ভোট-পরবর্তী হিংসার রুখতে এবার জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। আদালতের দ্বারস্থ হলেন সমাজকর্মী তথা হাইকোর্টের আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত। প্রধান বিচারপতির রাজেশ বিন্দল ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার সকালে মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।মামলাকারী আইনজীবীর দাবি, ঘটনায় আক্রান্তদের উপযুক্ত নিরাপত্তা দিতে আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়জনীতা রয়েছে। কারণ, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়াও ঘটনায় দোষীরা যাতে উপযুক্ত শাস্তি পায়, সেবিষয়ে কোনও পোক্ত নির্দেশ দিতে আদালতে আবেদন জানিয়েছেন আইনজীবী। একই সঙ্গে মামলায় রাজ্য ও কলকাতা পুলিশকে এই বিষয়ে সাহায্য করার জন্য আবেদনও জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, এবিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে উপযুক্ত ব্যাবস্থা নিতে যাতে নির্দেশ দেয় আদালত, সেই আবেদনও করা হয়েছে। তাছাড়া ভোট-পরবর্তী হিংসা রুখতে কলকাতা ও রাজ্য পুলিশকে ‘কন্ট্রোল রুম’ খুলতেও আবেদন করা হয়েছে। এই মামলায় আরও জানানো হয়েছে যে, যেহেতু ভুক্তভোগীদের অনেকেই আতঙ্কে থানা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারছেন না, সেজন্য তাঁদের অভিযোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে অনলাইন বা টেলিফোনের মাধ্যমে অভিযোগ নথিভুক্ত করার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যাতে উদ্যোগ নেয় পুলিশ, সেবিষয় নির্দেশ দিতে আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন আইনজীবী।প্রসঙ্গত, ভোটপর্ব মিটতেই রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে হিংসার খবর আসতে শুরু করে। বিজেপির অভিযোগ, অধিকাংশ জায়গায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বাড়ি বাড়ি ঢুকে বিজেপি কর্মী—সমর্থকদের মারধরের পাশাপাশি দেদার বাড়ি ভাঙচুরও চালিয়েছে তারা। এমনকী, বহু জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। আবার রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় একাধিক বিজেপি কর্মীকে খুন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলে গেরুয়া শিবির। পাল্টা তৃণমূল অভিযোগ করে, উল্টে তাঁদের কর্মীদের মারধর করে খুন করা হয়েছে। দু’পক্ষের এই অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ নিয়ে ভোট পরবর্তী হিংসা ছড়িয়ে পড়ে গোটা রাজ্যে। তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা বাংলা। এবার আক্রান্তরা যাতে সহজেই পুলিশি সাহায্য পেতে পারেন, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে।