চলতি বছরের মার্চ মাসের শুরুতে বড়বাজার থানা এলাকায় এক ব্যবসায়ীর অফিসে ঢুকে দুঃসাহসিক লুঠপাট করা হয়। ভরদুপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে অফিসে ঢুকে চড়াও হয় তিনজন দুষ্কৃতী। তারপর অফিসের আলমারি এবং টেবিলের ড্রয়ার থেকে মোট সাড়ে ১৮ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেয় আততায়ীরা। ওই মার্চ মাসেরই শেষদিকে কটন স্ট্রিটে আবার লুঠপাটের ঘটনা ঘটে। রীতিমতো সিবিআই অফিসার পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মূল্যবাণ সোনার চেন নিয়ে চম্পট দেয় ২০ জনের দল। ৪০০ গ্রাম সোনার চেন ভয় দেখিয়ে নিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। এই দুটি ঘটনা শহরের বুকে ঘটার পরই বাড়তি উদ্যোগ নিল লালবাজার।
এদিকে শহরের ব্যস্ত ব্যবসা–বাণিজ্যের এলাকা পোস্তা বড়বাজার। এখানে আগেও এমন অপরাধের ঘটনা ঘটেছিল। এটাই লালবাজারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। এখানে প্রত্যেকদিন কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়। তাই এখানে অপরাধ ঘটিয়ে টাকা লুঠ করার কাজ করতে থাকে আততায়ীরা। আর তদন্তে নেমে পুলিশ কাজ শুরু করলেও ভিড়ের মধ্যে মিলিয়ে যাচ্ছে আততায়ীরা। ফলে তাদের ধরা যাচ্ছে না। তাই এলাকায় বাড়তি নজরদারি করার পদক্ষেপ নিয়েছে লালবাজার। পোস্তা এবং বড়বাজার থানা এলাকার মোট ৪০টি জায়গাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর এই স্পর্শকাতর জায়গায় মোট ৮৫টি সিসি ক্যামেরা বসানো বলে লালবাজার সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: বিনামূল্যে জটিল অস্ত্রোপচার শিশুর, সেবাশ্রয় কর্মসূচির পরও উদ্যোগী সাংসদ অভিষেক
অন্যদিকে শহরের অন্যান্য জায়গাতেও সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। নিউ মার্কেট, হাতিবাগান, খান্না, গড়িয়াহাট, লেক মার্কেট–সহ নানা জায়গায় বসানো হবে সিসি ক্যামেরা। যাতে অপরাধী অপরাধ করে পালাতে না পারে। বেশি সংখ্যায় ক্যামেরা বসানো নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেছেন যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) রূপেশ কুমার। মহাত্মা গান্ধী রোড, কটন স্ট্রিট, ক্যানিং স্ট্রিট, সোনাপট্টি এমন বহু জায়গাকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। লালবাজার সূত্রে খবর, ৮৫টি ক্যামেরার মধ্যে পোস্তা থানা এলাকার ১৬টি জায়গায় ৫৩টি লাগানো হবে। এই কাজে খরচ হবে ২০ লক্ষ টাকা। বড়বাজারের ১৬টি জায়গায় ৩২টি নতুন ক্যামেরা লাগানো হবে।
কলকাতা শহরে এখন নানা অপরাধের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে ব্যবসা–বাণিজ্যের জায়গাগুলিতে তা বেশি দেখা যাচ্ছে। এই বিষয়ে লালবাজারের এক পুলিশকর্তা জানান, একাধিক ঘটনার জেরে ওই এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। তাই অত্যাধুনিক ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ওই ক্যামেরাগুলিতে রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। টানা ২১ দিনের ফুটেজ সংরক্ষণ করা যাবে ক্যামেরার স্টোরেজে। আগেও এই এলাকায় বড় অঙ্কের টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে। যার তদন্ত করে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। তাই থানার সঙ্গে এইসব নতুন ক্যামেরার ফুটেজ দেখার জন্য গোয়েন্দা বিভাগকেও ‘লাইভ ফিড’ দেওয়া হবে।