ঘূর্ণিঝড় আমফানের ত্রাণে দুর্নীতি নিয়ে ফের সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মনে করালেন, এটা আলোচনা করা বা বিবৃতি দেওয়ার সময় নয়। সঙ্গে রাজ্যপালের পরামর্শ, যারা অন্যের ত্রাণ ছিনিয়ে নিয়েছেন তাদের শাস্তিবিধানের ব্যবস্থা করুন। ঘূর্ণিঝড় আমফানের ত্রাণে দুর্নীতি রুখতে ইতিমধ্যে পঞ্চায়েত স্তরে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। ত্রাণপ্রাপকদের তালিকা সংশোধন করবে ওই কমিটি। কিন্তু ইতিমধ্যে যাঁরা ত্রাণ পেয়ে গিয়েছেন, বা যাঁরা ত্রুটিপূর্ণ তালিকা তৈরি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হবে তার কোনও উল্লেখ নেই নির্দেশিকায়। ইতিমধ্যে এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা। এবার একই প্রশ্ন তুললেন রাজ্যপাল স্বয়ং। এদিন পর পর ২টি টুইটে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে যে দুর্নীতি রুখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। এখন আলোচনা বা বিবৃতি দেওয়ার সময় নয়। যাঁরা অন্যের প্রাপ্য ছিনিয়ে নিয়েছেন তাঁদের থেকে ত্রাণ উদ্ধার করে শাস্তি দিতে পদক্ষেপ করুন।’ এর পর রাজ্যপাল লেখেন, ‘এমন অন্যায় করতে সাহায্য করেছেন যে সব আধিকারিক, তাঁদেরও কাঠগড়ায় তুলতে হবে। ত্রাণ দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর কুঠারাঘাত হলে তবেই মানুষের ক্ষোভ কমবে। সঠিক ত্রাণ বিলি তখনই কার্যকর হবে।’ করোনা ও আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে গত বুধবার নবান্নে সর্বদল বৈঠক করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে মমতার সুর অনেকটাই নরম ছিল। এর পরই বৃহস্পতিবার ত্রাণে দুর্নীতি রুখতে কমিটি গঠনের ঘোষণা করে নবান্ন। যাতে প্রশ্ন উঠেছে, নিজের দলের জনপ্রতিনিধিদের ওপর কি আর ভরসা নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? তাই তাদের তৈরি তালিকা সংশোধনে তৈরি করতে হচ্ছে কমিটি? প্রশ্ন ওঠে, যে জনপ্রতিনিধিদের ওপর তাদের দলেরই নেত্রীর আস্থা নেই তাদের ওপর কী করে আস্থা রাখবে জনতা? সঙ্গে প্রশ্ন ওঠে, দুর্নীতির বিষয়টি তো ত্রাণ বিলি শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই প্রকাশ্যে এসেছিল। তাহলে এতদিন কেন কমিটি বানাননি মুখ্যমন্ত্রী? তবে কি সর্বদল বৈঠকে বিরোধীদের কাছ থেকে তথ্য পেয়েই ত্রাণ দুর্নীতির গুরুত্ব উপলব্ধি করেছেন মমতা? তাহলে তাঁর পার্টির সংগঠন, সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা কী করছিল? আর ঝড়ের ১ মাসেরও বেশি সময় পর অর্ধেক টাকা যখন অ্যাকাউন্টে পড়ে গিয়েছে তখন তালিকা সংশোধনে কমিটি গড়ে লাভ কী?