গরম যত বাড়ছে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। যার জেরে বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ। লোডশেডিংয়ের জন্য দায়ী করেছেন বিদ্যুৎ দফতরকে। যদিও লোডশেডিংয়ের দায় নিতে রাজি নন বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। পালটা লোডশেডিংয়ের জন্য তিনি দায়ী করেছেন উপভোক্তাদেরই।
প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে লোডশেডিংয়ের দাপটে বিপন্ন বঙ্গজীবন। গরম যত বেড়েছে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। আর তার সঙ্গে এঁটে উঠতে না পেরে অবধারিতভাবে হয়েছে লোডশেডিং। প্রবল দাবদাহের মধ্যে রোজই নিয়ম করে বিভিন্ন জায়গায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের জেরে ভোগান্তি বেড়েছে সাধারণ মানুষের। যার ফলে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা। লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে গত কয়েক দিনে বিক্ষোভ হয়েছে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায়। এমনকী কলকাতা লাগোয়া এলাকাগুলিও বাদ যায়নি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে অনেকে ‘লোডশেডিং মন্ত্রী’ বলে ডাকতে শুরু করেছেন। কিন্তু এই পরিস্থিতির দায় নিতে রাজি নন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তাঁর দাবি, লোডশেডিংয়ের জন্য দায়ী সাধারণ মানুষ।
মন্ত্রীর দাবি, ‘অনুমোদন ছাড়াই অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন বহু মানুষ। বিদ্যুৎ দপ্তরে আবেদন না করেই অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে বাড়িতে একটি এসি চালানো হত, সংখ্যাটা বেড়ে গিয়েছে। পাখা থেকে লাইট কিংবা টিভি ফ্রিজ সবই বেড়েছে। কিন্তু তার জন্য যে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে তার কোন অনুমোদন নেওয়া নেই। এর চাপ পড়ছে ট্রান্সফরমার সহ বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশে। অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপ নিতে না পেরে ট্রান্সফরমার পুড়ে যাচ্ছে, যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একটা ট্রান্সফরমার পুড়ে গেলে তা মেরামত করার সময় দিতে হবে। কিন্তু সেই সময় না দিয়েই বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। বিদ্যুৎমন্ত্রীর আবেদন, যারা অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে চান, বিদ্যুৎ দফতরে আবেদন করুন। সেই মতো সেই এলাকার বিদ্যুত সরবরাহের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। অতিরিক্ত চাপ পড়বে না ট্রান্সফরমারে’।
বিদ্যুৎমন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, মানুষ বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে। সরকার তা উৎপাদন ও সরবরাহ করবে। মুখ্যমন্ত্রী তো বলেছেন রাজ্যে না কি বিদ্যুতের ব্যাঙ্ক রয়েছে। সেই ব্যাঙ্ক এখন গেল কোথায়? বিদ্যুৎ ব্যাঙ্ক আর লোডশেডিং একই রাজ্যে থাকে কী করে?
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ওদের দায় নেওয়ার ক্ষমতা নেই। সব দায় ওরা বিরোধীদের ওপর আর মানুষের ওপর চাপিয়ে ক্ষমতা দখল করে রাখতে চায়। এটা বেশিদিন চলবে না।