প্রধানমন্ত্রীকে পড়াশোনা, জীবন এবং শৈশব নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন করল পড়ুয়ারা। এদিন প্রায় ৩৮ লক্ষ পড়ুয়া পরীক্ষা পে চর্চা-য় রেজিস্ট্রেশন করেছে। অনলাইনে লাইভে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে তারা। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে প্রায় ২০ লক্ষ প্রশ্ন জমা করেছে পড়ুয়ারা।
ফাইল ছবি: পিটিআই
শুক্রবার নয়াদিল্লির তালকাটোরা ইনডোর স্টেডিয়ামে 'পরীক্ষা পে চর্চা ২০২৩'-এ যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফি বছর বোর্ড পরীক্ষার মরসুম শুরুর আগে পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতা করতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে। এবারেও তার অন্যথা হল না।
এদিন প্রায় ৩৮ লক্ষ পড়ুয়া পরীক্ষা পে চর্চা-য় রেজিস্ট্রেশন করেছে। অনলাইনে লাইভে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে তারা। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে প্রায় ২০ লক্ষ প্রশ্ন জমা করেছে পড়ুয়ারা। তাতে পারিবারিক চাপ, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট, কীভাবে সুস্থ থাকা যায় এবং কেরিয়ার নির্বাচন থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেছে পড়ুয়ারা। সেগুলি থেকে বাছাই করে কিছু প্রশ্ন তুলে ধরা হল এদিন। আরও পড়ুন: এগারো জন শিশুর হাতে প্রধানমন্ত্রী বাল রাষ্ট্রীয় পুরস্কার তুলে দিলেন রাষ্ট্রপতি
আগের মতোই, এবারেও প্রধানমন্ত্রীকে পড়াশোনা, জীবন এবং শৈশব নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন করল পড়ুয়ারা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীকে এক পড়ুয়া জানতে চায়, 'আমার রেজাল্ট ভাল না হলে, পরিবারকে সেই বিষয়ে আমি কীভাবে জানাব?' এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, '(ভালো নম্বর) আশা করাটা পরিবারের পক্ষে খুবই স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু সেটি যেন কখনই দেখনদারির পর্যায়ে না চলে যায়।'
আরুষি নামের এক পড়ুয়া জানতে চায়, পরীক্ষার সময়ে আমি বুঝতেই পারি না পড়াশোনা কোথা থেকে শুরু করব! এটা নিয়ে আমার খুব চিন্তা হয়। একইভাবে রায়পুরের অদিতি বলে, আমার সব সময়ে চিন্তা হয় যে, আমাকে অনেক কিছু করতে হবে, কিন্তু আমি সেগুলি সময়ে শেষ করতে পারি না। আমি কীভাবে সমস্ত কাজ সময়মতো শেষ করব?
পিএম মোদী বলেন, 'শুধুমাত্র পরীক্ষার জন্যই নয়, দৈনন্দিন জীবনযাপনেও টাইম ম্যানেজমেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সবার আগে নিজের কাজকে অগ্রাধিকার দাও। মাকে দেখে তাঁর টাইম ম্যানেজমেন্টের দক্ষতা পর্যবেক্ষণ করতে পার। সেটা করলেই পরীক্ষার সময়ে টাইম ম্যানেজমেন্ট করার বিষয়ে অনেক ধারণা পাবে।'
ফাইল ছবি: পিটিআই
এরপর এক মজার প্রশ্ন করে দুই পড়ুয়া। তারা জানতে চায়, পরীক্ষার সময়ে মাথায় 'টুকলি' করার বুদ্ধি এলে সেটা কীভাবে এড়াবে! এই প্রশ্ন শুনে হেসে ফেলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'কোনও কোনও পড়ুয়া পরীক্ষায় টুকলির জন্য বেশ সৃজনশীলতার ব্যবহার করে বটে। তবে তারা যদি সেই সময় এবং সৃষ্টিশীলতাকে আরও ভালভাবে ব্যবহার করে তবে তারা আরও বেশি সাফল্য পাবে। কঠোর পরিশ্রমী পড়ুয়ারা কিন্তু অন্যদের প্রতারণার কারণে অত্যন্ত প্রভাবিত হয়। যে ছাত্ররা কঠোর পরিশ্রম করে, আমি তাদের এটুকুই বলব, তোমার নিজের ক্ষমতাই তোমাকে জীবনে সাহায্য করবে। তাই কখনই প্রতারণা করে এমন কারও পথ অনুসরণ করবে না।'
এরপর একজন জানতে চায়, 'কঠোর পরিশ্রম ভাল নাকি স্মার্ট ওয়ার্ক?' এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী জানান, কেউ কেউ শুধুমাত্র কঠোর পরিশ্রম করে। আবার কেউ কেউ স্মার্ট ওয়ার্ক করে। আবার অনেকে কিছুই করে না। আমি এটুকু আশ্বাস দিচ্ছি, যারা পরীক্ষার আগে কঠোর পরিশ্রম করবে, আর যা-ই হোক, সেই প্রচেষ্টা কখনই বৃথা যাবে না।
দুই পড়ুয়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চায়, তিনি কীভাবে সমালোচনা সামলান। এর জবাবে তিনি বলেন, 'আমার বিশ্বাস, সমালোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি সুষ্ঠু গণতন্ত্রের জন্য এটি একটি শুদ্ধিকরণ যজ্ঞস্বরূপ। আমার বিশ্বাস, সমালোচনা একটি সফল গণতন্ত্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।'
তবে প্রধানমন্ত্রী আরও ব্যাখা করে বসেন, সমালোচনার উৎসটি জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সমালোচনা এবং বাধা দেওয়ার মধ্যে খুব সূক্ষ একটি রেখা আছে। অভিভাবকদের অবশ্যই গঠনমূলক এবং ইতিবাচক উপায়ে সমালোচনা করতে হবে। তবে যারা সমালোচনা করতেই অভ্যস্ত, তারা কী বলছে তাই নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামায় না। আরও পড়ুন: এখনই ভোট হলে জিতবে মোদীর BJP? স্বপ্নপূরণ হবে মমতার? C Voter সমীক্ষায় মিলল ইঙ্গিত