'লজ্জার ব্যতিক্রম' সৃষ্টি করে 'নজির' গড়ল বীরভূমের একটি স্কুল। একথা বলা হচ্ছে, কারণ - একদিকে যেখানে এবছর মাধ্যমিকে পাশের হার গতবছরের সাফল্যকে ছাপিয়ে গিয়েছে, সেখানে সংশ্লিষ্ট স্কুলটি মাধ্যমিকে ফেল করার নয়া রেকর্ড গড়ল! হিসাব বলছে, এই স্কুল থেকে এবছর যারা মাধ্যমিক দিয়েছিল, তাদের মধ্য়ে মাত্র ৫৫ শতাংশই পাস করতে পেরেছে। বাকি প্রায় ৪৫ শতাংশই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে!
এই ঘটনা কানে যাওয়ার পরও ব্যথিত ও হতাশা বোধ করছেন রাজ্য বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, তিনিও ওই স্কুলেরই প্রাক্তন পড়ুয়া!
বীরভূম জেলার রামপুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়। শহরের প্রাণকেন্দ্রে থাকা এই বিদ্যালয় বরাবরই আমজনতার পছন্দের। কারণ - অতীতে এই স্কুলের ছাত্ররা বারবার তাদের কৃতিত্ব সাফল্যের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাঁদের অনেকেই আজ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়র, গবেষক। এই স্কুল থেকে পড়াশোনা করেই আজ রাজ্য আইনসভায় পৌঁছে গিয়েছেন স্থানীয় রাজনীতিক তথা বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী, তিনিই বর্তমানে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার।
জানা গিয়েছে, এবছর এই স্কুল থেকে মাধ্যমিক দিয়েছিল মোট ১৮২ জন পড়ুয়া। তাদের মধ্যে পাস করেছে মাত্র ১০০ জন। বাকি ৮২ জনই পরীক্ষার গণ্ডী পেরোতে অকৃতকার্য হয়েছে। এমন ঘটনায় হতবাক হয়ে গিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুল কালাম।
তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর থেকে এর আগে পর্যন্ত এমন রেজাল্ট তিনি দেখেননি! স্কুলের ৪৫ শতাংশ পড়ুয়াই যে মাধ্যমিকে ফেল করেছে, এটা যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না তাঁর।
প্রধান শিক্ষক এখন এর কারণে অন্বেষণ করতে চাইছেন। তাঁর বক্তব্য, মাধ্যমিক পরীক্ষা উচ্চ মাধ্যমিকের অত কঠিন নয়। একটু মন দিয়ে বা নিয়মিত পড়াশোনা করলেই পাস করা যায়, এমনকী ভালো ফলও করা যায়। তাহলে এমনটা কেন হল? সেই উত্তর পেতেই গোটা বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখার কথা ভাবছেন প্রধান শিক্ষক। স্কুলের তরফে, বা শিক্ষকদের তরফে কোনও ভুল, ত্রুটি থেকে গিয়েছে কিনা, সেটা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি,পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সঙ্গেও কথা বলা হবে। এরইসঙ্গে, উত্তরপত্র স্ক্রুটিনি করানো যায় কিনা, সেটাও ভেবে দেখা হবে।
ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের মতে, এমন ফল হওয়া মোটেই উচিত নয়। পড়ুয়াদের আরও মনোযোগী হওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।