস্তান। এরপর ইনিংসের শুরুতে পাকিস্তানকে প্রথম জোড়া ধাক্কা দিতে দেখা যায় হার্দিক, বুমরাহদের। ভারতের ঝুলিতে পর পর ২ উইকেট আসে ৬ রানের মধ্যে। এরপর ম্যাচ গড়াতেই ময়দানে নামেন ভারতের স্পিনাররা। কার্যত স্পিনের ভেল্কিতে কাবু হয় পাকিস্তানি ব্যাটিং অর্ডার। সাহিবজ়াদা ফারহান, ফাকর জমান পাক শিবিরের রাশ ধরতে না ধরতেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন। বাবর-হীন পাক স্কোয়াডের অধিনায়ক সলমন আলি আঘা, বরুণ চক্রবর্তী ও অক্ষর পটেলের বল কোন দিকে ঘুরবে, তা ঠাওর করতেই সময় নিয়ে নেন অনেকটা। শেষরক্ষা হল না। ১২ বলে ৩ রান করে আউট সলমন। ৪৯ রানে পাকিস্তান চতুর্থ উইকেট খোয়ায় পাকিস্তান। হাসান নওয়াজ়ের লোপ্পা ক্যাচ ফেললেও পরের বলেই হাসান তাঁর উইকেট, তিনি কুলদীপকে 'উপহার' দিয়ে যান, ক্যাচ ধরেন অক্ষর। এরপর কুলদীপ কার্যত তাঁর স্পিনের মায়াবী জাল বুনতে থাকেন, আর তাতেই ধরা দেন একের পর এক পাক ব্যাটসম্যান। ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ‘ব্রাহ্মোস’র মতো করেই পাক ক্রিকেট শিবিরে একের পর এক ধাক্কা দেন কুলদীপ, বরুণ চক্রবর্তী ও অক্ষর প্যাটেলরা। তবে পাকিস্তানের ইনিংসের শেষের দিকে শাহিন আফ্রিদির দুই ৬ ছক্কা বেশ কিছুটা মাইলেজ দেয় পাক শিবিরকে! পাক ইনিংস শেষ হয় ১২৭ রানে। সঙ্গে ৯ উইকেট।
১২৮ রান তাড়া করার লক্ষ্যে ভারতীয় ইনিংস শুরু করেন দুই ‘পঞ্জাব দা পুত্তর’ অভিষেক শর্মা ও শুভমন গিল। প্রথম থেকেই ৪,৬র মারকুটে ইনিংস দিয়ে শুরু করেছিলেন ভারতের এই ওপেনিং ব্যাটসম্যানরা। তবে সহ অধিনায়ক গিল, স্টাম্প আউট হয়ে যান একটু পরই। অন্যদিকে, বিধ্বংসী মেজাজে মাঠে বাউন্ডারির ঝড় তুলে দেন অভিষেক। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে যতটা বেশি সম্ভব চালিয়ে খেলার চেষ্টা করেন তিনি। তবে আয়ুবকে তুলে মারতে গিয়েই হল বিপত্তি। ১৩ বলে ৩১ রান করে শেষ হয় অভিষেকের দাপুটে ইনিংস। এদিকে, ভারতীয় গ্যালারি তখন ‘ভারত মাতা কি জয়’ ধ্বনিতে সরব! এরপর ইনিংসের হাল ধরেন তিলক বর্মা। তিনিও একই বিধ্বংসী মেজাজ ধরে রাখেন। ক্রিজের ওপারে যোগ্য সঙ্গত দেন অধিনায়ক সূর্য। ১২.১২ ওভারে ভারতের রান যখন ৯৭ তখন ৩১ বলে ৩১ রান করে প্যাভিলিয়ানে ফেরেন তিলক। উইকেট নেন আয়ুব। এরপর ১৩ ওভারে ১০০ করে ফেলেন স্কাইরা। এরপর ম্যাচের ২৫ বল বাকি থাকতেই ১৫.৫ ওভারে ম্যাচ জিতে নেয় ভারত।