মুর্শিদাবাদ থেকে এসটিএফ দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছিল। তাদের জেরা করে একের পর এক বিস্ফোর তথ্য সামনে আসছে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, মূলত রাজ্যের দুটি জেলা থেকে যুবকদের মগজধোলাই করে সংগঠনে টানার চেষ্টা চলছিল। এইভাবেই সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার তাল করছিল জঙ্গিরা। মূলত স্লিপার সেলকে আরও চাঙা করার চেষ্টা করা হচ্ছিল।
মুর্শিদাবাদে ঘাঁটি। আর আনসারুল্লা বাংলার ধৃত এক জঙ্গির প্রশিক্ষণ কি বাংলাদেশে হয়েছিল? সেই প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে। এমনকী প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে যে একটি বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে তারা প্রতিবেশী দেশের জঙ্গি এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত।
কোথায় নাশকতার ছক ছিল?
গোয়েন্দারা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন, মূলত চিকেনস নেককে অস্থির করার চেষ্টা চলছিল। আসলে শিলিগুড়ি করিডরকে বলা হয় চিকেনস নেক। এখান দিয়েই উত্তরপূর্বের সাত রাজ্যে যেতে হয়। সেই চিকেনস নেককে অস্থির করার মাধ্যমে উত্তর পূর্বের সেভেন সিস্টার্সের প্রভাব ফেলার চেষ্টা করছিল এই জঙ্গি গোষ্ঠী।
অসম পুলিশের এসটিএফের অপারেশন প্রঘাত। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এসটিএফ ও গোয়েন্দা দফতরও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করেছিল। তারপরই এই রাজ্য থেকে গ্রেফতার করা হয় দুজনকে। সব মিলিয়ে ধরা পড়েছিল ৮ জঙ্গি। তার মধ্যে দুজন এই বাংলার।
মুর্শিদাবাদ থেকে সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয়েছে মহম্মদ আব্বাস আলি ও মিনারুল শেখকে। এই দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করার পরে তাদের একাধিক ছক সামনে আসতে শুরু করেছে। আর সেসব ছক একেবারে বিস্ফোরক।
এদিকে ধৃত আব্বাসের কাজকর্মকে ঘিরে একাধিক সূত্র পাচ্ছেন গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর ধৃতদের মধ্য়ে একজন বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল কি না সেটা দেখা হচ্ছে। । বারুইপাড়া এলাকায় অনুমোদনহীন মাদ্রাসার আড়ালে চলত উসকানির পাঠ। এখানেই চলছিল মগজ ধোলাই। এমনকী আনসারুল্লা বাংলার চিফ জসিমুদ্দিন রহমানির লেখা বই পড়ানো হত তাদের।
তবে বাংলায় জঙ্গি ঘাঁটি এই প্রথম নয়। সেই চেনা কায়দাতেই এবারও মগজ ধোলাই করার কাজ করা হচ্ছিল। ঠিক যেমন শিমুলিয়া ও ধুলিয়ান মডেলের ক্ষেত্রে হত। এখানেও ঠিক তেমনই। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে লোন উলফ ধরনের নাশকতার ছক কষা হচ্ছিল। অর্থাৎ কোনও একজন ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে নাশকতার জন্য তৈরি করা।
তবে বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ নেওয়ার বিষয়টি ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদেরও। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জঙ্গি এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত তারা। অসম, কেরল ও বাংলায় অভিযান চালিয়েছিল এসটিএফ। এদিকে বাংলাদেশে অশান্তির মধ্য়েই ভারতের মাটি থেকে ৮ জঙ্গিকে গ্রেফতারের ঘটনাকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ ছড়াচ্ছে।
এদিকে অবস্থানগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূ্র্ণ শিলিগুড়ি। সেই শিলিগুড়িকে অস্থির করার চেষ্টা চালাচ্ছিল জঙ্গিরা।